স্বাধীন হতে চায় ক্রিমিয়া

ই উ ক্রে ন স ং ক ট
গণভোটের আগেই ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়া অঞ্চলের স্বাধীনতার পক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ভোট দিয়েছেন ক্রিমিয়ার পার্লামেন্টের মস্কোপন্থী সদস্যরা। ইউক্রেন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং শত্রুর অবস্থান জানতে ন্যাটো পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় বিমান মোতায়েন করতে যাচ্ছে। এদিকে ইউক্রেন-সংকট সমাধানে মার্কিন প্রস্তাবে মস্কো সম্পৃক্ত না হওয়া পর্যন্ত রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ফ্রান্স সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছে, রাশিয়া পশ্চিমা প্রস্তাবে রাজি না হলে আগামী সপ্তাহেই রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপ করা হতে পারে। স্বায়ত্তশাসিত প্রজাতন্ত্র ক্রিমিয়ার স্থানীয় পার্লামেন্টের সদস্য ৮১ জন। এর মধ্যে ৭৮ জন স্বাধীনতা ঘোষণার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। পার্লামেন্টের এই পদক্ষেপ ক্রিমিয়াকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আইনি কাঠামো তৈরির প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ক্রিমিয়ার পার্লামেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ক্রিমিয়াকে রাশিয়া ফেডারেশনের অংশ হওয়ার পক্ষে গণভোটের ফল গেলে তার পরই স্বাধীনতার বিষয়টি কার্যকর হবে। গণভোট রাশিয়ার পক্ষে গেলে ‘ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্র একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে রুশ ফেডারেশনে যোগ দেওয়ার আবেদন জানাবে। আগামী রোববার এ গণভোট হওয়ার কথা। কেরির প্রত্যাখ্যান: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই লাভরভকে বলেছেন, ক্রিমিয়ায় রুশ সামরিক হস্তক্ষেপ ইউক্রেন-সংকট নিয়ে আলোচনার বিষয়টিকে কঠিন করে দিয়েছে। ক্রিমিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে গণভোট হলে ইউক্রেন-সংকট নিয়ে আলোচনার দরজা প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে।
ইউক্রেন-সংকট সমাধানে কেরি চলতি সপ্তাহে লাভরভকে একটি প্রস্তাব দেন, যেখানে বিশেষ করে কিয়েভের নতুন সরকারের সঙ্গে মস্কো বৈঠকে রাজি কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। রাশিয়ার পাল্টা প্রস্তাব: রাশিয়া সোমবার বলেছে, তারা সংকট নিরসনে মার্কিন প্রস্তাবের একটি পাল্টা প্রস্তাব তৈরি করছে। পাশাপাশি ইউক্রেনের নতুন সরকারকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছে মস্কো। পক্ষান্তরে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী আরসেনিয়ে ইয়াৎসেনিউক ক্রিমিয়ার কর্তৃপক্ষকে রাশিয়ার মদদপুষ্ট ‘সংঘবদ্ধ অপরাধী দল’ আখ্যা দিয়েছেন। এদিকে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরা ফ্যাবিয়াস গতকাল বলেছেন, রাশিয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির প্রস্তাবে রাজি হলে তিনি (জন কেরি) মস্কো যাবেন। সে ক্ষেত্রে এখনই অবরোধ আরোপ করা হবে। আর রাশিয়া যদি পশ্চিমা প্রস্তাবে রাজি না হয় অথবা নেতিবাচক মনোভাব দেখায়, তাহলে আগামী সপ্তাহেই দফায় দফায় রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপ করা হবে। অন্যদিকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমিয়ার গতকাল এস্তোনিয়া সফরকালে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘রাশিয়ার আচরণে কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন ছাড়াই আগামী সপ্তাহ পার হয়ে গেলে, পরদিন সোমবার ইউরোপীয় (পররাষ্ট্রবিষয়ক) কাউন্সিল তাদের পদক্ষেপের পরবর্তী ধাপ নিয়ে আলোচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না, তবে রুশ কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের তেমন কিছুর জন্য প্রস্তুতি নিতে বাধ্য করছে।’ ন্যাটোর মুখপাত্র বলেছেন, শত্রুপক্ষের অবস্থান চিহ্নিত করতে অ্যাওয়াক্স (এয়ারবোর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম) বিমান মোতায়েন করা হচ্ছে। মিত্র দেশের ভূখণ্ড থেকে এসব বিমান কাজ করবে। গত সোমবারই পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় ওই বিমান মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ন্যাটো জানায়, পর্যবেক্ষণ বিমান ‘পরিস্থিতি সম্পর্কে মিত্রদের সচেতনতা’ বাড়াবে। রয়টার্স, এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.