তফসিলের পর সহিংসতায় নিহত ১৬ অবরোধের দ্বিতীয় দিনে নিহত ৭
দশম জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন বুধবার সারাদেশের সহিংসতার এখন পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
তাদের মধ্যে সাতক্ষীরায় জামায়াত কর্মী ও গৃহবধূ, সিরাজগঞ্জে জামায়াত কর্মী ও ছাত্রদল নেতা, চট্টগ্রামে টেম্পোচালক, গাজীপুরে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হযেছেন। এছাড়াও মঙ্গলবার ঢাকায় ককটেল হামলায় আহত ব্যাংক কর্মচারী আজ ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। সবমিলিয়ে তফসিল ঘোষণার পর এ পর্যন্ত সারাদেশে সহিংসতায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে বুধবারের অবরোধে চট্টগ্রামে ৩০টি ট্রাক ও অর্ধশতাধিক দোকান ভাঙচুর করা হয়। চট্টগ্রাম, মিরসরাই, গাজীপুর ও গোয়ালন্দে আগুন দেয়া হয় পাঁচটি গাড়িতে। রাজশাহী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, সীতাকুণ্ড, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জে পিকেটার-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। পুলিশ আটক করেছে ৩৪ জনকে। এ ছাড়া চাঁদপুর ও সিরাজগঞ্জে রেলপথে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে।
সিরাজগঞ্জে জামায়াত ও ছাত্রদল কর্মী নিহত
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা সদরের মুকুন্দগাঁতী বাজারে বুধবার দুপুরে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে পুলিশ-আওয়ামী লীগের সংষর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। নিহতরা হলেন- চাঁদমিটুয়ানী গ্রামের সামসুল আলম সরকারের ছেলে ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের যুগ্ন-সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ (২৫) এবং ধুকুরিয়াবেড়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন ফকিরের ছেলে ও জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল জলিল (৫৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ অবরোধের বিপক্ষে উপজেলা সদরে একটি মিছিল বের করে। এর কিছুক্ষণ পর বেলা ১১টার দিকে কল্যাণপুরে জড়ো হয়ে জামায়াত-বিএনপি একটি মিছিল শেরনগর হয়ে বেলকুচির সদরের মুকন্দগাঁতি বাজারের দিকে আসতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ মুকুন্দগাঁতী বাজার ওয়াপদা রোডের মুখে অবস্থান নেয়। জামায়াত-বিএনপির মিছিলটি মুকন্দগাঁতি বাজার এলাকার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে আসা মাত্র আগে থেকেই অবস্থান নেয়া বিপরীত দিক থেকে পুলিশ মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। একই সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও গুলি চালিয়ে ওই মিছিলের ওপর হামলা চালায় বলে জামায়াত-বিএনপি ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় র্যা ব ও বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ও গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় মাসুম বিল্লাহ ও আব্দুল জলিল গুলিতে নিহত হন। এ সময় অন্তত ২৫ জন আহত হন।
সাতক্ষীরায় জামায়াত কর্মী ও গৃহবধূ নিহত
১৮ দলের টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিন বুধবার সাতক্ষীরায় এক গৃহবধূসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোররাত চারটার দিকে সদর উপজেলার শেয়ালডাঙ্গা গ্রামে পুলিশ, র্যা ব ও বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে শামছুর রহমান (৩৫) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। বেলা ১২টার দিকে সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের কলারোয়া উপজেলার গোপিনাথপুর মোড়ে অবরোধ করার জন্য কাটা গাছের ডাল মাথায় পড়ে মারা যান গৃহবধূ আম্বিয়া খাতুন।
নিহত শামছুর শেয়ালডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। তাকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছেন জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল খালেক মণ্ডল।
চট্টগ্রামে টেম্পোচালক নিহত
চট্রগ্রামের পটিয়া উপজেলার ফকিরনিরহাট এলাকায় বুধবার সকাল আটটার দিকে টেম্পোচালক এরশাদ আলীকে (২৬) ধাওয়া করেন পিকেটারেরা। তারা টেম্পোতে ওঠে চালককে মারধর করে। এক পর্যায়ে তিনি টেম্পো নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পিকেটারেরা ধাওয়া দিতে থাকেন। টেম্পোটি উল্টে গেলে তিনি আহত হন। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে দুপুর ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করে।
হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। নিহতের ভাগ্নে তৈয়ব আলী জানান, এরশাদের বাড়ি পটিয়ায়। পিকেটারদের লাগানো আগুনে সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী আবদুল আলম দগ্ধ হয়েছেন।
গাজীপুরে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত
গাজীপুরের কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী।
সকালে টঙ্গী থেকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে চেরাগআলী এলাকায় গিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধের চেষ্টা করে এবং যানবাহন ভাঙচুর করে। এ সময় তারা একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। এক পর্যায়ে পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঢাকায় আহত ব্যাংক কর্মচারীর মৃত্যু
অবরোধের প্রথম দিনে ককটেল হামলায় আহত ন্যাশনাল ব্যাংকের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আনোয়ারা বেগম আজ ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
