সমূদ্র বেষ্টিত কুতুবদিয়া দ্বীপ হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র by এম. শাহজাহান চৌধুরী শাহীন

পরিকল্পিত উন্নয়নে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপ একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। কুতুব আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত প্রকৃতির অপরূপ লীলাক্ষেত্র সমূদ্র বেষ্টিত সম্ভবানাময় এই দ্বীপ।
এখানে রয়েছে লবণ শিল্প, মৎস্য ভান্ডার, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গ্যাস ক্ষেত্র ও দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে এখান থেকে প্রতিবছর সরকারের প্রচুর অর্থ প্রাপ্তি ঘটতে পারে।প্রকৃতিগতভাবে কুতুবদিয়া দ্বীপটি সম্পূর্ণ সমূদ্র পরিবেষ্টিত। পশ্চিম উপকূল ঘেষে রয়েছে প্রায় ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে বালির আঁড়িযুক্ত অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত সমুদ্র সৈকত। দৃষ্টিনন্দন সারি সারি ঝাউবীথি দেখলেই মনটা ভরে উঠে।উপজেলা সদর হতে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণেই আলী আকবর ডেইল এলাকার সমুদ্র সৈকতে রয়েছে দেশের সর্বপ্রথম বায়ুবিদ্যুৎ পাইলট প্রকল্প। উপজেলা সদর হতে ৫ কিলোমিটার উত্তরে দক্ষিণ ধুরংয়ের আলী ফকির ডেইলের সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন বিখ্যাত বাতিঘর। এখানে সমূদ্র সৈকত হতে অন্তত ৩ কিলোমিটার পূর্বে কুতুব আউলিয়ার সুযোগ্য উত্তরসূরি হযরত শাহ আবদুল মালেক আল কুতুবী (র.)-এর মাজার শরীফ, যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন অসংখ্য ভক্তের আসা যাওয়া রয়েছে। উপজেলা সদরের ৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব চ্যানেল সংলগ্ন বিশাল লবণ উৎপাদন প্রদর্শনী খামার, যেখানে লবণ উৎপাদন মৌসুমে প্রতিদিন দেশী-বিদেশী ইতিহাসবিদ, গবেষক, প্রযুক্তিবিদ ও সাংবাদিক লবণ উৎপাদন প্রক্রিয়া দেখতে আসেন। উপজেলা সদর হতে ৭ কিলোমিটার উত্তরে উত্তর ধুরংয় রয়েছে প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন কালামার মসজিদ। এই মসজিদে প্রতিদিন অসংখ্য মুসল্লির যাওয়া আসা হয়।সবমিলিয়ে বলা যেতেই পারে, কর্মব্যস্ততার ফাঁকে মনকে সতেজ ও সমৃদ্ধ করতে কয়েকদিনের জন্য সৌন্দর্য্যরে রানী কুতুবদিয়ায় ভ্রমণে গেলে নিঃসন্দেহে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যাবে।কুতুবদিয়ায় হোটেল মোটেল না থাকলেও জেলা পরিষদের একটি ডাকবাংলো এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এখানে কম খরচে থাকা খাওয়ার ও চলাফেরার যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা রয়েছে।রাজনৈতিক হানাহানি, ডাকাতি ও ছিনতাইমুক্ত কুতুবদিয়ায় আসলে কোন ভোগান্তির শিকার হতে হয়না। বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে গাড়িযোগে সোজা পেকুয়ার মগনামা ঘাটে গিয়ে কুতুবদিয়া চ্যানেল পার হয়ে স্পিড বোটে ৫/৭ মিনিট এবং ডেনিশ বোটে ২০/৩০মিনিটের মধ্যে কুতুবদিয়ায় পৌঁছা যায়।প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে দিক দিয়ে কুতুবদিয়া কোন অংশেই সেন্ট মার্টিনের চেয়ে কম নয়। সেন্ট মার্টিন একটি মাত্র ইউনিয়ন। অপরদিকে কুতুবদিয়া একটি উপজেলা এবং আয়তনে অনেক বড়; কিন্তু এই সম্ভাবনাময় দ্বীপের পর্যটন শিল্পের বিকাশে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিচ্ছেনা কোন সরকার। এটাই এলাকাবাসীর দ্বীপবাসীর দু:খ। এ দুঃখের দ্রুত অবসান হোক-দ্বীপবাসী তাই আশা করেন।

No comments

Powered by Blogger.