বিদেশীদের উদ্যোগের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন by ইকতেদার আহমেদ

যে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্বাচন পদ্ধতি সে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোয় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য একটি দল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট প্রাপ্তির মাধ্যমে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করে। সরকারের নির্ধারিত মেয়াদান্তে কী পদ্ধতিতে কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা অধিকাংশ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই একটি মীমাংসিত বিষয়। এটি সংবিধান ও আইন দ্বারা নির্ধারিত। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী দেশে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছিল এবং ১৯৭৩ সালে সংবিধানের বিধিবিধানের আলোকে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান পূর্ববর্তী যে সংসদ কার্যকর ছিল, সে সংসদটির সদস্যরা পাকিস্তানের সামরিক বিধিমালা লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে নির্বাচিত হওয়ায় এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের গণপরিষদের সদস্য হিসেবে অভিহিত করায় সংবিধান প্রণয়ন-পরবর্তী ওই পরিষদ অবলুপ্ত করা হয়।
১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী ১৯৭৫ সালের প্রথম ভাগে ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা হতে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন করা হয়। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে ১৯৭২-এর সংবিধানে যে বিধান ছিল তা অক্ষুণœ রাখা হয়। উল্লেখ্য, ’৭২-এর সংবিধানে মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে গেলে ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এবং মেয়াদ অবসান ছাড়া অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে গেলে ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান ছিল। ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম সংসদের কোনোটিই মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারায় মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়া পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আবশ্যকতা দেখা দেয়নি। ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এ চারটি নির্বাচনের শেষোক্ত তিনটি রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার অধীন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী সংবিধানবহির্ভূত ব্যবস্থায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৬ষ্ঠ সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হলেও নির্বাচন-পরবর্তী নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত বিল প্রণয়নপূর্বক এক মাসেরও কম ব্যাপ্তিকালে ওই সংসদ অবলুপ্ত হলে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনগুলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। তবে ৯ম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানের বিধানাবলী অনুযায়ী গঠিত হয়নি।
৫ম জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ অবলুপ্ত হওয়া অবধি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আন্দোলন করতে থাকে। সে সময় এ তিনটি দলের জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব থাকলেও সম্মিলিতভাবে তা সংবিধানে সংশোধনী আনয়নপূর্বক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। ওই তিনটি দলের আন্দোলন তীব্রতর হয়ে হরতাল, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ প্রভৃতির মাধ্যমে জনজীবন বিপর্যস্ত এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ক্ষুণœ হতে থাকলে এ দেশে কর্মরত প্রভাবশালী রাষ্ট্রের বিদেশী কূটনীতিক এবং কমনওয়েলথের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাও সমঝোতার উদ্যোগ নেয়। কমনওয়েলথের উদ্যোগে সমঝোতা বৈঠকে একজন সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল উভয় দলের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেও ফলপ্রসূ সমাধান দিতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীকালে দেখা গেল ৬ষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী দেশের ভবিষ্যৎ ও স্থিতিশীলতার কথা চিন্তা করে নিজ উদ্যোগে ওই সংসদে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব না থাকা সত্ত্বেও তাদের দাবি বাস্তবায়নপূর্বক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান সংবিধানে সন্নিবেশন করে মেয়াদ অবসান বা মেয়াদ অবসান ছাড়া অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান প্রণয়ন করেন।
৫ম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থা বহাল ছিল। কিন্তু সংবিধানের বিধিবিধানের আলোকে তখন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হলে জাতীয় পার্টির প্রধান এইচএম এরশাদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল থাকায় আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ও বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া সমঝোতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি সরকারব্যবস্থা থেকে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে এরশাদের পদত্যাগ-পরবর্তী কী পদ্ধতিতে সরকার গঠিত হবে, সেটি বড় দুটি দলের নেত্রীদ্বয়ের সমঝোতার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়েছিল। আমাদের জাতীয় জীবনে বড় দুটি দলের নেত্রীদ্বয়ের জাতির সন্ধিক্ষণে সমঝোতায় উপনীত হওয়া জাতির জন্য কল্যাণকর ও মঙ্গলজনক।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ৭ম, ৮ম ও ৯ম সংসদ নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ৫ম সংসদ নির্বাচন তুলনামূলক বিচারে নিরপেক্ষ হলেও দুঃখজনকভাবে বিজিত দলের কাছে সে নিরপেক্ষতা গ্রহণযোগ্য হয়নি। উপরোক্ত ৪টি সংসদ নির্বাচনে বড় দুটি রাজনৈতিক দল দু’বার বিজয়ী ও দু’বার বিজিত হয়।
