তুরস্কে আবারও আত্মঘাতী হামলা, নিহত ১৩ সেনা

তুরস্কের কায়সেরি শহরে সেনাদের বহনকারী
বাসটিতেবোমা হামলার কিছুক্ষণ পরের দৃশ্য। রয়টার্স
তুরস্কে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৩ জন সেনা নিহত হয়েছেন। আনাতোলিয়ার কায়সেরি শহরে গতকাল শনিবার সেনাসদস্যদের বহনকারী একটি বাসে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালানো হয়। এতে আরও ৫৫ জন আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তুরস্কের বৃহত্তম নগর ইস্তাম্বুলে জোড়া আত্মঘাতী হামলায় ৩৭ জন পুলিশসহ ৪৪ জন নিহত হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় এই হামলার ঘটনা ঘটল। ১০ ডিসেম্বরের সেই ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল কুর্দি বিদ্রোহীরা। তবে গতকালের হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ দায় স্বীকার করেনি। তবে আগের হামলার মতো এই ঘটনার জন্যও কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে (পিকেকে) দায়ী করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গতকালের বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৮ জন সেনাসদস্য। এ ছাড়া কয়েকজন বেসামরিক লোকও আহত হয়েছেন। ওই বাসের যাত্রীরা নবীন সেনা। তাঁরা কমান্ডো ব্রিগেডের সদস্য। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাঁরা সাপ্তাহিক ছুটিতে যাচ্ছিলেন। আর বাসটি ছিল কায়সেরি পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, বিস্ফোরণের পর সেনাদের বহনকারী বাসটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং তার ভেতরে আগুন জ্বলছে।
কায়সেরির গভর্নর সুলেমান কামচি বলেন, বোমা বহনকারী গাড়িটি বাসের পাশেই ছিল। হঠাৎ করে সেটি বিস্ফোরিত হয়। উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন। আহত ৫৫ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাঁদের ছয়জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। হামলার পর অনেক বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন। তাঁরা কায়সেরি শহরে কুর্দিপন্থী রাজনৈতিক দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (এইচডিপি) কার্যালয়ে হামলা করে ভাঙচুর চালান। তবে এ ঘটনার সঙ্গে কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এইচডিপি। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এই হামলার জন্য দায়ী। তিনি বলেন, সিরিয়া ও ইরাকে যা হচ্ছে, এ ধরনের হামলা সেটির প্রতিক্রিয়াও বটে। বিচ্ছিন্নতাবাদী বলতে এরদোয়ান মূলত পিকেকে সংগঠনকেই ইঙ্গিত করেন। এটিকে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনে করে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় বেশ অনিরাপদ হয়ে উঠেছে তুরস্ক। পিকেকে ও জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় প্রায়ই কেঁপে উঠছে বিভিন্ন শহর। এ বছর ইস্তাম্বুল শহরে কমপক্ষে পাঁচটি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযানে অংশ নেওয়ায় সংগঠনটির হামলার শিকার হতে হচ্ছে দেশটিকে।

No comments

Powered by Blogger.