শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চিরঘুমে শায়িত কালাম

এ পি জে আবদুল কালামকে স্যালুট দিয়ে শ্রদ্ধা প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদির। ভারতের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও পরমাণুবিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালামকে আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর জন্মস্থান তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে দাফন করা হয়েছে। হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নিয়ে চিরনিদ্রায় গেছেন তিনি।
শেষ আনুষ্ঠানিকতার আগে রামেশ্বরমের একটি মাঠে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কালামের কফিনে স্যালুট দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরে তিনি কালামের কফিনের চারদিক প্রদক্ষিণ করেন।
শেষ আনুষ্ঠানিকতার অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দল কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘জনতার রাষ্ট্রপতি’-খ্যাত আবদুল কালামকে শেষ বিদায় জানাতে সারা দেশ থেকে হাজারো মানুষ রামেশ্বরমে আসে। কেউ আসে পায়ে হেঁটে, কেউবা বাস, ট্রেন, নৌযানে। গন্তব্যে আসতে গিয়ে অনেকে সড়কে রাত কাটান। আজ সকাল নাগাদ রামেশ্বরমের পথঘাট লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। তাঁরা শেষবারের মতো তাঁদের প্রিয় মানুষকে শ্রদ্ধা জানান। জানান হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা।
দাফনসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার সময় প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতির ৯৯ বছর বয়সী বড় ভাই মোহাম্মদ মুথু মারাইকরসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের পরমাণু কর্মসূচির পথিকৃৎ ৮৪ বছর বয়সী আবদুল কালাম গত সোমবার সন্ধ্যায় মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে বক্তৃতা করার সময় হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। আবদুল কালাম চিরকুমার ছিলেন।
গত মঙ্গলবার সকালে সামরিক বাহিনীর বিশেষ বিমানে শিলং থেকে নয়াদিল্লিতে নেওয়া হয় কালামের মরদেহ। বিমানবন্দরে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকার ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন প্রধান। প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে সেখানে তাঁকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
গতকাল বুধবার সকালে রাজধানী নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর থেকে কালামের মরদেহ নিয়ে বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ তামিলনাড়ু যায়। এর আগে বিমানবন্দরে তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে এই ‘ভারতরত্ন’ খেতাবজয়ীকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তামিলনাড়ুর মাদুরাই বিমানবন্দর থেকে তাঁর মরদেহ হেলিকপ্টারে করে রামেশ্বরমে নেওয়া হয়।
গতকাল বিকেলে রামেশ্বরম শহরের বাসস্ট্যান্ডের কাছে খোলা মাঠে সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহ রাখা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ ‘ভারতের মিসাইলম্যানের’ কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এই অনন্যসাধারণ মানুষটিকে একনজর দেখার জন্য বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রামের বাড়ি নেওয়ার পথের দুই ধারে হাজারো মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন।

No comments

Powered by Blogger.