তিনদিনের প্রচারণায় বাজিমাত মোকাব্বির খানের

নির্বাচনের মাত্র ছয়দিন আগে বৃটেন থেকে দেশে ফিরেন তিনি। প্রচারণায় সময় পেয়েছিলেন মাত্র তিনদিন। স্বল্প সময়ের প্রস্তুতি নিয়েই নির্বাচনে বাজিমাত করেন সিলেট-২ আসনের গণফোরাম প্রার্থী মোকাব্বির খান। তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিরোধী যে সাত প্রার্থী জয়ী হয়েছেন তাদের একজন মোকাব্বির। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়ে বৃটেন চলে যান মোকাব্বির খান।
এ আসনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির লুনা। কিন্তু আদালতে তার মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ায় এ আসনে লড়তে নির্বাচনের মাত্র ছয়দিন আগে দেশে ফিরেন মোকাবিবর খান।
তিনি প্রচারণা চালাতে পেরেছেন মাত্র তিনদিন। উদীয়মান সূর্য্য প্রতীক নিয়ে এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি, কেন্দ্রীয় যুগ্ম  মহাসচিব ইয়াহ্‌ইয়া চৌধুরী এহিয়া এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমানকে পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে নেন গণফোরামের কেন্দ্রীয় এই নেতা। নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী মোকাব্বির খান ভোট পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৪২০ ভোট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান পেয়েছেন ৩০ হাজার ৪শ’ ৪৯ ভোট। ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া ভোট পেয়েছেন ১৮ হাজার ৩২টি।
নিজের বিজয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে মোকাব্বির খান জানান, আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ এই নির্বাচনকে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছিলো। হাইকোর্ট কর্র্তৃক এই আসনের মহাজোট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের পর ৫/৬ দিন সময় থাকতে আমি নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় হই। যদিও এর আগে থেকেই আমি গণফোরামের প্রার্থিতা পেয়েছিলাম। তিনি বলেন, এত কম সময়ে এত বড় দুঃসাহস নিয়ে কেউ নির্বাচনের মাঠে নামার সাহস করতে পারবে না। কিন্তু আমি আমার এলাকার জনগণের উপর আস্থা রেখে অনেক দুঃসাহস দেখিয়ে নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় হয়েছিলাম। আমার এলাকার জনগণ আমার উপর আস্থা রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আমাকে বিজয়ী করেছেন। এজন্য আমি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠজন ও আস্থাভাজন নেতা মোকাব্বির খান বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণকে কথা দিয়েছিলাম যে, আমি কখনো দুর্নীতি করবো না, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবো না, সন্ত্রাসীকে প্রশ্রয়  দেবো না, ব্যক্তিগত সন্ত্রাসীবাহিনী গঠন করবো না। আমার কথার উপর আস্থা রেখেই জনগণ আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমি কখনো তাদের এই ভালোবাসার অমর্যাদা করবো না। মোকাব্বির খান বলেন, আমি আমার এলাকার জনসাধারণকে বলেছি আমার আহামরি টাকা-পয়সা নেই, আমি কারো অনুদান নেই না, কারো কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে নির্বাচন করিনি। এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াছ আলীর পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোকাব্বির খান বলেন, তাহসিনা রুশদির লুনা আমাকে আন্তরিকভাবে সমর্থন জানিয়ে উনার ছেলে ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াছকে আমার নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত করেছেন। ইলিয়াছ আলীর ছোটভাই সিলেট জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আছকির আলী খুবই আন্তরিকভাবে আমার প্রচারণা ও নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত হয়ে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আমি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

No comments

Powered by Blogger.