আইএসের হাতে জিম্মি তুর্কি কূটনীতিকেরা মুক্ত

বয়সের ভারে ন্যুব্জ। তবু পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘ বিপৎসংকুল পথ।
শেষ পথটুকুতে পা যেন আর চলছিলই না। শেষমেশ এই বয়োবৃদ্ধ
নারীকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন তাঁরই মতো উদ্বাস্তু আরেক
সিরীয় কুর্দি। এভাবে সীমান্ত পেরিয়ে তুরস্কে পৌঁছেছেন তিনি।
সিরিয়ার কুর্দি-অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকা দখল করে নিয়েছে
ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিরা। তাদের হামলা থেকে
প্রাণে বাঁচতে হাজার হাজার কুর্দি তুরস্কে পালিয়ে
যাচ্ছেন। গতকাল তোলা ছবি। এএফপি
ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের হাতে অপহৃত তুরস্কের কূটনীতিকসহ ৪৯ জন গতকাল শনিবার মুক্তি পেয়েছেন। গোয়েন্দা সংস্থার প্রচেষ্টায় তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি আইএস ও ইরাক বিষয়ে আলোচনা করতে গত শুক্রবার জাতিসংঘে ইরানসহ ৩৫টি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন। খবর এএফপি ও বিবিসির। আইএস জঙ্গিরা ইরাকে গত জুন মাসে উত্তরাঞ্চলীয় শহর মসুল দখল করে নেয়। তারা সেখানে অবস্থিত তুর্কি কনস্যুলেট থেকে কূটনীতিক, শিশু এবং বিশেষ পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ ৪৯ জনকে অপহরণ করে। এর মধ্যে ৪৬ জনই তুরস্কের নাগরিক। 
বাকি তিনজন ইরাকি। মুক্তি পাওয়ার পর গতকাল স্থানীয় সময় সকালে তাঁরা দক্ষিণ তুরস্কে পৌঁছান। সেখান থেকে রাজধানী আঙ্কারায় পৌঁছালে বিপুলসংখ্যক মানুষ পতাকা নেড়ে তাঁদের স্বাগত জানায়। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভুতোগলু বলেছেন, তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থার প্রচেষ্টায় ওই জিম্মিদের মুক্ত করে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, উদ্ধার অভিযানটি সারা রাত ধরে চলে এবং তা সকালের দিকে সফলভাবে শেষ হয়। তুরস্কের সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির খবরে দাবি করা হয়েছে, জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য কোনো মুক্তিপণ দেওয়া হয়নি। দেশটির বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক হুরিয়াত সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, মূলত, আলোচনার মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্ত করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, তুরস্কের সীমান্তবর্তী সিরীয় শহর তেল আবিয়াদে শুক্রবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় ওই জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে তাঁদের আইএসের শক্ত ঘাঁটি রাকা শহর থেকে সেখানে নিয়ে আসা হয়। কেরির বৈঠক: এদিকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি শুক্রবার যে বৈঠকের আয়োজন করেন, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, সৌদি আরব ও কাতারসহ বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি ইরানের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। বৈঠকে কেরি বলেন, ইরাকের নতুন সরকারকে সমর্থন দিতে এবং আইএসের জঙ্গিদের বর্বরতার অবসান ঘটাতে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেরই এগিয়ে আসার দরকার রয়েছে। এর মধ্যে ইরানও অন্তর্ভুক্ত। যুক্তরাষ্ট্র আইএসবিরোধী জোটে তেহরানকে রাখবে না বলেই বলে আসছিল। গত সপ্তাহে কেরি বলেন, ‘সিরিয়ায় ও অন্যান্য জায়গায় তেহরানের সম্পৃক্ততা’ থাকায় ইরানকে আইএসবিরোধী জোটে আমন্ত্রণ জানানো ঠিক হবে না।

No comments

Powered by Blogger.