আইএসবিরোধী জোটে ৪০ দেশ, থাকছে না ইরান

ইরাক ও সিরিয়ার জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) রুখতে এককাট্টা হয়েছে আরব বিশ্বের ১০টিসহ বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশ। আইএসবিরোধী মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিয়েছে বা যোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশগুলো। ফ্রান্সের প্যারিসে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা এসেছে। তবে ইরান আইএসবিরোধী লড়াইয়ে যোগ দিচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির। প্যারিস সম্মেলনের যৌথ আয়োজক ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ও ইরাকি প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ মাসুম সুন্নিপন্থী জঙ্গি সংগঠন আইএসের রাশ টেনে ধরতে ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সম্মেলন উদ্বোধনকালে ওলাঁদ বলেন, ‘নষ্ট করার মতো কোনো সময় হাতে নেই। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইরাকের চলমান লড়াই আমাদেরও লড়াই।’ আইএসের বৈশ্বিক হুমকির বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বাগদাদকে ‘সুস্পষ্ট, বিশ্বস্ত ও দৃঢ়’ বৈশ্বিক সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানান। ইরাকের প্রেসিডেন্ট মাসুম আইএসকে রুখতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখনই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ, দেরি হলে... ডায়েশ (আইএসকে বোঝাতে এই নাম) অন্য এলাকাগুলোও দখল করে নিতে পারে। তাদের হুমকি আরও বড় হয়ে দাঁড়াতে পারে।’ সিরিয়ার এক-চতুর্থাংশ এবং ইরাকের ৪০ শতাংশ এলাকাই বর্তমানে আইএসের জিহাদিদের দখলে। মধ্যপ্রাচ্যসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে ওঠা আইএসকে রুখতে একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠন ত্বরান্বিত করতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত সপ্তাহে বিভিন্ন এলাকায় ম্যারাথন সফর করেন। প্যারিস সম্মেলনে তিনি মার্কিন নেতৃত্বাধীন সেই জোটের কৌশল ঝালাই করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ইরান জোটে নেই: প্যারিসে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিল ইউরোপের প্রধান দেশগুলো, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য, ইরাকের প্রতিবেশী দেশগুলো এবং উপসাগরীয় আরব দেশগুলো। কিন্তু ইরাকের প্রতিবেশী ইরানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে দেশটি বলেছে, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগেই প্রস্তাব দিয়েছিল। তা ফিরিয়ে দেয় তেহরান। গতকাল সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেন নিজের দাপ্তরিক ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ইরাকে তার দূতাবাসের মাধ্যমে জানতে চেয়েছিল, আমরা সহায়তা করতে পারি কি না। আমি “না” বলেছি। কারণ, তাদের নোংরা হাত রয়েছে।’
ফরাসি নজরদারি শুরু: গতকাল থেকে ফরাসি আকাশযানের ইরাকের ওপরে নজরদারি শুরু করার কথা জানান ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লঁরা ফ্যাবিয়াস। পরে ফরাসি একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, দুটি ফরাসি যুদ্ধবিমান ও একটি জ্বালানি ভরার বিমান ইরাকের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ: তরুণদের জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ দেওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা থামাতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মার্কিন সরকার। মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এর আওতায় দেশের তরুণসমাজকে মৌলবাদে উদ্বুদ্ধ করা ঠেকাতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করা হবে।
কাঠগড়ায় প্রথম আইএস জিহাদি: জার্মানিতে গতকাল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ক্রেশনিক বারিশা (২০) নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সিরিয়ায় আইএসের পক্ষে লড়াই করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.