আমি আপনাদের সন্তান, সুযোগ দিন

এ নির্বাচন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার। দেশে এখন বাক স্বাধীনতা নেই। ভোটবিহীন সরকার। ভোটবিহীন মন্ত্রী ও এমপিকে  জনগণ আর দেখতে চায় না। আসন্ন নির্বাচন দেশ, মানুষ ও দেশের সম্পদ বাঁচানোর নির্বাচন। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে ঈমানী দায়িত্ব নিয়ে এই ভোট যুদ্ধের আন্দোলনে নেমেছি। এই ঈমানী দায়িত্ব পালনের আন্দোলনে আপনারাই আমার শক্তি। আপনারাই আমার সাহস ও অনুপ্রেরণা।
আমি আপনাদেরই সন্তান। আপনাদেরই ভাই ভাতিজা ও স্বজন। আমি গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য, চলমান এই দুঃশাসন থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য দেশ বরেণ্য রাজনীতিবিদদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। আপনাদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই সফল হব ইনশাআল্লাহ। আমাকে আপনারা সুযোগ দিন। ভোটের মাধ্যমে সহযোগিতা করুন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে এই নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে, দেশের মানুষ ও উন্নয়নের স্বার্থে এই নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এখানে আবেগ তাড়িত হয়ে নিজের মহামূল্যবান ভোট হেলায় ফেললে হবে না। মনে রাখতে হবে একটি ভোটই একটি আন্দোলনের হাতিয়ার। আর এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আপনার তীব্র প্রতিবাদ। তাই আসন্ন নির্বাচনে প্রার্র্থীদের চাইতে ভোটারদেরও দায়িত্বশীল ও সুনাগরিকের ভূমিকা পালন করতে হবে। গতকাল ঢাকা থেকে ট্রেনে কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছালে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন সাবেক ডাকসুর ভিপি, এমপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। কোনো আয়োজন ছাড়াই দল মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ তাকে স্বাগত জানাতে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় জমান। এ সময় বাসা বাড়ির ছাদ ও দোকানের সামনে থেকে ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ তাকে হাত নেড়ে স্বাগত  জানান। তাকে স্বাগত জানাতে আসা আগত ভক্ত, সমর্থক, অনুসারী, বিএনপি ও জোট নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, এই সরকার দেশের বারোটা বাজিয়েছে। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। পিলখানায় ৫৭ জন আর্মি অফিসার নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন এই সরকারের সময়ে। শাপলা চত্বরের নির্মমতা এখনো কেউ ভুলেনি। শেয়ারবাজার, ডেসটিনি, হলমার্কসহ সব উন্নয়নের উৎস ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই ভোটের মাধ্যমে আপনাদের মহামূল্যবান রায়ের মাধ্যমে এই সরকারকে লাল কার্ড দেখিয়ে না বলতে হবে। বিদায় জানাতে হবে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি পেতে হলে সব ভেদাভেদ আর দলাদলি ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতীক ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে। তিনি স্থানীয় উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমি এমপি থাকাকালে যে উন্নয়ন হয়েছিল আজ প্রায় দুই যুগ পরও সে উন্নয়ন আর কুলাউড়াবাসী দেখেনি। তাই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের জন্য আজ থেকে আপনারা একেক জন সুলতান মনসুর হয়ে গ্রামে-গঞ্জে, পাড়ায় মহল্লায় ছড়িয়ে পড়তে হবে।
মানুষকে ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য বুঝাতে হবে, অনুপ্রাণিত করতে হবে। এখন দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্ন যাচ্ছে। এই দুঃসময় থেকে মুক্তি পেতে দেশ বাঁচাতে, দেশের মানুষ ও সম্পদ বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সুলতান বলেন, ছাত্রজীবন থেকে আমি রাজনীতি করছি। উদ্দেশ্য দেশ জাতি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করা। আমি সে লক্ষ্যেই এগিয়ে চলছিলাম। কিন্তু নানাভাবে মিথ্যা অভিযোগে আমাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। নানা ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু আমি রাজনীতির শিক্ষা নিয়েছি। আমি রাজনীতি থেকে মানব কল্যাণের দীক্ষা নিয়েছি। তাই আমি দমবার পাত্র নই। আমাকে দমিয়ে রাখা যাবেও না। আমি আপনাদের সন্তান আপনাদের ভালোবাসাই আমার চলার পথের পাথেয়। আমি মন্ত্রী বা এমপি হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না।
মানুষের সেবাই আমার রাজনীতির লক্ষ্য। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মী অনুসারী ও সমর্থকরা ‘আমাদের সুলতান-আমাদের সন্তান, সুলতান তোমার ভয় নাই-আমরা আছি লক্ষ ভাই’ এ রকম নানা স্লোগান দেন। সুলতান মনসুরের কুলাউড়ায় আগমনকে কেন্দ্র করে তার ভক্ত অনুসারী সর্মথক ও বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছিলেন উজ্জীবিত। গতকাল দুপুরে কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে আসলে দীর্ঘদিন থেকে বিভক্ত কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির দু’টি অংশই ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে ফুল ও ধানের শীষ দিয়ে স্বাগত জানায়।

No comments

Powered by Blogger.