গজারিয়ায় যেভাবে হত্যা করা হয় নর্থসাউথের ছাত্র পায়েলকে

তড়িঘড়ি করে বাসে উঠতে গিয়ে এর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আহত হওয়া নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েলকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বাঁচানো যেত বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম পিপিএম।
গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভা কক্ষে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার নর্থসাউথ  বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পায়েলের মৃত্যুর রহস্যের কথা তুলে ধরে বলেন, হানিফ পরিবহনের ঢাকা মেট্রো-ব-৯৬৮৭ নম্বরের সেই বাসটিকে জব্দ এবং হানিফ পরিবহনের মালিক পক্ষকে পায়েল হত্যা মামলায় জড়িত করা হবে।
তিনি জানান, গেটের দরজায় আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারানোর পর বাসের চালক, হেলপার ও সুপার ভাইজার মিলে নদীতে ফেলে হত্যা করেছে মেধাবী ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েল (২১)কে। ১৬৪ ধারায় আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বাসের সুপার ভাইজার জনি। গত ২১শে জুলাই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে গজারিয়ার পথে প্রসাব করতে নামে পায়েল। এরপর গত ২৩শে জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গজারিয়ার ফুলদি নদীতে ভেসে ওঠে পায়েলের লাশ। এ ঘটনায় বাসের চালকসহ তিনজনকে আটক করা হয় বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।
তিনি আরো জানান, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র পঞ্চম সেমিস্টারের মেধাবী ছাত্র ছিলেন পায়েল। চট্টগ্রামের বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে দুই বন্ধু শান্ত ও আদরকে সঙ্গে করে হানিফ বাসে চড়ে ঢাকার উদ্দেশে ২১শে জুলাই রাত সোয়া ১০টায় হানিফ পরিবহনের বাসে করে রওনা হন পায়েল। ২২শে জুলাই ভোর ৪টার দিকে গজারিয়ার ভাটের চর ব্রিজের কাছে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নামেন পায়েল। বন্ধুরা ঘুমিয়ে থাকলেও কিছুটা পথ পর, জেগে সুপারভাইজারের কাছে পায়েলের কথা জানতে চায় বন্ধুরা। পায়েল পরের গাড়িতে আসবে বলে জানান, গাড়ির চালক, হেলপার ও সুপার ভাইজার।
গত ২৩শে জুলাই সকালে গজারিয়ার ফুলদি নদীতে ভেসে ওঠে পায়েলের লাশ।
আর লাশ উদ্ধারের পর, নাক মুখ থেতলানো ও রক্তের চিহ্ন দেখে পায়েলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করেন পুলিশ। পরে ২৪শে জুলাই পুলিশের সহযোগিতায় গজারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন পায়েলের মামা গোলাম সারোওয়ার্দী বিপ্লব।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাসের চালক জামাল হোসেন, হেলপার ফয়সাল এবং সুপার ভাইজার জনিকে গ্রেপ্তার করলে তারা জানান, পায়েল দৌড়ে বাসে উঠতে চাইলে দরজায় বাড়ি খেয়ে নাক, মুখ ফেটে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে বাইরে পড়ে যায় এবং পায়েলকে তারা মৃত ভেবে নদীতে ফেলে দেয়ার কথা আদালতে স্বীকার করেন সুপার ভাইজার জনি।
এ সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আশফাকুজ্জামান, গজারিয়া থানার ওসি হারুন অর রশিদসহ পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা।

No comments

Powered by Blogger.