কে দেখবে নূর আলমের পরিবার: বোনদের আহাজারি by আব্বাস হোসেন

সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী নূর আলম। পরিবারের সকলের স্বপ্ন পূরণ করতেন তিনি। কিন্তু আজ ভোরে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিলো তার প্রাণ। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারটির সামনেও এখন শুধুই অন্ধকার। অসহায় দুই বোন তাই বাবাকে জড়িয়ে ধরে আহাজারি করছে। তাদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে ওঠেছে। লক্ষীপুরের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭ জনের মধ্যে একজন সিএনজি চালক এই নূর আলম।  
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩ টা বাজে। হঠাৎ নূর আলম ঘুম থেকে উঠে বলে বাবা আমি গ্যাসের জন্য পাম্পে যাচ্ছি।
গ্যাস নিয়ে এসে সকালে নোয়াখালী চাটখিল যাবো। গ্যাস নিয়ে আসার পথে চন্দ্রগঞ্জ পৌঁছলে একটি শিশুসহ ৫ জন যাত্রী গাড়ির অপেক্ষা। তখন নূর আলম তাদেরকে নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল উদ্দেশ্য রওনা হলে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়কের পশ্চিম মান্দারী পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রাক তার সিএনজিকে চাপা দেয়। এতে নূর আলমসহ তার ৬ যাত্রী ঘটনাস্থলে মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার-সার্ভিসে কর্মীরা এসে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠাই।
সকাল ১১ টার দিকে লাশ কাটা ঘরে পাশে বসে নূর আলমের বৃদ্ধ বাবা নূর মোহাম্মদ আকাশের দিকে তাকিয়ে বাকরুদ্ধ অবস্থায় বসে ছিলেন। মাঝে-মাঝে কান্নাকাটিও করছিলেন। কিছুক্ষণ পর তার দুই মেয়ে পাকি বেগম ও লাকি আক্তার দুই পাশে বসে বৃদ্ধ বাবাকে জড়িয়ে কান্না ভেঙে পড়েন। মাঝে-মাঝে তাদের ভাঙা-ভাঙা কন্ঠে বেরিয়ে আসে নূর আলমকে নিয়ে নানা কথা। তারা বলছিলেন তাদের বাস্তবতা। কী হবে এখন তাদের সংসারের? কে তাদের বাবা-মাকে দেখবে? নূর আলমের প্রতিবন্ধী ৬ বছরের ছেলেরই কী হবে? ৭ মাস বয়সী মিরাজ বুঝি বাবা বলে ডাকতে পারবে না! এমন শত প্রশ্ন পাকি ও লাকির মুখে। সিএনজি (চালক) নূর আলম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৬ নং বাঙাখাঁ ইউনিয়নের নেয়ামতপুর গ্রামের মাঝের বাড়ির নূর মোহাম্মদের একমাত্র ছেলে।

No comments

Powered by Blogger.