নয় বছর নীরব থাকার পর মারা গেছেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি

দীর্ঘ নয় বছর নীরব থাকার পর গতকাল বেলা সোয়া বারোটায় মারা গিয়েছেন ভারতের সাবেক মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। নয়াদিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে তার মৃত্যুর সময়ে স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি এবং পুত্র মিছিল তার পাশে ছিলেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বয়স ছিল ৭২ বছর। ১৯৪৫ সালে বর্তমানে বাংলাদেশে তার জন্ম। ২০০৮ সালে মহানবমীর রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ভারতের তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচার এবং সংসদবিষয়ক মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। তাকে দ্রুত পশ্চিমবঙ্গের কালিয়াগঞ্জ থেকে নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রিয়রঞ্জন সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। পরে তাকে এইমস থেকে স্থানান্তর করা হয়েছিল ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে। মাঝে অবশ্য উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জার্মানিতেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অসুস্থ হওয়ার থেকে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। প্রথম কিছু দিন কোমায় ছিলেন তিনি। পরে চিকিৎসকরা তাকে কোমা থেকে বার করে আনতে পেরেছিলেন। কিন্তু প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির চেতনা আর পুরোপুরি ফেরানো যায়নি। তার জ্ঞান ফিরেছিল ঠিকই। কিন্তু বাকশক্তি বা স্মৃতি আর ফেরেনি। কোনও বিষয়েই কোনও  প্রতিক্রিয়া বা অভিব্যক্তি প্রকাশের শক্তি তার ছিল না। প্রিয়রঞ্চনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বার্তা দিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এক বার্তায় বলেছেন, দীর্ঘ অসুস্থতার জেরে রাজনীতির ময়দানে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও প্রিয়রঞ্জন নিজের অনুগামীদের মধ্যে সমান জনপ্রিয় ছিলেন। প্রিয়রঞ্জনের মৃত্যুতে কংগ্রেসের তরফে গভীর শোক  প্রকাশ করে বলা হয়েছে, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং  প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির প্রয়াণে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তার বিভিন্ন অবদানের জন্য, বিশেষত ভারতীয় ফুটবলে তার অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ১৯৭২ সাল থেকে তিনি বাংলার খুবই জনপ্রিয় নেতা ছিলেন।  প্রায় ৯ বছর ধরে তিনি ছিলেন কোমায়। ২০০৮ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার রাজনৈতিক জীবন কার্যত থেমে গিয়েছিল। না হলে তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে আরও অনেক কিছু করতে পারতেন। তিনি বেঁচেছিলেন। কিন্তু, আজ আর নেই। এটা একটা বড় ক্ষতি। সোমবার রাতেই তার মরদেহ কলকাতায় আনা হযেছে। আজ দুপুরেই তার মরদেহ নিয়ে হেলিকপ্টার উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জে উড়ে যাওয়ার কথা। সেখানেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

No comments

Powered by Blogger.