মানছুরা ধর্ষণের পর সাদা কাগজে সই নেয় মাতবররা

বন্দরে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে লজ্জায়, ঘৃণায় আত্মহত্যা করে। নিহত স্কুলছাত্রী মানছুরার পিতা জাকির হোসেন জানিয়েছেন, ধর্ষণের পর স্থানীয় আলী আকবর মাতবরকে ঘটনাটি প্রথমে জানিয়েছেন তিনি। পরে আলী আকবর নিজেই আরও ৩ জন মাতবর নিয়ে তাকে চাপ সৃষ্টি করেন থানা পুলিশসহ কাউকে না জানাতে। বিচার সালিশির মাধ্যমে সমাধান করার আশ্বাস দেয়া হয় তাকে। মেয়েকে ওই ছেলের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়ারও পরামর্শ দেন তারা। তাদের পরামর্শে ঘটনার পরের দিন মঙ্গলবার তিনি তার মেয়েকে স্ত্রী ছালমা খাতুনকে দিয়ে ওই ছেলের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ওই দিন রাতেই মাতবর মনির হোসেন ও সামছু ধর্ষক হাবিবুর রহমানের বাড়ি থেকে মেয়েকে বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসেন। এ সময় তার কাছ থেকে মাতবররা একটি সাদা কাগজে সই নিয়ে শুক্রবার বিকালে সালিশ বৈঠকের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার পরের দিন বৃহস্পতিবার মানছুরা অসুস্থ শরীর নিয়ে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে স্কুলে যায়। স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে রাতে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে মারা যায় সে। নিহত মানছুরার মা ছালমা খাতুন জানান, সোমবার সন্ধ্যায় একই এলাকার মোতালেব বাক্কুর ছেলে হাবিবুর রহমান গার্মেন্ট শ্রমিক বাড়ির গেটের সামনে থেকে তুলে জঙ্গলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় প্রথমে মেয়ে আত্মসম্মান কী বুঝত না। পরে স্কুলে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বিভিন্ন লোকের কথা শুনে অপমান, অপবাদ বুঝতে পেরেছে। ওই অপবাদ সইতে না পেরে লজ্জায় বৃহস্পতিবার রাতে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। মাতবররা থানা পুলিশ থেকে বিরত রাখার কারণে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলে ধর্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ধর্ষণের আলামত না এলেও আত্মহত্যার প্ররোচনার অপরাধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.