মিসরে অচিরেই সফল বিপ্লব হবে

মিসরে সেনা শাসিত জালিম সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত ও কারাবন্দি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। কারাগার থেকে পাঠানো তার এ বার্তা মুরসির টুইটারে প্রকাশ করা হয়েছে। মুরসিবিরোধী সামরিক অভ্যুত্থানের নায়ক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট ঘোষণার একদিন পর এ বার্তা প্রকাশিত হয়। বার্তায় মিসরের জনগণকে সেনাসমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিপ্লব চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, অচিরেই সফল বিপ্লব হবে। নিজ সমর্থকদের কাছে লেখা মুরসির বার্তায় বলা হয়েছে, আপনাদের প্রতি মিসরের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সমর্থন রয়েছে। আপনারা বিপ্লবের পটভূমি তৈরি করে দেবেন বলে জনগণ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে... বিপ্লব আপনাদের ওপর নির্ভর করছে এবং আমার বিশ্বাস আপনারা এ বিপ্লবকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেবেন। কারাগার থেকে পাঠানো এ বার্তায় মুরসি ক্ষমতায় থাকাকালে কিছু ভুল করার কথা স্বীকার করেছেন। সেইসঙ্গে দুর্নীতি ও অপরাধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি সঠিক কাজ যেমন করেছি তেমনি আমার কিছু ভুলও ছিল। কিন্তু আমি আপনাদের বা এই দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি এবং ভবিষ্যতেও করব না। গত বছর জুলাই মাসে ব্রাদারহুড নেতা ও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করেন জেনারেল সিসি। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে হাজার হাজার ব্রাদারহুড কর্মী নিহত হন। আরও হাজার হাজার মুরসি সমর্থককে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। এরই মধ্যে প্রহসনের বিচারে সেনাসমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের দায়ে শত শত ব্রাদারহুড কর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। আল আরাবিয়া, আল আহরাম।
যৌন হয়রানির নতুন শাস্তি
মিসরে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকা যৌন হয়রানি বন্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে নতুন শাস্তির বিধান ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। মিসরের অন্তর্বর্তীকালীন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আদলি মানসুর বৃহস্পতিবার এক ডিক্রি জারির মাধ্যমে নতুন এ আইনের ঘোষণা দেন বলে শুক্রবার আল আহরামের খবরে জানানো হয়েছে। এ আইনের অধীনে কেউ নির্যাতনকারী হিসেবে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সর্বনিু ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল, অনাদায়ে ৪০০ থেকে ৭ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জোরপূর্বক বা অস্ত্রের মুখে যৌন হয়রানি প্রমাণিত হলে নিুে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হবে। একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ একাধিকবার আসতে থাকলে প্রতিবার দ্বিগুণ হবে শাস্তির পরিমাণ। এছাড়া কাউকে পর্নোগ্রাফিতে আহ্বান জানালে, যৌন হয়রানিমূলক বাক্য ছুড়ে দিলে বা অঙ্গভঙ্গি করে অমর্যাদা করার চেষ্টা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। পূর্বেকার একটি আইন সংশোধন করে এ ডিক্রি জারি করা হয়েছে। পূর্বের আইনটিতে যৌন হয়রানিকারীর বিরুদ্ধে কোনো সুস্পষ্ট অভিযোগ দাঁড় করানো সম্ভব হতো না। বিচ্ছিন্ন মানহানি বা আক্রমণের অভিযোগ করা যেত মাত্র। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে আরব বসন্তের কালে তৎকালীন স্বৈরাচারী শাসক হোসনি মোবারকের পতন আন্দোলনে মিসরীয় নারীরা বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছিল।

No comments

Powered by Blogger.