খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে: চুনারুঘাটে ধসে গেছে সড়ক

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে ঢাকা-সিলেট প্রাক্তন মহাসড়কের রামগঙ্গা ব্রিজের এপ্রোচ। নালুয়া চা বাগানে ও উসমানপুর গ্রামে ভেসে গেছে ৩টি সেতু। গতকাল বিকাল ৫টায় খোয়াই নদীর মাছুলিয়া পয়েন্টে এ পানির রিডিং নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড । পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে খোয়াই নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এছাড়া ভারত থেকে নেমে আসা পানির চাপে খোয়াই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতি মুহূর্তে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধিতে খোয়াই নদীর আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে আর বৃষ্টি না হলে পানি কমতে শুরু করবে।
চুনারুঘাটে ধসে গেছে তিন সেতু
এদিকে অবিরাম বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে ধেয়ে আসা পানিতে চুনারুঘাটে দেখা দিয়েছে বন্যা। পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে ঢাকা-সিলেট প্রাক্তন মহাসড়কের রামগঙ্গা ব্রিজের এপ্রোচ। নালুয়া চা বাগানে ও উসমানপুর গ্রামে ভেসে ৩টি সেতু। পানির তোড়ে ভেসে আসা বিষধর সাপের কামড়ে জারুলিয়া গ্রামে মারা গেছে মুক্তার নামের এক যুবক।  খোয়াই নদীর দুকূল উপচে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে অন্তত ত্রিশটি গ্রামে। গাজীপুর ইউনিয়নের জারুলিয়া, ক্বারিশাহ বস্তি, চেকানগর, উসমানপুর, আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের বনগাঁও, কোর্টবাড়ি গঙ্গানগর, আলীরাজাপুর, রাজারবাজার, রাণীরকোট সহ দেওরগাছ, মিরাশী ও সাটিয়াজুড়ি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। বানের পানিতে পাকা বোরো ধান, সবজিক্ষেত তলিয়ে গেছে বানের পানিতে।
মাধবপুরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
কয়েকদিনের বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। অনেক রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। মাধবপুর- ধর্মঘর রাস্তায় মনতলা বিজিবির ক্যাম্পের নিকট জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ওই এলাকার লোকজন উপজেলা সদরে আসতে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে ভারি বর্ষণে সবজি  ও উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে উপজেলার ধর্মঘর, চৌমহনী, বহরা, আদাঐর, শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, আন্দিউড়া  ইউনিয়নের অনেক ফসলি জমিতে পানি জমে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কৃষক বদু মিয়া জানান, কয়েকদিন যাবত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তরমুজ, বেগুন, কড়লা, বরবটি জমি নষ্ট হয়েছে।  অপরদিকে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে অনেকে পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিকুল হক জানান, মাধবপুরে ৫ হেক্টর আউশের বিজতলা ও ৩০ হেক্টর সবজি করা হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পানি দীর্ঘস্থায়ী না হলে  এবং আর বৃষ্টিপাত না হলে তেমন কোন ক্ষতি হবে না।

No comments

Powered by Blogger.