গোলাম আযমের মামলার রায়ের পর সহিংস প্রতিক্রিয়া!

আজ রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে এ হরতাল দেওয়া হয়।
এর আগে জামায়াতের ডাকা অন্যান্য হরতালের আগের দিন থেকেই রাজধানীতে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল শনিবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগের মতো সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
দলের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়কেন্দ্রিক মারমুখী প্রতিক্রিয়া দেখানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে না জামায়াত। তবে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের আদেশের পর তেমন মারমুখী না হয়ে সাধারণ প্রতিক্রিয়া জানানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে। দলটি মনে করে, চলতি মাসে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে। ওই রায়ের পর সারা দেশে একযোগে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে কামারুজ্জামানের রায়ের পর গতকাল পর্যন্ত জামায়াত চুপচাপ থাকার কারণ হিসেবে দলটির আরেকটি সূত্র জানায়, ৫ মে রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচি ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে শক্তি প্রয়োগ করেছে, তাতে জামায়াতের তরুণ নেতা-কর্মীদের মনেও কিছুটা ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এ কারণে কামারুজ্জামনের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে দুই দিন পর হরতাল দেওয়া হয়।
জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর কমিটির সহকারী সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, জামায়াতের কর্মীরা হেফাজতের ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও উজ্জীবিত হবেন। কারণ হেফাজতে ইসলাম আর জামায়াত এক জিনিস না। হেফাজত অরাজনৈতিক সংগঠন, তাঁরা সরকার পতনের জন্য আন্দোলন করেনি।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ৫ ফেব্রুয়ারি দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৮ ফেব্রুয়ারি নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এ দুই মামলার রায় ঘোষণার আগে ও পরে হরতাল ডেকে সারা দেশে সহিংসতা চালায় জামায়াত-শিবির।
তিন জেলা হরতালের আওতামুক্ত: প্রথম আলোর ফেনীর  নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, শ্রীশ্রী ঠাকুর রামচন্দ্র দেবের তিরোভাব (রামঠাকুর) উৎসব কমিটির অনুরোধে তিন জেলা ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরকে হরতালের আওতামুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াত।
নোয়াখালীর চৌমুহনীতে অবস্থিত শ্রীশ্রী ঠাকুর রামচন্দ্র দেবের সমাধিক্ষেত্রে ৬৩ বছর ধরে তিরোভাব দিবসে উৎসব পালিত হয়ে আসছে। গতকাল বিকেল থেকে চার দিনের এ উৎসব শুরু হয়েছে। শেষ হবে  আগামী মঙ্গলবার।
উৎসব কমিটির সম্পাদক তপন রায় চৌধুরী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, জামায়াতে ইসলামীকে চিঠি দিয়ে হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ করার কথা নিশ্চিত করেন।
ঠাকুর রামচন্দ্রদেব উৎসব কমিটির চিঠি পাওয়ার পর জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটি ও তিন জেলার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই তিন জেলাকে হরতালের আওতামুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর ফেনী জেলা কমিটির সেক্রেটারি এ কে এম সামছুদ্দিন।

No comments

Powered by Blogger.