মিসরে একতরফা নির্বাচনে সিসিই প্রেসিডেন্ট

আবদেল ফাত্তাহ আল–সিসি
মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ধারণামতোই বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন৷ অধিকাংশ ব্যালট গণনার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দেখা যায়, তিনি ৯৬ দশমিক দুই শতাংশ ভোট পেয়েছেন৷ খবর এএফপির৷ স্থানীয় সময় দুপুরের আগে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, মোট ৩৫২টি গণনাকেন্দ্রের মধ্যে ৩২১টির ফলাফল এসে গেছে৷
অবসরপ্রাপ্ত ফিল্ড মার্শাল আল-সিসির পক্ষে ভোট দিয়েছেন অন্তত দুই কোটি ১০ লাখ ভোটার৷ ক্ষমতাচ্যুত মোহাম্মদ মুরসির সমর্থক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের কার্যক্রম তাঁর পতনের পর সরকারি দমন-পীড়নে সীমিত হয়ে আসে৷ একপর্যায়ে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধও করা হয়৷ তাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সিসির বিজয় প্রায় নিশ্চিত ছিল৷ তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থী হামদিন সাবাহি এ পর্যন্ত মাত্র তিন দশমিক আট শতাংশ ভোট পেয়েছেন৷ ২০১২ সালের নির্বাচনে তিনি মুরসির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন৷ জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সেনাবাহিনী গত বছর উৎখাত করে৷ আল-সিসিই এতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন৷ পরে মুরসির সমর্থকদের বিরুদ্ধে কঠোর দমন অভিযান চালানো হয়৷ এতে অন্তত এক হাজার ৪০০ জন নিহত হয়৷ এ ছাড়া ১৬ হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়৷ মোট পাঁচ কোটি ৪০ লাখ ভোটারের মধ্যে অন্তত ৪৬ শতাংশ এবারের নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র আল-আহরাম৷
তবে সিসি আরও বেশি ভোটার উপস্থিতি প্রত্যাশা করেছিলেন৷ উপস্থিতির হার কম হওয়ায় নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার পাশাপাশি সিসির কর্তৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে৷ ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া গত মঙ্গলবারের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা থাকলেও পরে সেনা-সমর্থিত কর্তৃপক্ষ ভোটগ্রহণের সময়সীমা একদিন বৃদ্ধি করে৷ তবে গত বুধবার অনেক কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি ছিল না বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়৷ ফলে ভোটগ্রহণে ‘অনিয়মের’ অভিযোগ এনে বামপন্থী হামদিন সাবাহির সমর্থকেরা প্রতিবাদ জানান৷ প্রভাবশালী সংগঠন নিষিদ্ধঘোষিত মুসলিম ব্রাদারহুডের অনুপস্থিতির কারণে এবারের নির্বাচন নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক রয়েছে৷ এ ছাড়া উদারপন্থী ও ধর্মনিরপেক্ষ বেশ কয়েকটি সংগঠনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি৷ একজন নির্বাচনী কর্মকর্তা বলেন, নির্ধারিত সময় মঙ্গলবার পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি ছিল মাত্র প্রায় ৩৭ শতাংশ৷ মিসরে গত কয়েক বছর ধরে চলমান বিশৃঙ্খলার পর কঠোর হাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিছুটা জনসমর্থন অর্জন করেছেন সিিস৷ প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁর সমর্থকেরা জাতীয় পতাকা নিয়ে রাজধানী কায়রোসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় রাস্তায় বিজয় উদ্যাপন করেন৷ মিসরের ইতিহাসের একমাত্র নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে উৎখাতের প্রতি সমর্থনের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এ নির্বাচনে বড় আকারের ভোটার উপস্থিতির জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন সিসি৷

No comments

Powered by Blogger.