কোন দলে মনোনয়ন পাচ্ছেন কে?

যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন নির্বাচনে কে হচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। দলীয় মনোনয়ন লাভের জন্য জোর তৎপরতায় ব্যস্ত প্রধান দু’দল ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান পার্টি। দু’দলেরই মনোনয়ন লাভের জন্য লড়াইয়ে ব্যস্ত প্রার্থীরা। এর মধ্যে ডেমোক্রেট দলে শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও ভারমন্ট রাজ্যের সিনেটর বার্নি স্যান্ডারস। অন্যদিকে সমানতালে পাল্লা দিয়ে চলেছেন রিপাবলিকান শীর্ষ বাছাই ডোনাল্ড ট্রাম্প ও টেড ক্রুজ। এছাড়া দু’দলেই রয়েছেন আরও কিছু প্রার্থী। সবে শুরু হয়েছে মনোনয়ন লাভের প্রাইমারি নির্বাচন বা ককাস নির্বাচন। মাত্র দুটি রাজ্যে তা সম্পন্ন হয়েছে। ১ ফেব্র“য়ারিতে আইওয়া রাজ্যের ককাস নির্বাচন হয়। সেখানে হিলারি ক্লিনটন বিজয়ী হয়ে অর্জন করেছেন ৩২টি ডেলিগেটস। অন্যদিকে ৯ ফেব্রুয়ারি নিউ হ্যাম্পশায়ারে অনুষ্ঠিত হয় প্রাইমারি নির্বাচন। এতে হিলারিকে পরাজিত করে ৩৬টি ডেলিগেটস অর্জন করেন বার্নি স্যান্ডারস। এখনও বাকি রাজ্যগুলোর ককাস বা প্রাইমারি হবে। তাতে বাকি রয়েছে ৪৩২৪টি ডেলিগেটস। মনোনয়ন লড়াইয়ে জিততে হলে এর মধ্যে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ২৩৮২ জন ডেলিগেটস পেতে হবে। এটা হল ডেমোক্রেট দলের চিত্র। অন্যদিকে আইওয়া রাজ্যের ককাসে রিপাবলিকান দলের শীর্ষ স্থানীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজিত হন টেড ক্রুজের কাছে। এতে তিনি পান ১১ জন ডেলিগেটস। তবে তা আবার নিউ হ্যাম্পশায়ারের প্রাইমারিতে পুষিয়ে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে তিনি বিজয়ী হয়ে ওই রাজ্যের ১৭ জন ডেলিগেটই তার পকেটে। রিপাবলিকান দলের এখনও বাকি ককাস ও প্রাইমারি মিলে ডেলিগেটস রয়েছে ২৪২৬ জন। একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন পেতে হলে কমপক্ষে ১২৩৭ জন ডেলিগেটস পেতে হবে। কেবল এ মাসেই এই ককাস বা প্রাইমারি নির্বাচন শুরু হয়েছে। এখনও এ নির্বাচনের অনেক বাকি। চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। ফলে এখনও বলা সম্ভব নয় দলীয় মনোনয়ন লাভের দৌড়ে কোন দল থেকে কোন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হবেন। যারাই প্রাইমারিতে নির্বাচিত হন তাদের নভেম্বরে চূড়ান্ত নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। এ পর্ব শেষে ককাস ও প্রাইমারি মিলে প্রার্থীকে নির্বাচিত হতে হবে ডেলিগেটসের ভিত্তিতে। ওদিকে সবার নজর এখন ডেমোক্রেট শিবিরে। কে এই দল থেকে মনোনয়ন পাবেন হিলারি ক্লিনটন নাকি বার্নি স্যান্ডারস। নাকি অন্য কেউ। এ দু’জনের মধ্যে যাচাই করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা হিসাব কষছেন ২০০১ সালে প্রথমবার নির্বাচিত সরকারি পদে আসীন হন হিলারি ক্লিনটন। ২০০৯ সালে সেই পদ থেকে সরে যান। তিনি ৮ বছর ওই দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে বার্নি স্যান্ডারস ১৯৮১ সালে প্রথমবার নির্বাচিত সরকারি পদে আসীন হন। তারপর থেকে এখন অবধি সেই দায়িত্বে আছেন। মোট তার কার্যকাল ৩৪ বছর। গড়ে একজন প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থীর যে সময় অভিজ্ঞতা থাকে তার চেয়ে তিনি ১৯ বছরের বেশি সরকারি পদে দায়িত্ব পালনকারী। অর্থাৎ হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে অনেক বেশি অভিজ্ঞতার ঝুলি তার সরকারি পদে। তবে জনমত জরিপ বেশি ভাগ ক্ষেত্রেই যাচ্ছে হিলারি ক্লিনটনের দিকে। অন্যদিকে রিপাবলিকান দলের শীর্ষ প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনো সরকারি দায়িত্ব পালন করেননি। তিনি বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী। অকস্মাৎ রাজনীতিতে তার প্রবেশ। এরই মধ্যে তিনি নানা বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন। মুসলিম বিদ্বেষী হিসেবে সারাবিশ্বে প্রচার পেয়েছেন। তার দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী টেড ক্রুজ ২০১৩ সালে সরকারি নির্বাচিত দায়িত্বে আসেন। দু’বছর তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। ডেমোক্রেট দলের প্রার্থীরা হলেন হিলারি ক্লিনটন, বার্নি স্যান্ডারস, মেরিল্যান্ডের সাবেক গভর্নর মার্টিন ও’ম্যালে, রোড আইল্যান্ডের সাবেক নিরপেক্ষ গভর্নর ও রিপাবলিকান সিনেটর লিঙ্কন চ্যাফি, ভার্জিনিয়ার সাবেক সিনেটর জিম ওয়েব, হার্ভাডের প্রফেসর লরেন্স লেসিগ। তবে এরই মধ্যে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন লিঙ্কন চ্যাফি, লরেন্স লেসিগ, ওম্যালে ও জিম ওয়েব।

No comments

Powered by Blogger.