এতোগুলি মানুষের স্বাধীনতাকে ভালোবাসাই আশার জায়গা

১০৭ দিন কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম। গতকাল রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। তার আইনজীবী জায়েদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে মানবজমিনকে জানান, শহিদুল আলম কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এ সময় কারাগারের সামনে শহিদুল আলমের স্ত্রী রেহনুমা আহমেদসহ অন্য স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জামিনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছালেও ঠিকানা জটিলতায় কিছুটা বিলম্বিত হয় তার কারামুক্তির প্রক্রিয়া।
গতকাল তার মুক্তির আশায় আইনজীবী, পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা দিনভর কারাগারের সামনে প্রতীক্ষায় ছিলেন। শহিদুল আলমের আইনজীবী জায়েদুল ইসলাম সন্ধ্যায় বলেন, ‘মামলায় দু’টি ফরওয়ার্ডিংয়ের কাগজে দুই ধরনের ঠিকানা লেখা ছিল শহিদুল আলমের। কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানান যে, কাগজপত্রে দুই ধরনের ঠিকানা থাকায় তাকে মুক্তি দেয়া যাচ্ছে না এবং এটি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে সংশোধন করে আনতে বলা হয় আমাদের।’ তিনি বলেন, ‘মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে এটি সংশোধন করে সন্ধ্যা ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে তা পাঠানো হয়।’ 
মুক্তির পর বিবিসি বাংলাকে শহিদুল আলম বলেন, মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিচ্ছি।
তবে আমি ভেতরে থাকার সময় দেশে-বিদেশে প্রত্যেকে এবং আমার আইনজীবীরা মিলে যে অসাধারণ আন্দোলন করেছেনÑ সেটা প্রকাশ করা কঠিন। এতোগুলি মানুষ শুধু আমাকে ভালোবাসে না, স্বাধীনতাকে ভালোবাসেÑ এটাই আশার জায়গা। আমি সত্য কথা বলায় বিশ্বাস করি এবং সেটা আমাদের প্রত্যেকেরই বলা দায়িত্ব।
এর আগে গত ১৫ই নভেম্বর বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ শহিদুল আলমের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় উস্কানিমূলক গুজব ছড়ানোর অভিযোগে দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গত ৫ই আগস্ট ধানম-ির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় ৬ই আগস্ট তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানান নোয়াম চমস্কিসহ পৃথিবীর একাধিক নোবেল বিজয়ী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা বারবার তার মুক্তি দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.