দায়িত্ব-জ্ঞানহীন হরতালে বিপর্যস্ত অর্থনীতি, সর্বত্র হতাশা

একের পর এক দায়িত্বজ্ঞানহীন হরতালে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। বিভিন্ন সময়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হরতাল বিষয়ক খবর, ইউএনডিপির প্রতিবেদন ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের বক্তব্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে,
এক দিনের হরতালেই গড়ে জিডিপির সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হচ্ছে।

আর এই ক্ষতির খাঁড়ায় পড়ে খাবি খাচ্ছেন শিল্পপতি থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ও খুচরা ব্যবসায়ী পর্যন্ত। ক্ষেতে আর আড়তে কাঁচামাল পচছে কৃষকের। উপোস থাকছে কাজের অভাবে অলস বসে থাকা দিনমজুর, শ্রমিক। কমে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। বাজার হারাচ্ছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য।

হরতালের দিন বাংলাদেশে এসে এয়ারপোর্ট থেকে বায়ারদের ফিরে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। হরতালের প্রভাব পড়ছে শিক্ষাঙ্গণ আর শিক্ষাজীবনেও।

আর এতো সব ক্ষয়ক্ষতির সামনে দাঁড়িয়ে হরতাল সফল হয়েছে বলে আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে বিরোধী দল।

এমন পরিস্থিতিতিতে তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে হরতালের বিকল্প খোঁজার আবহান জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। ব্যবসায়ীরা তুলছেন ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি। নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষাজীবনের নিশ্চয়তা চাইছেন শিক্ষার্থীরা।

এমনকি এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে হরতাল বন্ধে আইন প্রণয়নের দাবিও উঠেছে।
kachamal
অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের সঙ্গে ‍গাঁটছড়া বাঁধা বিএনপি, ধর্মাশ্রয়ী হেফাজত ও ইসলামী সমমনা দল এবং কখনো কখনো সরকার সমর্থক অনেক সংগঠনও এখন হরতালকে রাজনৈতিক আন্দোলনের মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে নিয়েছে।

তাই কপাল পুড়ছে আম পাবলিকের। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।

প্রতি হরতালে কেবল পরিবহন খাতেই প্রায় পৌনে এক কোটি মানুষ ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। বেড়ে যাচ্ছে দ্রব্যমূল্য। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ছোটবড় প্রায় ৩ কোটি ব্যবসায়ী।

টানা হরতালে বিদেশি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়ে অন্যদেশমুখী হচ্ছেন। কমে যাচ্ছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যও নেমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে। কমে যাচ্ছে সরকারি ব্যাংক, বীমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেন। ব্যহত হচ্ছে শেয়ারবাজারের বেচাকেনা। লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আর জনদুর্ভোগের তো অন্ত থাকছে না।

ইউএনডিপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিটি হরতালে গড়ে ৫ হাজার ৫শ’ ৪৬ কোটি টাকা ক্ষতি হয় জিডিপির।

অপর এক হিসেবে প্রতিটি হরতালে দেশের মোট অর্থনীতির অন্তত ২০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়া আমদানি-রপ্তানিতেও অন্তত ১০ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাচ্ছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। অপরদিকে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে প্রায় ১০ শতাংশ।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের হিসেবে- দেশে বাস, মিনিবাস, ট্রাক ও মোটরগাড়িসহ ৯ প্রকারের প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ যান্ত্রিক বাহন চলাচল করে। এর মধ্যে ঢাকা নগরীতেই চলছে অন্তত সোয়া পাঁচ লাখ গাড়ি। এসব পরিবহনের প্রায় ২০ লাখ মালিক ও শ্রমিক রয়েছেন। আর তাদের ওপর নির্ভরশীর জনগোষ্ঠী মিলিয়ে প্রায় পৌনে এক কোটি মানুষ হরতালে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

গাবতলীর শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার বরুণ রায় হরতাল প্রসঙ্গে বলেন, “কিন্ত হরতাল চলাকালে প্রতিদিনের ৩শ’ টাকা আয় থেকে আমরা বঞ্চিত হই।”

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বাংলানিউজকে বলেন, “হরতাল পালন করতে করতে বেহুঁশ হয়ে গেলাম। গণতান্ত্রিক অধিকার হিসাবে হরতালের প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ ছিল এখন তা উঠে গেছে।”

truckতিনি বলেন, “হরতালের কারণে একদিকে যেমন মালিক পক্ষ তাদের ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না, তেমনিভাবে শ্রমিকরা হরতালের সময় কোনো বেতন ভাতা পাচ্ছে না। এতে তাদের সংসার চলছে না। স্কুলগামী ছেলে মেয়েদের বেতন ভাতাও পরিশোধ করতে পারছে না তারা।”

