মৃত্যুদণ্ড বহাল by উৎপল রায়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সর্বোচ্চ আদালত গতকাল তাদের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। এখন আইন অনুযায়ী, তাদের সামনে শুধু প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ রয়েছে। তারা প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা না চাইলে সরকার যে কোন মুহূর্তে এ রায় কার্যকর করতে পারবে। রায়ের পর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে। মুজাহিদের ছেলে আলী আহসান মাবরুর জানান, সাক্ষাতের জন্য কারা কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়েছে। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আজ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াত।
গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রিভিউ খারিজের রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এ রায়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, রায় কার্যকর সময়ের ব্যাপার মাত্র। এখন সরকার চাইলে যে কোন সময় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারে। তবে, শেষ সুযোগ হিসেবে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কিনা- সেটি তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হেসেন।
রিভিউ পিটিশন খারিজ করে বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ দুই নেতার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, আওয়ামী লীগ, গণজাগরণ মঞ্চ, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন এবং বিশিষ্টজনরা।
মঙ্গলবার জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রিভিউ পিটিশনের ওপর শুনানিতে অংশ নেন তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি। অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মৃত্যুদণ্ডের আদেশ পুনর্বহালের বিষয়ে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। শুনানি শেষে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় এ বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে বলে জানিয়ে দেন সংশ্লিষ্ট আপিল বেঞ্চ। ওই দিন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ পিটিশনের ওপর শুনানির কথা থাকলেও এ বিষয়ে পরে শুনানি হবে বলে আদেশ দেন বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে গঠিত ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ। গতকাল সকাল ৯টা ৫ মিনিট সোয়া এক ঘণ্টা পর্যন্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দাখিলকৃত রিভিউর পক্ষে ও বিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। একাত্তরে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন, সে বিষয়ে নানা যুক্তি-উপাত্ত তুরে ধরেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। পাকিস্তানের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটও দাখিল করেন খন্দকার মাহবুব। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আদালত ওই সার্টিফিকেট গ্রহণ করেননি। আদালত বলেছেন, পাকিস্তান মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিরোধিতা করছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে বাঁচাতে তারা যে কোন সার্টিফিকেটই দিতে পারে। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে অংশ নেন।
ঘরির কাঁটায় তখন ১১টা ৩০ মিনিট। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট এজলাসে তখন উৎসুক মানুষের ভিড়। মুক্তিযোদ্ধা, গণমাধ্যমকর্মী, আইনজীবী, আসামির স্বজনসহ নানান শ্রেণী-পেশার মানুষ তখন অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। আদালতের আশপাশেও শত শত মানুষ অপেক্ষায়। এ উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট এলাকাজুড়ে নেয়া হয় কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। ১১টা ৩৩ মিনিটে বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে ৪ বিচারপতি এজলাসে তাদের নিজ নিজ আসন গ্রহণ করেন। আদালতে তখন পিনপতন নীরবতা। একপর্যায়ে সংক্ষিপ্ত আদেশে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রিভিউ পিটিশন খারিজ (ডিসমিসড) মর্মে আদেশ দেন।
রায় কার্যকর সময়ের ব্যাপার: অ্যাটর্নি জেনারেল
রিভিউ পিটিশন খারিজ হওয়ার পর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আপিল বিভাগের এ আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আপিল বিভাগের এ আদেশের ফলে দণ্ড কার্যকর এখন সময়ের ব্যাপার। সরকার চাইলে যে কোন সময় এ দণ্ড কার্যকর করতে পারে। তিনি বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মুজাহিদের রায় কার্যকরে একমাত্র বাধা ছিল রিভিউ পিটিশন। যেহেতু তা খারিজ হয়ে গেছে তাই দণ্ড কার্যকরে আর কোন বাধা নেই। তবে, আসামিরা সে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন। সেটি একান্তই তাদের বিষয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন একাত্তরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত ছিলেন। এতদিন বিচার না হওয়ায় এ নিয়ে হতাশা ছিল। এ হত্যার বিচারের রায় যদি আমরা না পেতাম তাহলে এ হতাশা আরও বেড়ে যেত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু আপিল বিভাগের এ আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ রায়ে গণমানুষের যে আশা ছিল সেটা পূরণ হয়েছে। আমরা সন্তোষ্ট। প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, আপিল বিভাগের এ আদেশে আমরা সন্তোষ্ট। এতে আবারও প্রমাণ হলো আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন বলেন, আমরা অবশ্যই এ রায়ে খুশি। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আমরা এতদিন মামলা পরিচালনা করেছি। আপিলের এ চূড়ান্ত রায়ে ন্যায়বিচারের প্রতিফলন ঘটেছে।
প্রাণভিক্ষার বিষয়ে আসামিরাই সিদ্ধান্ত নেবেন -খন্দকার মাহবুব
সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে চেষ্টা করেছিলাম। একজন আইনজীবী হিসেবে আমার দায়িত্ব আসামিকে আদালতে নিরপরাধ হিসেবে প্রমাণ করা। আমি সেই লড়াই লড়েছি। আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, তা সঠিক মনে করেই দিয়েছেন। আসামি ন্যায়বিচার পেয়েছেন কিনা সেই বিচার আল্লাহর কাছে চাইতে পারেন। রিভিউ পিটিশন খারিজ হওয়ায় আসামিরা প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে বিষয়ে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। আর সরকার চাইলে সাজা মওকুফ বা কমাতে পারে।
আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর সাংবাদিকদের বলেন, রিভিউ পিটিশন খারিজ হওয়ায় আমরা হতাশ ও বিস্মিত হয়েছি। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। মাবরুর বলেন, তিনি (মুজাহিদ) হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছেন- সাক্ষীরা কেউ এমন কথা বলেননি। হত্যার কোন অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার পরও মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকায় আমরা হতাশ। বাবা ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলে জানান তিনি।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১লা অক্টোবর বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবিরের নেতৃত্বে গঠিত ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯শে অক্টোবর আপিল করেন তিনি। চলতি বছরের ১৬ই জুন শুরু হয়ে ৭ই জুলাই পর্যন্ত ১৩ কার্যদিবসে আপিল শুনানি শেষ হয়। ২৯শে জুলাই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির চূড়ান্ত রায় দেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। পরে ৩০শে সেপ্টেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়। এরপর নির্ধারিত ১৫ দিনের মধ্যেই রিভিউ আবেদন করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ই জুলাই জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। একই বছরের ১১ই আগস্ট ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মুজাহিদ। চলতি বছরের ২৯শে এপ্রিল থেকে ২৭শে মে ৯ কার্যদিবসে আপিল শুনানি শেষ হয়। গত ১৬ই জুন মুজাহিদের আপিল খারিজ করে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। ৩০শে সেপ্টেম্বর মুজাহিদের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে আপিল বিভাগ। এর পরই রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন মুজাহিদের আইনজীবীরা।
আশঙ্কা করছি কিছু হতে পারে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিশেষ কারণে সামাজিক যোগাযোগের কয়েকটি মাধ্যম সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো আছে, তবে আমরা আশঙ্কা করছি কিছু হতে পারে। সেজন্যই এ ব্যবস্থা গ্রহণ। আমি বলছি না যে আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়ে গেছে। গতকাল বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। মন্ত্রী আরও জানান, শুধু আমাদের দেশে নয়, ফ্রান্সসহ অন্যান্য জায়গায় অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে (আমাদের) দেশ একটু উৎকণ্ঠিত ছিল। বিচার কার্যকর করার সময় একটা অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। নানান ধরনের কথাবার্তা আসছে। সেজন্যই দেশকে স্থিতিশীল ও শান্ত রাখার জন্য নিরাপত্তার খাতিরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিষয়ে আদালতের রায়ের পর তাদের বিচার কার্যকর করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ থেকে যেভাবে নির্দেশ আসবে, সেভাবেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের বাইরে কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে না। তিনি বলেন, কোর্টের অর্ডার আইজি প্রিজনের কাছে যাবে। প্রাণভিক্ষার একটা ব্যাপার আছে, আইন অনুযায়ী যদি এ সুবিধা তারা পান তাহলে আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নেবো। এদিকে গতকাল সকালে দিনাজপুরে ইতালীয় নাগরিককে ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, তার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের) আমি ৩০ বছর এখানে কাজ করছি। আমার কোন শত্রু নেই। তার আত্মবিশ্বাস ছিল। কিন্তু অমানুষ না হলে এমন হামলা কেউ ঘটাতে পারে না। আমরা চেষ্টা করছি, দোষীদের খুঁজে বের করা হবে। জামায়াতের ডাকা আজকের হরতালের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জামায়াত একটি রাজনৈতিক দল। এখনও তাদের অস্তিত্ব আছে, হরতাল ডাকতেই পারে। তারা আগেও হরতাল করেছে, মানুষ তাতে সাড়া দেয়নি। বেগম জিয়ার অবরোধের কর্মসূচি এখনও অফিসিয়ালি উইথড্রো করেননি। আমাদের কাছে এখনও চালু আছে। কাজেই হরতাল-অবরোধ যাই আসুক, মানুষ এগুলোকে সমর্থন করে না। এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সন্তোষ, আনন্দ মিছিল
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, আমরা সব সময় আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা মনে করি দেশবাসী প্রত্যাশিত রায় পেয়েছে। আওয়ামী লীগও এ রায়ে সন্তুষ্ট। এ রায় বাধাগ্রস্ত করার জন্য কেউ কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা নাশকতা করতে চাইলে সে সব সন্ত্রাসী বা দলকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে দেশ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে গেল। রায়ে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ আপসের রাজনীতি করে না।
এদিকে আপিল বিভাগের এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে এবং অবিলম্বে তাদের ফাঁসি কার্যকরের দাবিতে গতকাল দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
ফাঁসির রায় (রিভিউ) পুনর্বিবেচনার দিন ধার্য্য থাকায় সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা অবস্থান গ্রহণ করেন। এ সময় নগর ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্র্মীরা অবস্থান নেয়। এছাড়া শ্রমিক, কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ আনন্দ মিছিল করেছে। সংগঠনের আহ্বায়ক ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে এই মিছিলটি শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

No comments

Powered by Blogger.