সিরিয়া যুদ্ধের শিকার ৫৫ লাখ শিশু

সিরিয়া যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর সংখ্যা গত বছর প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৫৫ লাখে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনে গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধপীড়িত ওই শিশুদের অনেকে অবরুদ্ধ এলাকায় আটকে আছে।
তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর কোনো উপায় নেই। সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ইউনিসেফ জানায়, থাকা-খাওয়ার নিদারুণ কষ্টে সিরিয়ার অনেক শিশু এখন সুরক্ষা, চিকিৎসাসেবা বা মানসিক সমর্থন ছাড়াই বসবাস করছে। তাদের শিক্ষার সুযোগ খুবই কম। কখনো কখনো শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ওপর ইচ্ছাকৃত হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটছে। সিরিয়ায় ১০ লাখ শিশু অবরুদ্ধ অবস্থায় করুণ জীবন যাপন করছে। তাদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো যাচ্ছে না। আর মানসিক সাহায্যের অভাবে ভুগছে প্রায় ২০ লাখ শিশু। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি লেক বলেন, সিরিয়ার শিশুদের জন্য গত তিন বছর যেন তাদের জীবনের দীর্ঘতম সময় ছিল। তাদের কি আরও এক বছর যন্ত্রণা সইতে হবে?
তিন বছর ধরে চলা সিরিয়ার যুদ্ধ শিশুদের ওপর কতটা গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তার ওপরই প্রতিবেদনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, সিরিয়ার অভ্যন্তরে ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে বসবাসরত ৫৫ লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় ধস, মানসিক চাপ ও পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থার ক্রমেই অবনতিতে সার্বিকভাবে একটি প্রজন্ম বিপর্যস্ত হতে চলেছে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রিত ১২ লাখ সিরীয় শিশু বর্তমানে বিভিন্ন শরণার্থীশিবিরে রয়েছে। তারা বিশুদ্ধ পানি, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১০টি শরণার্থী শিশুর মধ্যে একজন এখন শ্রম দিচ্ছে এবং জর্ডানে অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সী প্রতি পাঁচ মেয়ের একজন বিয়ে করছে। অ্যান্থনি লেক বলেন, শিশুরা যাতে নিজেদের বাড়িতে ফিরে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করতে পারে, সে জন্যই এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.