গুলিবিদ্ধ ৪ বছরের শিশু জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে

মাত্র ৪ বছর বয়সী বালিকা এলিন আলসাতি। শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে হত্যাযজ্ঞের সময় ব্রেটনটন টেরেন্টের নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পায় নি এই শিশুটিও। তাকে তিনটি গুলি করা হয়েছে। তাকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। তবে এখনও তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয়। তাকে বর্ণনা করা হচ্ছে ‘বিউটিফুল, কাইন্ড-বার্টেড সুইটহার্ট’ হিসেবে। অনলাইন নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে অকল্যান্ডের একটি হাসপাতালে।
এখনও স্কুলের আঙ্গিনায় পা পড়েনি ফুলের মতো এই শিশুটির। আগামী মাসে তার ৫ বছর বয়স হওয়ার কথা। এর পরই তার স্কুলে পা রাখার কথা। কিন্তু তার শেষ পর্যন্ত ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের বিছানা। সেখানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকরা বলতে পারছেন না সে নতুন করে পৃথিবীর আলো দেখতে পারে কিনা। তার বিছানার পাশে মা আসমা দারাগমে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছেন আর প্রার্থনা করছেন। পিতা ওয়াসিম আলসাতির সঙ্গে মেয়ে আলসাতি নামাজ আদায় করতে গিয়েছিল।
সেখানে তার পাশেই হামলাকারী সন্ত্রাসীর গুলিতে লুটিয়ে পড়েন পিতা ওয়াসিম। তিনি জর্ডান থেকে গিয়ে নিউজিল্যান্ডে বসবাস করছিলেন। তাকেও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে হাসপাতালে।
এলিনের মা আসমা হাসপাতালের বিছানার পাশে বসে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে তিনি বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন নিজের ও মেয়ের জন্য। ওই ভিডিওতে আসমার কণ্ঠ অস্পষ্ট। তাকে খুব ক্লান্ত দেখায়। কোনো রকমে সবাইকে তাদের সমর্থন দেযার জন্য ধন্যবাদ জানান। এতে তিনি বলছেন, ‘সবার এই সমর্থনের জবাব দিতে সক্ষম নই আমি এখন। আমি এই ভিডিওটি শুধু পোস্ট করছি এ জন্য যে, আমি পুরোপুরি ভাল আছি।
আল্লাহ আমাদের সবার মঙ্গল করুন।
এই পরিবারের এক বন্ধু নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডকে বলেছেন, ওই পরিবারটির চারটি সন্তান। তার মধ্যে তিনটি মেয়ে ও একটি ছেলে। এর মধ্যে এলিন সবার ছোট। তবে ঘটনার সময় ওই মসজিদে পরিবারটির অন্য কোনো সন্তান ছিল কিনা তা জানা যায় নি। পারিবারিক ওই বন্ধু বলেছেন, এলিন সুন্দরী। মিষ্টি। কোমল হৃদয়ের। তার চোখে বিস্ময়ভরা। সে এক সুইটহার্ট।
পারিবারিক আরেক বন্ধু ক্যারোলাইন ফিলিপস ফেসবুকে এক পোস্টে শনিবার বলেছেন, ওয়াসিমের আরো সার্জারি করা হয়েছে। তার শরীরে শার্পনেল বিঁধে আছে। নিতম্বেও আটকে আছে এমন জিনিস। তার পেটে এরই মধ্যে অপারেশন করা হয়েছে। তিনি আসমা দারাগমেহর সঙ্গে কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য, এই পরিবারটি জর্ডানের রাজধানী আম্মান থেকে ২০১৪ সালে পাড়ি দেন নিউজিল্যান্ডে। সেখানে রিভাইভ হেয়ারড্রেসিংয়ে নরসুন্দর হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে তিনি রে অ্যাস্টউড বারবারিং ইভেন্ট পুরস্কার জেতেন। মাত্র তিন সপ্তাহ আগে তিনি নিজে সেলুন ব্যবসা শুরু করেছেন। এর নাম দিয়েছেন ওয়াস বারবারস।

No comments

Powered by Blogger.