থাইল্যান্ডে গণতন্ত্রকামী হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

থাইল্যান্ডে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে যে, দেশের জাতীয় নির্বাচনের তারিখ আবারো পেছানো হতে পারে। প্রায় ৫ বছর ধরে স্থগিত থাকা ওই নির্বাচনের তারিখ এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো পেছাতে যাচ্ছে। তবে সামরিক সরকারের এমন পদক্ষেপ ভালোভাবে নিচ্ছে না দেশটির গণতন্ত্রকামী মানুষ। আগামী ২৪শে ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পূর্বে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার দফায় দফায় নির্ধারিত তারিখেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি ইঙ্গিত দেয়া হয় যে, নির্ধারিত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত নাও হতে পারে। অর্থাৎ পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনের তারিখ পেছাতে চাচ্ছে সরকার। এর প্রতিবাদে রোববার গণতন্ত্রকামী হাজারো মানুষ থাইল্যান্ডের রাজপথে বিক্ষোভ করে।
তারা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার দাবি জানান। সরকার নির্বাচন পিছিয়ে তাদের কথার বরখেলাপ করতে চাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে এক রক্তপাতহীন ক্যু-এর মাধ্যমে থাইল্যান্ডের ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী। তারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে দফায় দফায় জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর পিস অ্যান্ড অর্ডার, সংক্ষেপে এনসিপিও অব্যাহতভাবে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করতে থাকে। তাদের দাবি, নির্বাচনের জন্য দেশ প্রস্তুত না। কিন্তু এনসিপিও’র সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, তারা দেশের নতুন রাজার রাজ্যাভিষেকে অযাচিত হস্তক্ষেপ করতে পারে। এর প্রতিবাদে সপ্তাহজুড়ে রাজধানী ব্যাংককের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবস্থান নিয়েছে প্রায় ২০০ বিক্ষোভকারী। ঐতিহাসিকভাবে তাদের অবস্থান নেয়া সড়কটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, ২০১০ সালে ঠিক এই সড়কেই সেনাবাহিনী কয়েক ডজন গণতন্ত্রকামী মানুষকে হত্যা করে। এবার বিক্ষোভকারীরা আগামী মাসেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি সংবলিত ব্যানার নিয়ে র‌্যাচপ্রাসং নামক এ সড়কে অবস্থান নিয়েছে। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনের দাবিতে বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ চলছে।
এ বিক্ষোভের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সেনা প্রধান জেনারেল আপিরাত কংসোম্পং। তিনি বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা ঝামেলা করতে চাইছে। জেনারেল আপিরাত রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা এনসিপিও’র সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্বে রয়েছেন। এনসিপিও সরকার আগামী মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সন্দিহান থাকলেও দেশটির নির্বাচন কমিশন এখনো তাদের অবস্থা পরিষ্কার করেনি। গত বছরে কমিশন নির্ধারিত তারিখেই নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার করেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, কমিশন তাদের পূর্বের কথার ওপরই অবিচল আছে। কেননা, গত ডিসেম্বরে রাজনৈতিক কর্মসূচি ও ৫-এর অধিক ব্যক্তির এক জায়গায় জড়ো হওয়ার ওপর  থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। এগুলো থেকে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

No comments

Powered by Blogger.