জনআকাক্সক্ষার প্রতিফলনে একতরফাভাবে প্রবর্তিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা জনআকাক্সক্ষার বিপরীতে একতরফাভাবে বাতিল হয়। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যে এখনও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার পক্ষে এবং এ নিয়ে গণভোটের আয়োজন করা হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের অবস্থান যে এর পক্ষে হবে- এ বিষয়ে দেশের সচেতন জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোনো সংশয় নেই। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন সাধারণ নির্বাচন অবলোকনের পর সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশবাসীর মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত শুধু আমাদের দেশের ক্ষেত্রে নয়, অনেক সময় উন্নত দেশের ক্ষেত্রেও সম্ভব হয় না। উদাহরণস্বরূপ, ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলীয় প্রার্থী আল গোরের কাছে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী জর্জ ডব্লিউ বুশ পপুলার ভোটে পরাজিত হলেও দেখা গেল বুশের ভাই ফ্লোরিডার গভর্নর হওয়ার সুবাদে সেই অঙ্গরাজ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে প্রদত্ত ভোট অবৈধভাবে হেরফের করে ইলেকটোরাল কলেজের ২৫টি ভোট রিপাবলিকানদের অনুকূলে নিয়ে আসতে সমর্থ হন। এ কারসাজির ফলে ইলেকটোরাল কলেজের ৫ ভোটের স্বল্প ব্যবধানে আল গোর পরাজিত হন। তার ইলেকটোরাল কলেজের ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬৬ এবং বুশের ২৭১। ফ্লোরিডার ইলেকটোরাল কলেজের ২৫টি ভোট আল গোরের অনুকূলে গেলে তার ভোটের সংখ্যা হতো ২৯১। অপরদিকে বুশের ইলেকটোরাল কলেজের ভোটের সংখ্যা হতো ২৪৬। সে সময় ফেডারেল বিচারকদের বেশিরভাগ রিপাবলিকানদের আনুকূল্যে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় বিচার বিভাগের দ্বারস্থ হয়েও আল গোর সুবিচার পেতে ব্যর্থ হন।
আমাদের সংবিধানের বর্তমান বিধান অনুযায়ী, মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ বহাল রেখে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। সংবিধানে এ ব্যবস্থাটি পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে একতরফাভাবে প্রবর্তিত হয় এবং ওই সংশোধনীর মাধ্যমে একতরফাভাবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অবসান ঘটানো হয়। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। এমনকি তারা স্পিকার ও রাষ্ট্রপতি দলীয় ব্যক্তি বিধায় উভয়ের যে কারও নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণে অপারগ। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একটি সমঝোতায় উপনীত না হলে সংঘাত ও বিপর্যয়ের আভাস পাওয়া যায়। সংঘাত ও বিপর্যয় হলে জনশৃংখলা ও দেশের স্থিতিশীলতা ব্যাহত হবে- এ উপলব্ধি থেকে দেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যক্তিবর্গ এবং সুশীল সমাজ অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এ ধরনের উদ্বিগ্নতা ঢাকায় কর্মরত উন্নয়নশীল দেশের কূটনীতিক ও জাতিসংঘ মহাসচিবের মধ্যেও দেখা গেছে।
এ উদ্বিগ্নতার অংশ হিসেবে সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফোনালাপ করে উভয়কে দেশের ভবিষ্যৎ ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মাধ্যমে সমঝোতায় উপনীত হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। অনুরোধ-পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংসদে যোগ দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপি প্রস্তাব দিলে স্বাগত জানাব।’ অপরদিকে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘সংলাপ কিংবা আলোচনায় রাজি, তবে আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন নয়।’ প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার প্রতিক্রিয়া থেকে অনুধাবন করা যায়, আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসে সমঝোতায় উপনীত হওয়ার পথ এখনও অনেক দূরে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের ফোনালাপের আগে জাতিসংঘের একজন দূত এসে দুটি বৃহৎ দলের মধ্যে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থা নিয়ে সমঝোতার উদ্যোগ নিলেও তা ব্যর্থ হয়। জাতিসংঘ থেকে অপর একটি প্রতিনিধি দল উভয় দলের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নিয়ে আগামীতে আবার ঢাকায় আসবেন, জাতিসংঘের সদর দফতর থেকে এমনটিই ব্যক্ত করা হয়েছে। ইত্যাবসরে উভয় দলের সমঝোতা বিষয়ে প্রভাবশালী দেশ বিশেষত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্যোগ লক্ষণীয়। তাছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উভয় নেত্রীর বরাবরে প্রদত্ত চিঠি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের দূতিয়ালীর সাফল্য বিষয়ে আগের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশবাসী সন্দিহান। আর জাতিসংঘ সদর দফতরে সাধারণ অধিবেশনের সময় উভয় নেত্রীর আলোচনায় বসার যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল তাও সফলতা পায়নি। আমাদের নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে বিদেশীদের যে কোনো ধরনের মধ্যস্থতা আমাদের আত্মমর্যাদার জন্য হানিকর। এ ধরনের মধ্যস্থতা এর আগে কখনও সফলতা পায়নি। বর্তমানেও যে সফলতা পাবে, সে নিশ্চয়তা নেই। তাই নিজ ও দলের স্বার্থ পরিহার করে ১৯৯৬ সালে যেমন বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া একতরফাভাবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে সংঘাতের পথ পরিহার করে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা বিষয়ে মীমাংসায় উপনীত হয়েছিলেন, ঠিক তেমনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীরও উচিত হবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে একতরফাভাবে নির্বাচনকালীন এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা তুলে ধরা, যা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এবং দলের ওপর বিএনপিপ্রধানের মতো আওয়ামী লীগপ্রধানের একক নেতৃত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত থাকায় বর্তমান বাস্তবতায় সংবিধান সংশোধন করে হলেও গ্রহণযোগ্য অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা দিয়ে তিনি সংকট নিরসন করতে পারেন। আর আমাদের সংকটে বিদেশীরা যে উদ্বিগ্ন তাতে আমরা আশান্বিত। তবে অতীতে যেমন তাদের উদ্যোগ বিফল হয়েছে, বর্তমানেও তা বিফল হবে- এমন আশংকায় আমাদের সে আশা হয় তিরোহিত। এ বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী স্ব-উপলব্ধি থেকে জাতীয় স্বার্থে গ্রহণযোগ্য সমঝোতার পথ প্রশস্ত করলে তা হবে তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচায়ক ।
ইকতেদার আহমেদ : সাবেক জজ ও কলামিস্ট

No comments

Powered by Blogger.