যশোরের ট্রাক চালক আমিরুল বাংলানিউজকে বলেন, “আমরা হরতালে রাস্তায় গাড়ি বের করতে ভয় পাই। কারণ ২০ হাজার টাকার ভাড়ার চেয়ে ৩০ লাখ টাকার ট্রাক আমার কাছে বড়।”

যশোর থেকে ঢাকা পর্যন্ত বড় কার্ভাড ভ্যান ও ট্রাকের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা। কিন্ত হরতালে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বেড়ে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ভাড়া গুণতে হয় ব্যবসায়ীদের।

এর ফলে বেড়ে যায় দ্রব্যমূল্য।

নগরীর পাইকারি ডালের বাজার চকবাজারে গিয়ে দেখা যায়, হরতালের কারণে ডাল ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। তারা হরতালের কারণে চট্রগ্রাম থেকে বেশি দামে ট্রাক ভাড়া দিয় পণ্য নিয়ে আসছেন। তাই নেপাল ও অস্ট্রেলিয়ার বাজারে ডালের দাম কমলেও পাইকারি বিক্রেতারা বেশি দামে ডাল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

বাংলাদেশ পাইকারি ডাল বিক্রেতা মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক সালামত হোসেন লিপু বাংলানিউজকে বলেন, “অস্ট্রেলিয়া থেকে ছোলা কম দামে কিনলেও সেই অনুযায়ী বিক্রি করতে পারছি না। হরতালের কারণে ট্রাক ভাড়ায় সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। চট্রগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ট্রাকের ভাড়া ছিল ১৫ হাজার টাকা, তা এখন দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার টাকায়। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকতে হবে।”

একের পর এক হরতালের কারণে ওষুধ ব্যাবসায়ীরাও পড়েছেন বিপাকে।

আজিমপুরের ভাই ভাই ড্রাগসের মালিক আলামিন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, “অন্যান্য দিন ওষুধ বিক্রি করি দেড় হাজার টাকার। হরতালের সময় ৫শ’ টাকার বেচাকেনা করতে হিমশিম খেতে হয়।আমরা হরতাল চাই না, আমরা শান্তি চাই।”

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইনসেপটা ভ্যাকসিন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির বাংলানিউজকে বলেন, “আমরা হরতাল চাই না। আমরা ব্যবসাবান্ধব বাংলাদেশ চাই। হরতালের কারণে আমরা কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। পাহাড় সমান ব্যাংক ঋণ পরিষোধ করতে পারছি না। তাই সরকারি ও বিরোধী দলের কাছে আমাদের অনুরোধ এই শিল্পকে আপনারা বাঁচান। আপনাদের সহযোগিতা পেলে পৃথিবীর অন্যতম ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারব।”

একের পর এক হরতালে দেশের শিক্ষাখাতের অবস্থাও বেশ নাজুক। হরতালের কারণে দফায় দফায় পিছিয়ে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সময় নিয়ে কোনরকমে শেষ করে আনা হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা। এখন হরতালের কারণে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। মঙ্গল ও বুধবারের হরতালের দিনও পরীক্ষা ছিলো তাদের।

ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরিক্ষার্থী নুসরাত জাহান সাদিয়া বাংলানিউজকে বলেন, “পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা যদি বন্ধ হয় তবে মনোবল ভেঙে যায়।তাই রাজনৈতিক দলের কাছে দাবি, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর যেন তারা হরতাল দেন।”
হরতালের ফলে পরিবহন খরচ বাড়ে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে নিত্যপণ্যের দামও। যা পরিশোধ করতে হয় সাধারণ ক্রেতা ও বিক্রেতাদের। এর ফলে ক্রেতারা যেমন বাড়তি দামে পণ্য কেনে তেমনি বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি না করতে পেরে বিপাকে পড়ে বিক্রেতারাও। অপর দিকে বাড়তি পরিবহন খরচ ও কৃষি পণ্যের দামদরে সমন্বয়হীনতার কারণে চাষিরা জমিতেই নষ্ট করে কৃষি পণ্য।
সার্বিক বাজারব্যাবস্থা নিয়ে কথা হয় এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি  হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন,“ আমরা বার বার বলছি দুই দলকে আলাপ আলোচনা করে একটা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে। আমরা হরতালে শেষ হয়ে যাচ্ছি।”bus-fire-sm

দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)  সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, “আমরা সবসময় চেষ্টা করছি হরতালের বিকল্প বের করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত করতে । হরতালে দেশের অর্থনীতি ও মানুষের কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা কোনোভাবেই হরতাল চাই না। আমাদের অনুরোধ হরতাল প্রত্যাহার করা হোক।”

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন বলেন, “সব ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাজনীতিবিদরা যদি দেশের ভালো চান তাহলে হরতাল সমর্থন করেন কিভাবে? এর সমাধান বের করতে হবে নেতাদেরকেই।”
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) এস এম মান্নান কচি বাংলানিউজকে বলেন,  “আগামীকাল (মঙ্গলবার) বেলা ১ টায় বিজিএমইএ এ ব্যপারে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে। আমরা কোনভোবেই হরতাল চাই না। কারণ আগের মতো হরতালের চরিত্র  নেই। হরতালে ক্রেতারা আসতে চাচ্ছে না।”

তিনি বলেন, “আমাদের পোষাক সেক্টর এভাবে বিশাল সমস্যায় পড়েছে। হরতালের কারণে প্রতিবছরের সিজনের অর্ডার কম হচ্ছে। কারণ বিদেশি বায়াররা শংকিত ও চিহ্নিত ।  তারা বাংলাদেশ বিমুখ হয়ে অন্য দেশে  অর্ডার দিচ্ছে। এমনকি দু’একজন বায়ার এয়ারপোর্টে এসে ফিরেও গেছেন।”

বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি প্রকৌশলী রাফেজ আলম চৌধুরী বলেন, “অবস্থা খুবই খারাপ। জাতীয় অর্থনীতি, বিশেষ করে পোশাক শিল্পের ক্রমাগত সাফল্য ধরে রাখার স্বার্থে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে হরতাল পরিহার করতে হবে। এরই মধ্যে ঘন ঘন হরতাল আহ্বান করায় পোশাক শিল্পে অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে।”

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, “বারবার ব্যবসায়ীরা অনুরোধ জানাচ্ছে হরতাল না দেওয়ার। কিন্ত হরতাল হচ্ছেই। সেব সমস্যার সমাধান আছে। রাজেনৈতিক ও আইনগতভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়। আমি অনুরোধ করবো হরতালের বিকল্প কিছু বের করুন।”

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এ ধরনের সহিংসতা অব্যাহত থাকলে দেশ চরম সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাবে।”bus-fire-sm

তিনি বলেন, “চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় পবিত্রস্থান ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি গভীর সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এতে দেশে বীমা, ব্যবসা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেননা বীমা কোম্পানিগুলোকে বীমার আওতাধীন যানবাহন ও সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির বীমা দাবি পরিশোধ করতে হয়। ধারাবাহিক হরতাল দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ব্যাপকভাবে নিরুৎসাহিত করছে।”

অ্যাডভোকেট সম রেজাউল করীম বলেন, “হরতাল রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হলেও সর্বশেষ অস্ত্র হিসাবে হরতাল আহ্বান করা যেতে পারে। কিন্তু জনগণের স্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থে নয়, শুধু দলীয় নেতাদের মুক্তি বা দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য হরতাল আহ্বান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর ফলে দেশের অর্থনীতি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থা বিপন্ন হচ্ছে। বিচারপ্রার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। দেশে অস্থীতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে এই হরতাল দেশের কল্যাণ বয়ে না এনে অকল্যাণই হচ্ছে। এরকম অকল্যাণকর হরতাল আহ্বান থেকে হরতালকারীদের বেরিয়ে আসা উচিৎ।”
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান বলেন, এভাবে একের পর এক হরতালে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এর একটা সমাধান বের করা দরকার। আমরা আশা করি বিরোধী দল ও সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “এটা আমাদের রাজনীতির সংস্কৃতির মধ্যে ঢুকে গেছে। গণতন্ত্র হয়ে পড়েছে নির্বাচন কেন্দ্রিক। যখন যে দল বিরোধী পক্ষে থাকে সেই দলের কর্মীদের চাঙা রাখার জন্য রাজপথ উত্তপ্ত করার মানসিকতা গড়ে ওঠে।  হরতাল ডেকে আগের দিন গাড়ি ভাঙচুর করে, যাতে পরের দিন হরতালে আর কেউ গাড়ি বের না করে।”
তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনের পদ্ধতি ঠিক করে বিরোধী দল ও সরকার উভয়কেই একটা সমঝোতায় আসা উচিত, যাতে জনগণের এ ধরনের ভোগান্তি সৃষ্টি না হয়।”
প্রতিবেদকঃ শামীম খান, খুররম জামান, মনোয়ারুল ইসলাম, জেবুননেসা আলো, মফিজুল সাদিক
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

No comments

Powered by Blogger.