নওয়াজের পদত্যাগ প্রত্যাখ্যান

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই এবং ড. তাহিরুল কাদরির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক বা পিএটি-এর দাবিকে অসাংবিধানিক বলেছে দেশটির পার্লামেন্ট। বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং গণতন্ত্র রক্ষায় সংবিধান সমুন্নত রাখার পক্ষেও মত দিয়েছে। সংসদ পিটিআই এবং পিএটি-এর সব দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ ছাড়া ইমরান খান এবং তাহিরুল কাদরির সাম্প্রতিক বক্তব্যের নিন্দাও জানিয়েছে সংসদ। সিনিয়র পার্লামেন্টারিয়ান মাহমুদ খান আচাকজেই সংসদে এ বিষয়টি উপস্থাপন করেন। এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেছেন, পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই আমাদের সঙ্গে আছে। দেশটিতে সৃষ্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের নওয়াজ বলেন, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী ১২টি রাজনৈতিক দলের ১১টি আমাদের সমর্থন করছে এবং তারা গণতন্ত্রের পক্ষে। এ ছাড়া সব গণতান্ত্রিক শক্তি এই ইস্যুতে এখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। নওয়াজ আরও বলেন, সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ সংলাপ।
আমরা সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছি। কারণ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন। বিক্ষোভের ব্যাপারে তারা সংবিধান অনুযায়ী কাজ করছেন বলে দাবি করে নওয়াজ শরিফ বলেন, আমি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। দ্য ডন। মুলতানে ১৪৪ ধারা চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা নিরসনে পাকিস্তানের মুলতানে শুক্রবার ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। দু’দিনের জন্য সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। খবর ডননিউজের। এর আগে বৃহস্পতিবার পিটিআইর (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশির বাড়িতে হামলা চালায় পিএমএল-এন’র (পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ) সমর্থকরা। জেলা পিএমএল-এন’র প্রধান বিলাল বাটের নেতৃত্বে চক দৌলতে কোরেশির বাড়ির গেটের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন দলের সমর্থকরা। এ সময় তারা কোরেশির ‘গণতন্ত্রবিরোধী’ অবস্থানের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। ওই ঘটনার পর পিএমএল-এন’র স্থানীয় ৬০ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে মুলতান পুলিশ। এদিকে দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে শুক্রবারও প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে পিটিআই ও পিএটি (পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক)।
পাক রাজনীতিতে নাক
গলাবে না যুক্তরাষ্ট্র
পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেশটির অভ্যন্তরীণ ইস্যু। আর পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করবে না বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মেরি হার্ফ শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পাকিস্তানে সরকার ও বিরোধী- এই দু’পক্ষের মধ্যে যেকোনো আলোচনায় বা আলোচনা প্রক্রিয়ায় আমরা জড়িত নই। এমনকি দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করাও অর্থহীন।’ এমনকি চলমান সংকট শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সম্পূর্ণ হবে এবং দেশটির নির্বাচিত সরকারের ধারাবাহিকতায় কোনো ছেদ পড়বে না বলে আশা করেন মেরি হার্ফ।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামাবাদ এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মেরি হার্ফ বলেন, ‘পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি বেশ কয়েকবার দেশটির শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সে সময়ে পাকিস্তানের চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে আমি আশা করছি।’ মাত্র একদিন আগে দেয়া বক্তৃতায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’ মেরি হার্ফ সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করে বলেন, ‘নওয়াজ শরিফ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বলেই আমরা বিশ্বাস করি। আর নওয়াজের জায়গায় কোনো প্রধানমন্ত্রী এলে তাকেও নির্বাচিত হয়েই আসতে হবে।’

No comments

Powered by Blogger.