প্রসঙ্গত, তফসিল ঘোষণার পরে ১৮ দলর ডাকা টানা ৪৮ ঘন্টার অবরোধে প্রথমদিন সোমবার ৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় বিজিবি সদস্য, ছাত্রদল কর্মী ও এক রিকশাচালক, সাতক্ষীরায় যুবলীগ ও ওলামা লীগ নেতা, বগুড়ায় যুবদল নেতা, সিরাজগঞ্জে পথচারী, বরিশালে কাঁচামাল ব্যবসায়ী এবং ঢাকায় একজন নিহত হন। সবমিলিয়ে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে বুধবারের অবরোধে চট্টগ্রামে ৩০টি ট্রাক ও অর্ধশতাধিক দোকান ভাঙচুর করা হয়। চট্টগ্রাম, মিরসরাই, গাজীপুর ও গোয়ালন্দে আগুন দেয়া হয় পাঁচটি গাড়িতে। রাজশাহী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, সীতাকুণ্ড, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জে পিকেটার-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। পুলিশ আটক করেছে ৩৪ জনকে। এ ছাড়া চাঁদপুর ও সিরাজগঞ্জে রেলপথে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে।
সিরাজগঞ্জে জামায়াত ও ছাত্রদল কর্মী নিহত
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা সদরের মুকুন্দগাঁতী বাজারে বুধবার দুপুরে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে পুলিশ-আওয়ামী লীগের সংষর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। নিহতরা হলেন- চাঁদমিটুয়ানী গ্রামের সামসুল আলম সরকারের ছেলে ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের যুগ্ন-সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ (২৫) এবং ধুকুরিয়াবেড়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন ফকিরের ছেলে ও জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল জলিল (৫৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ অবরোধের বিপক্ষে উপজেলা সদরে একটি মিছিল বের করে। এর কিছুক্ষণ পর বেলা ১১টার দিকে কল্যাণপুরে জড়ো হয়ে জামায়াত-বিএনপি একটি মিছিল শেরনগর হয়ে বেলকুচির সদরের মুকন্দগাঁতি বাজারের দিকে আসতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ মুকুন্দগাঁতী বাজার ওয়াপদা রোডের মুখে অবস্থান নেয়। জামায়াত-বিএনপির মিছিলটি মুকন্দগাঁতি বাজার এলাকার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে আসা মাত্র আগে থেকেই অবস্থান নেয়া বিপরীত দিক থেকে পুলিশ মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। একই সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও গুলি চালিয়ে ওই মিছিলের ওপর হামলা চালায় বলে জামায়াত-বিএনপি ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় র্যা ব ও বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ও গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় মাসুম বিল্লাহ ও আব্দুল জলিল গুলিতে নিহত হন। এ সময় অন্তত ২৫ জন আহত হন।
সাতক্ষীরায় জামায়াত কর্মী ও গৃহবধূ নিহত
১৮ দলের টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিন বুধবার সাতক্ষীরায় এক গৃহবধূসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোররাত চারটার দিকে সদর উপজেলার শেয়ালডাঙ্গা গ্রামে পুলিশ, র্যা ব ও বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে শামছুর রহমান (৩৫) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। বেলা ১২টার দিকে সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের কলারোয়া উপজেলার গোপিনাথপুর মোড়ে অবরোধ করার জন্য কাটা গাছের ডাল মাথায় পড়ে মারা যান গৃহবধূ আম্বিয়া খাতুন।
নিহত শামছুর শেয়ালডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। তাকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছেন জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল খালেক মণ্ডল।
চট্টগ্রামে টেম্পোচালক নিহত
চট্রগ্রামের পটিয়া উপজেলার ফকিরনিরহাট এলাকায় বুধবার সকাল আটটার দিকে টেম্পোচালক এরশাদ আলীকে (২৬) ধাওয়া করেন পিকেটারেরা। তারা টেম্পোতে ওঠে চালককে মারধর করে। এক পর্যায়ে তিনি টেম্পো নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পিকেটারেরা ধাওয়া দিতে থাকেন। টেম্পোটি উল্টে গেলে তিনি আহত হন। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে দুপুর ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করে।
হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। নিহতের ভাগ্নে তৈয়ব আলী জানান, এরশাদের বাড়ি পটিয়ায়। পিকেটারদের লাগানো আগুনে সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী আবদুল আলম দগ্ধ হয়েছেন।
গাজীপুরে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত
গাজীপুরের কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী।
সকালে টঙ্গী থেকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে চেরাগআলী এলাকায় গিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধের চেষ্টা করে এবং যানবাহন ভাঙচুর করে। এ সময় তারা একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। এক পর্যায়ে পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঢাকায় আহত ব্যাংক কর্মচারীর মৃত্যু
অবরোধের প্রথম দিনে ককটেল হামলায় আহত ন্যাশনাল ব্যাংকের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আনোয়ারা বেগম আজ ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
প্রসঙ্গত, তফসিল ঘোষণার পরে ১৮ দলর ডাকা টানা ৪৮ ঘন্টার অবরোধে প্রথমদিন সোমবার ৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় বিজিবি সদস্য, ছাত্রদল কর্মী ও এক রিকশাচালক, সাতক্ষীরায় যুবলীগ ও ওলামা লীগ নেতা, বগুড়ায় যুবদল নেতা, সিরাজগঞ্জে পথচারী, বরিশালে কাঁচামাল ব্যবসায়ী এবং ঢাকায় একজন নিহত হন। সবমিলিয়ে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
No comments