চীন মেরিটাইম সিল্ক রোড পুনরুদ্ধার করতে চায়

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং
মালদ্বীপ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়া সফর শুরু করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সফরের শুরুতে আবারও তিনি পরিষ্কার করে দিলেন, ‘মেরিটাইম সিল্ক রোড’ পুনরুদ্ধারের দিকে নজর দিচ্ছে বেইজিং। প্রাচীনকালে চীন থেকে সমুদ্রপথে দক্ষিণ এশিয়া হয়ে ইউরোপে যাওয়ার জনপ্রিয় বাণিজ্যপথ ছিল এই সিল্ক রোড। খবর এএফপির। ভারত মহাসাগরে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত মালদ্বীপে গতকাল সোমবার পা রাখেন চীনা প্রেসিডেন্ট। ১৯৬৫ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর জিনপিংই প্রথম চীনা প্রেসিডেন্ট, যিনি মালদ্বীপ গেলেন। আজ মঙ্গলবার তিনি যাবেন শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে তিনি কাল বুধবার যাবেন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রভাবশালী দেশ ভারতে। মালদ্বীপ মূলত পর্যটনের জন্য বিখ্যাত হলেও দ্বীপরাষ্ট্রটির বুক চিরে জাহাজ চলাচলের যেসব পথ রয়েছে, সেগুলো আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটিতে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে চীনা বিনিয়োগ। এর মাধ্যমে বেইজিং ওই এলাকা হয়ে একটি বাণিজ্যপথ নিশ্চিত করতে চায়। সফরকে সামনে রেখে মালদ্বীপের সংবাদভিত্তিক ওয়েবপোর্টাল সান অনলাইনে একটি নিবন্ধ লিখেছেন জিনপিং। রোববার রাতে প্রকাশিত ওই নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘প্রাচীন মেরিটাইম সিল্ক রোডের একটা গুরুত্বপূর্ণ যাত্রাবিরতি ছিল মালদ্বীপ। একবিংশ শতাব্দীর মেরিটাইম সিল্ক রোড গড়ে তুলতে মালদ্বীপ সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার যে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে, তাকে স্বাগত জানায় চীন।’
মেরিটাইম সিল্ক রোড যে বেইজিং পুনরুদ্ধার করতে চায়, সেটি গত বছর পরিষ্কার করেছিল চীন। চীনা প্রেসিডেন্ট গত বছর ইন্দোনেশিয়া সফরকালে বিষয়টি তুলেছিলেন। জিনপিংয়ের প্রস্তাবে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন ‘পূর্ণ সম্মতি দিয়েছেন’ বলে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়। তবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। মালদ্বীপের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে তেমন কিছু বলা হয়নি। তবে মালেতে দুই নেতার বৈঠকের পর ইয়ামিনের দপ্তর বলেছে, নয়টি বিষয়ে দুই নেতা একমত হয়েছেন। মালদ্বীপকে নিজের প্রভাব-বলয়ের দেশ মনে করে থাকে ভারত। এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে ভারত এমনিতেই উদ্বিগ্ন। এই অবস্থায় ভারত চটতে পারে, এমন কিছু করতে মালদ্বীপ সরকার আগ্রহী নয়। ইয়ামিন সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে নিরাপত্তার মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। পারমাণবিক জ্বালানির ক্ষেত্রে মোড়ল হতে চায় চীন: পারমাণবিক জ্বালানির ক্ষেত্রে চীন ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশ হতে চায়। তাই জিনপিংয়ের ভারত সফরকালে পারমাণবিক সহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। চীনের জাতীয় জ্বালানি প্রশাসনের পরিচালক উ জিনজিয়াংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এই খবর প্রকাশ করেছে হংকংভিত্তিক পত্রিকা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। খবর বলা হয়, চীন একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, যা আগামী এপ্রিলের মধ্যে চূড়ান্ত হবে। পরিকল্পনায় লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে, চীন ২০২০ সালের মধ্য পারমাণবিক জ্বালানির ক্ষেত্রে বিশ্বনেতা হতে চায়।

No comments

Powered by Blogger.