শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার যথার্থ: জয়

সাংবাদিক শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার যথার্থ (এপ্রোপ্রিয়েট) বলে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তার দাবি, গত মাসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রবিক্ষোভ চলাকালে গুজব ছড়িয়ে দিয়ে সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মিডিয়া আউটলেট রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিক্সে প্রকাশিত একটি লেখায় এমন মন্তব্য করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা বাসস। ওই লেখায় জয় লিখেছেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দ্রুততার সঙ্গে সহিংসতায় রূপ নেয়। এই সহিংসতায় রূপ নেয়ার জন্য যারা দায়ী তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশি ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলম। সহিংসতায় তিনি উস্কানি দিয়েছিলেন বলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা সত্ত্বেও তিনি সেলিব্রেটি হওয়ার কারণে তার পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে।
জয় বলেছেন, ঢাকায় কলেজ পড়ুয়া দু’জন শিক্ষার্থীকে একটি বাস চাপা দেয়ার পর তারা মারা যায়। এ ঘটনায় বেদনাহত শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে। তারা নিরাপদ সড়কের দাবি জানায়। তবে সরকার তাদের কথা শুনেছে এবং প্রশ্নাতীতভাবে তাদেরকে ‘হ্যাঁ’ বলেছে।
তিনি বলেছেন, সরকার ট্রাফিক আইন উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বেপরোয়াভাবে গাড়িচালকদের বিরুদ্ধে শাস্তি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে বিক্ষোভ সফল হয়েছে। কিন্তু দেশের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতারা এটাকে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের একটি সুযোগ হিসেবে দেখে। এতে ছাত্রদের আন্দোলনে অনুপ্রবেশ ঘটায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সদস্যরা। কখনো কখনো তাদেরকে শিক্ষার্থীদের পোশাক পরিয়ে নামায় এবং পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে তোলে। কিন্তু বিএনপির ওই উস্কানি বেশিদূর এগুতে পারে নি।
ওই লেখায় জয় লিখেছেন, শহিদুল আলম বিএনপির পাশাপাশি ভূমিকা রাখাকে বেছে নেন এবং যথার্থভাবেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছাত্রদের মৃত্যু সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তিনি সামাজিক ও প্রথাগত মিডিয়া আউটলেট দুটি মাধ্যমকেই ব্যবহার করেছেন। এতে বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রধান কার্যালয়ে হামলা হয়।
ওই লেখায় আরো বলা হয়েছে, শহিদুল আলমের মিথ্যা ও প্ররোচণামূলক তথ্যের কারণে অনেক মানুষ আহত হয়েছেন। আর ওই হামলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক সদস্য স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে যান। শহিদুল আলমের বিতর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই শুধু তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নি। একই সঙ্গে তার সর্বশেষ কথাবার্তা বাস্তবেই ক্ষতির কারণ হয়েছিল। মিস্টার আলমের বক্তব্যে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পরিণত হয় আইন না মানা এক সহিংসতায়।
জয় আরো লিখেছেন, তরুণ ছাত্রদের বিক্ষোভকে হাইজ্যাক করে এবং তাদের জীবনকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়ে, পাশাপাশি আরো অনেক বাংলাদেশির জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে দেয়ার নাম রাজনীতি নয়। এটা সন্ত্রাস।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জয় বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক ভিন্নমত অবাধে প্রকাশ করে আসছেন শহিদুল আলম। কখনো তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। আবার কখনো তিনি কঠোর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু প্রতিটি সময় সরকার তার অবাধ মত প্রকাশের অধিকারকে সুরক্ষিত রেখেছে। এটা এমন একটি অধিকার যা সব বাংলাদেশির আছে। জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে সরকার শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করেছে, প্রকৃতপক্ষে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া সরকারের জন্য জরুরি ছিল। এক্ষেত্রে শহিদুল আলম একজন ভিকটিম নন। তার কর্মকাণ্ডে প্রচুর মানুষের ক্ষতি হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.