স্বস্তিতে থাকবেন না মোদি

নরেন্দ্র মোদি
এবারের লোকসভা নির্বাচনে মোট ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৩৩৫টিই পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ)৷ অন্যদিকে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৪৪টি আসন৷ ফলে লোকসভায় বিল পাস বা নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকারকে কোনো জটিলতার মুখে পড়ার কথা নয়৷ কিন্তু আসলে কি তাই? লোকসভায় জোট এবং দলীয়ভাবে বিজেপি শক্তিশালী অবস্থানে থাকলেও স্বস্তি নেই ভাবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির৷ তঁার জন্য মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে রাজ্যসভা৷ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে দলটি এখনো সংখ্যালঘু৷ রাজ্যসভায় বিজেপির সদস্যের সংখ্যা এতটাই কম যে সেখানে আঞ্চলিক দলগুলোর সাহায্য ছাড়া তারা চলতে পারবে না৷ অথচ মাত্র কয়েক দিন আগে নির্বাচনের মাঠে এসব দলের বিরুদ্ধেই বিজেপিকে কঠিন লড়াইয়ে নামতে হয়েছিল৷ ২৪৫ সদস্যের রাজ্যসভায় বিজেপির সদস্য রয়েছেন মাত্র ৪৬ জন৷ রাজ্যসভায় কংগ্রেস এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ৷ তাদের সদস্যের সংখ্যা ৬৮৷ মিত্র দলগুলোর সদস্যদের ধরলেও রাজ্যসভায় বিজেপি পক্ষে রয়েছে মাত্র ৬৫ জন৷ ফলে দলটি কোনো আইন পাসের উদ্যোগ নিলে আঞ্চলিক দলগুলোর সমর্থন লাগবেই৷ বিজেপিকে চেয়ে থাকতে হবে জয়ললিতার এআইএডিএমকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসসহ বিভিন্ন দলের দিকেই৷
এর অর্থ হচ্ছে, রাজ্যসভায় বিজেপির এই সংখ্যালঘু অবস্থান মোদিকে বেশ ভোগাতে পারে৷ অবশ্য মোদির জন্য আশার কথা হচ্ছে, রাজ্যসভার এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের মেয়াদ ২০১৬ সালে শেষ হবে৷ তখন বেশ কিছু রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হবে৷ ওই নির্বাচনে বিজেপি ও তাদের মিত্ররা ভালো ফল করলে রাজ্যসভায় তারা একটা সুবিধাজনক অবস্থান লাভ করতে পারবে৷ রাজ্যসভায় বর্তমানে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার (ইউপিএ) এমপির সংখ্যা ১০২৷ তবুও বিল পাস করতে কংগ্রেস সরকারকে বিভিন্ন সময়ে বিজেপি ও অন্যান্য দলের করুণার ওপর নির্ভর করতে হয়েছে৷ তাই সামনের দিনগুলোতে রাজ্যসভায় কোনো বিল পাস করতে হলে মোদিকে আঞ্চলিক দলগুলোর দুয়ারে যেতে হবে৷ কারণ, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণার সময় আঞ্চলিক দলগুলোর বেশির ভাগই মোদিবিরোধী মনোভাব দেখিয়েছে৷ অবশ্য রাজ্যসভায় কোনো বিল আটকে গেলে মোদির সরকার সংবিধানের ১১৮ নম্বর অনুচ্ছেদ মোতাবেক রাষ্ট্রপতিকে পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন ডাকতে বলতে পারবে৷ তখন যৌথ অধিবেশনে পার্লামেন্টের সদস্য হবে ৭৯০ (লোকসভায় দুজন মনোনীত সদস্যসহ মোট ৫৪৫ জন এবং রাজ্যসভায় ২৪৫ জন)৷ সুতরাং, যৌথ অধিবেশনের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ৩৯৬ জন সদস্যের সমর্থন লাগবে৷ সে ক্ষেত্রে লোকসভায় ৩৩৫টি আসন পাওয়া এনডিএর জন্য রাজ্যসভায় মাত্র ৬১ জন সদস্যের সমর্থন থাকলেই চলবে৷ তবে একটিমাত্র ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েই যাবে৷ সেটি হলো সংবিধান সংশোধন৷ সংবিধান সংশোধনের বিলের ব্যাপারে পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন ডাকার কোনো নিয়ম নেই৷ সিএনএন-আইবিএন৷

No comments

Powered by Blogger.