৮১ সেকেন্ডের গোলেই শেষ রিয়াল

অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ তাদের গত মৌসুমের ঐতিহাসিক সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে পারবে কিনা তা সময়ই বলবে। তবে মনে হচ্ছে, এবারও স্প্যানিশ লীগে শিরোপার জন্য অ্যাটলেটিকোর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে হবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনাকে। মৌসুমের শুরুতেই পাওয়া গেল তেমন ইঙ্গিত। স্প্যানিশ সুপার কাপে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালকে হারিয়ে মৌসুম দারুণভাবে শুরু করল অ্যাটলেটিকো। বার্নাব্যুতে প্রথম লেগ ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। শুক্রবার নিজেদের মাঠে দ্বিতীয় লেগে রিয়ালকে ১-০ গোলে হারিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপ শিরোপা ঘরে তুলেছে ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। অ্যাটলেটিকোর এই জয়ে নিশ্চিত হয়েছে গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে হারের প্রতিশোধও। নবাগত মারিও মান্দজুকিচের হাত ধরে সুপার কাপ জিতে দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীকে যেন সরাসরি চ্যালেঞ্চ ছুড়ে দিল স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।ডিয়েগো কস্তা, ডেভিড ভিয়া, থিবো কোর্তুয়া ও ফিলিপ লুইসের বিদায়ের পর এই মৌসুমে অ্যাটলেটিকো ছিল ভাঙা হাট।গতবারের লা লীগা চ্যাম্পিয়নরা এবার তাদের রাজত্ব ধরে রাখতে পারবে কিনা, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে সেই সংশয় উড়িয়ে দিয়ে এবারও দারুণ কিছু করার ইঙ্গিত দিয়ে রাখল অ্যাটলেটিকো। ফরাসি উইঙ্গার গ্রিজমান, ক্রোয়েশিয়ার স্টাইকার মান্দজুকিচ ও নতুন গোলকিপার ময়া হয়তো অনুভূত হতে দেবেন না কস্তা-ভিয়া-কোর্তুয়ার অনুপস্থিতি। পরশু ভিসেন্তে ক্যালডেরনে অ্যাটলেটিকোর জয়টি এসেছে এই ত্রয়ীর হাত ধরে।
স্প্যানিশ সুপার কাপের ইতিহাসে দ্রুততম গোলটিই করেছেন বায়ার্ন মিউনিখ থেকে আসা মান্দজুকিচ। মাত্র ৮১ সেকেন্ডের মাথায় গ্রিজমানের পাস থেকে রিয়ালের জালে বল জড়িয়ে দেন এই ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড।প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অ্যাটলেটিকোর হয়ে এটাই তার প্রথম গোল। তারকাখচিত দল নিয়েও বাকি খেলায় সেই গোলটি আর শোধ করতে পারেনি রিয়াল। ইনজুরি আশংকার মধ্যেও দ্বিতীয়ার্ধে টনি ক্রুসের বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কিন্তু সময়ের সেরা ফুটবলারও খুঁজে পাননি অ্যাটলেটিকোর জাল। নতুন সেনসেশন জেমস রদ্রিগেজ কিংবা এই গ্রহের সবচেয়ে দামি ফুটবলার গ্যারেথ বেলও পারেননি ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে। রিয়ালের পক্ষে সেরা দুটি আক্রমণ ছিল রদ্রিগেজের। বিপরীতে অ্যাটলেটিকোর পক্ষে ব্যবধান বাড়ানোর নিশ্চিত দুটি সুযোগ নষ্ট করেন প্রথম লেগের হিরো রাউল গার্সিয়া। একবার তার হেড প্রতিহত হয় পোস্টে। ইনজুরি টাইমে লাল কার্ড দেখেন রিয়ালের লুকা মডরিচ।চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ট্র্যাজেডির প্রতিশোধ নিয়ে ১৯৮৫ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতল অ্যাটলেটিকো। আর্জেন্টাইন কোচ ডিয়েগো সিমিওনের অধীনে গত তিন বছরে এটি তাদের পঞ্চম শিরোপা। প্রথমার্ধেই মাথা গরম করে ডাগআউট থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন সিমিওনে। পরে এ জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। তবে শিষ্যদের কীর্তিতে গর্বিত সিমিওনে, ‘আমাদের ক্লাবের অনেকেরই সুপার কাপ জেতার অভিজ্ঞতা ছিল না। এটা আমাদের সমর্থক ও খেলোয়াড়দের জন্য তাই বিশাল এক প্রাপ্তি। ছেলেদের নিয়ে আমি গর্বিত।’ তবে স্প্যানিশ লীগের প্রসঙ্গ উঠতেই বাস্তববাদী সিমওনে, ‘দীর্ঘ একটি লীগে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মতো দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা খুবই কঠিন। কিন্তু নকআউট ম্যাচে যে কোনো দলকে হারাতে পারি আমরা।’এই হারে এক মৌসুমে ঐতিহাসিক ছয় শিরোপা জয়ের আশা শেষ হয়ে গেল রিয়ালের। কিন্তু এ নিয়ে নাকি কোনোআফসোস নেই কার্লো আন্সেলোত্তির, ‘আমরা কখনই ছয় শিরোপা জয়ের কথা বলিনি। আমরা শুধু সম্ভাবনার কথাবলেছি। এই ম্যাচে ভালো না খেললেও আমি আমার দল নিয়ে গর্বিত। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালের চেয়ে এমন ম্যাচে হারাটা ভালো।’ এএফপি/ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.