বাধ্য হয়ে যৌন ব্যবসায় হিজড়ারা

বাংলাদেশে হিজড়া সম্প্রদায় ও তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে ঢাকায় দু’বছর অতিবাহিত করেন ডেনমার্কের ফটোগ্রাফার জ্যান মোয়েলার হ্যানসেন। তার দৃষ্টিতে হিজড়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে বৃটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, যৌন ব্যবসায় ঢুকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন হিজড়ারা। সমাজে একপ্রকার নির্বান্ধব জীবন কাটাচ্ছেন তারা। নিজেদের এক আপন সম্প্রদায় গড়ে তুলেছেন তারা। সরকারিভাবে তারা ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃত। ট্রান্সজেন্ডারদের প্রতি মানুষের অন্যরকম দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের পরিবার ও স্বজনদের থেকে বিতাড়িত হন হিজড়ারা। ড্যানিশ আলোকচিত্রী হ্যানসেন বলেন, ‘ঢাকায় কয়েক বছর থাকার পর, আমি উপলব্ধি করলাম, বাংলাদেশে আমার মোট ৫ বছর কাটানো সময়ে আমার দেখা অন্যতম খোলামেলা মনের, গর্বিত, আত্মসচেতন ও সম্মানিত মানুষ তারা। তাদের ভিন্ন সেক্সুয়ালিটি, বেশভূষা ও আচরণ এবং সমাজে তাদের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করা হয়- এসব কারণে তারা নিজেদের মধ্যে নিজস্ব পারিবারিক কাঠামো আর বন্ধন গড়ে তুলেছে। আমি দেখেছি, হিজড়া পরিবারগুলোতে এই বন্ধন ও সম্পর্ক অত্যন্ত
শক্তিশালী। এটা তাদের নিজস্বতা ধরে রাখতে এবং সমাজে টিকে থাকতে প্রয়োজনও বটে।’
এদের অনেকেই যৌনকর্মী। বেশিরভাগ হিজড়া জন্মগতভাবে পুরুষ, তবে তারা নিজেদের নারী বা পুরুষ কোনোভাবেই দেখেন না। 
মি. হ্যানসন বলেন, ‘প্রকৃত হিজড়া হওয়া মানে অনেক ক্ষেত্রে তাদের পুরুষাঙ্গ ও অণ্ডকোষ ফেলে দেয়ার মাধ্যমে খোজায় পরিণত করার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হিজড়ারা সমঅধিকারের জন্য লড়াই করে আসছেন। হ্যানসেন বলেন, ‘হিজড়ারা তাদের অধিকারের জন্য লড়ছেন। তারা অন্যদের মতো একই অধিকার পেতে চান। তারা অন্যদের জানাতে চান যে তারাও স্বাভাবিক মানুষ। তারা চান তাদেরকেও অন্যদের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করার সুযোগ দেয়া হোক। হিজড়ারের দাবি অন্যরা তাদের জীবন, লিঙ্গ আর সেক্সুয়ালিটি বোঝে না। তাদের চাওয়া, সমাজ ও সরকার তাদের অন্য মানুষের মতো সমঅধিকার দিয়ে স্বীকৃতি দিক।’

No comments

Powered by Blogger.