জনসনের প্রেম নিয়ে যা বললেন পেট্রোনেলা উয়াট

বৃটিশ রাজনীতিতে এই সময়ে সম্ভবত সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। সম্প্রতি তিনি প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র মন্ত্রীপরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন। আর এখন বেরিয়ে এসেছে তার রগরগে যৌন জীবনের কাহিনী। একে একে তার শিকারে যারা পরিণত হয়েছিলেন তারা মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন। এমন একজন তার সাবেক এক রক্ষিতা পেট্রোনেলা উয়াট (৫০)। এক সময় তার কাছে বরিস জনসন বলেছিলেন, একজন পুরুষ একজন নারীকে নিয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দেবেন এটা অযৌক্তিক। পেট্রোনেলা উয়াট এসব বিষয়ে মুখ খুলেছেন। তার সঙ্গে বরিস জনসনের যৌন সম্পর্কে একবার তার মিস ক্যারিজ হয়। ফলে তাকে গর্ভপাত করাতে হয়।
বরিস জনসন যখন দ্য স্পেকটেটর ম্যাগাজিনের সম্পাদক তখন তার ডেপুটি হিসেবে কাজ করছিলেন পেট্রোনেলা উয়াট। তিনি বরিস জনসনের সৌন্দর্য্যে তার প্রেমে পড়ে যান। তারপর চার বছর টিকে ছিল তাদের প্রেম। তারই এক পর্যায়ে বরিস জনসন তাকে বলেছিলেন, আমার মতে এটা একেবারেই অযৌক্তি যে, পুরুষরা একজন নারীকে নিয়ে সারা জীবন কাটিয়ে দেবেন। এমন এক স্ত্রী নিয়ে জীবন কাটানো হলো পূর্বাঞ্চলীয় রীতি। পেট্রোনেলা উয়াটের সঙ্গে প্রেমের কারণে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাকরি হারাতে হয় বরিস জনসনকে। কারণ, এ নিয়ে তিনি মিথ্যাচার করেছিলেন।
২০০৪ সালের ঘটনা। তখন বৃটিশ কনজার্ভেটিভ দলের নেতা মাইকেল হাওয়ার্ড। এই প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বরিস জনসন তার কাছে পুরো সত্য বলেন নি। এ কারণে তাকে ছায়া আর্টস বিষয়ক মন্ত্রী ও দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। তখন মাইকেল হাওয়ার্ডের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, বিষয়টি ব্যক্তিগত নৈতিকতার।
বরিস জনসনের তখন ব্যারিস্টার স্ত্রী মারিনা হুইলার। তাকে তিনি ১৯৯৩ সালে বিয়ে করেছিলেন। তিনি বিষয়টি জানতে পেরে বরিস জনসনকে নর্থ লন্ডনের ইলিংটনের বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে অবশ্য তাকে আবার বাড়িতে ডেকে নেন।
পেট্রোনেলা উয়াটের প্রয়াত পিতা লর্ড উডরো উয়াট ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গাটে থ্যাচারের খুবই বিশ্বস্ত। ২০১৬ সালে পেট্রোনেলা উয়াট বলেন, সামান্য কয়েকজন বন্ধু নিয়ে প্রায় নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছেন বরিস জনসন- তাকে এমনটা বলেছেন জনসন। দ্য মেইলে এ নিয়ে লিখেছেন পেট্রোনেলা উয়াটঅ তিনি লিখেছেন, অনেক নিঃসঙ্গ মানুষের মতো তিনিও দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন। বরিস জনসনের মধ্যে একটি বাসনা ছিল। তিনি চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হতে। তিনি তার পরিবার ও কনজার্ভেটিভ ভোটারদের ভালবাসা নিয়ে খুশি হতে পারেন নি। তিনি চেয়েছিলেন সারাবিশ্ব তাকে ভালবাসুক।
তিনি বরিস জনসনের সঙ্গে তার ভালবাসাকে ‘অপেশাদার বন্ধুত্ব’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। নিজের পিতামাতার বিচ্ছেদের কারণে ভেঙে পড়েছিলেন বরিস জনসন। কারণ, জনসনের পিতা স্ট্যানলি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি কোনোদিন নিজের স্ত্রী, বরিস জনসনের মা চার্লটিকে ছেড়ে যাবেন না। সেই সম্পর্ক যখন ভেঙে গেল তখন ভেঙে পড়েছিলেন বরিস।

No comments

Powered by Blogger.