মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুতদের সংখ্যা নির্ধারণ অত্যন্ত কঠিন- ইউএনএইচসিআর

মিয়ানমারজুড়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এমন যে, তার সংখ্যা নির্ধারণ অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ। মিয়ানমারে আরো বাড়ছে আভ্যন্তরীণ বাস্তচ্যুত মানুষের সংখ্যা। একই সঙ্গে সেখান থেকে দলে দলে মানুষের দেশত্যাগের ঘটনার বিষয়েও সতর্কতা দিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) অফিস। শুক্রবার ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেচিক এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন। এতে মিয়ানমারের ভিতরে বেসামরিক মানুষের আভ্যন্তরীণভাবে পালাতে এবং সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ইউএনএইচসিআর তার বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় এমন ঘটনা ঘটছে।
২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিক থেকে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নৃশংসতা শুরু হয়। তারপর থেকে কমপক্ষে ৭ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
এর মধ্যে বেশির ভাগই মুসলিম রোহিঙ্গা। মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় মানবাধিকারের ওপর যে প্রভাব পড়েছে তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন আন্দ্রেজ মাহেচিক। উদ্বেগ প্রকাশ করেন দেশের ভিতরে বাস্তুচ্যুত ও দেশ থেকে বিদেশমুখী শরণার্থীদের বিষয়ে। তিনি আরো বলেন, আন্তঃএজেন্সি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইউএনএইচসিআর মিয়ানমারের আক্রান্ত এলাকাগুলোতে মানবিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দুনিয়া থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়। ওই সময় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে। আন্দ্রেজ মাহেচিক বলেন, যে পরিমাণে মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে মানুষ তার সংখ্যা নির্ধারণ করা খুবই কঠিন। আমরা আমাদের রিপোর্টে জানতে পেরেছি যে, ২০০ মানুষ আশ্রয় খুঁজেছেন। তারা রাখাইনে কার্যকর কোনো সুবিধা পান নি। অন্য রাজ্যেও তা পান নি। বর্তমানে সেখানে সহিংসতার ফলে আভ্যন্তরীণভাবে যে পরিমাণ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদেরকে সংখ্যা আমরা নির্ধারণ করতে পারছি না।
এমন অবস্থায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। নির্যাতনের শিকার এসব বেসামরিক মানুষের সংখ্যা নির্ধারণ ও তাদের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানানো হয়েছে, যারা গত কয়েক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদারতার প্রশংসা করেছে ইউএনএইচসিআর।

No comments

Powered by Blogger.