জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ-কাচিনে হামলার কথা স্বীকার করল মিয়ানমার সরকার

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলার কথা স্বীকার করেছে সরকার। তথ্য মন্ত্রণালয় গত বুধবার জানায়, সামরিক রসদ সরবরাহ পথ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করায় বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।
মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বার্মিজ ভাষার খবরের ওয়েবসাইট মিয়াওয়াদি জানিয়েছে, গত ৩০ ডিসেম্বর বিদ্রোহী সংগঠন কাচিন স্বাধীনতা সংস্থার (কেআইও) সামরিক শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি বিমান হামলা চালিয়ে দখল করেছে সামরিক বাহিনী। পাঁচ দিন ধরে এই হামলা চলছে বলে জানা গেছে। কেআইওর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপপ্রধান জেমস লুম দাও বলেন, গত সপ্তাহ থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষ জোরদার হয়েছে। তিনি দাবি করেন, 'আগে তারা (সামরিক বাহিনী) হামলার জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করত। এখন যুদ্ধবিমান দিয়ে রকেট ও বোমা ফেলছে।'
তবে এর আগে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পরিচালক জ হাতায় বিমান হামলার কথা স্বীকার করেননি। কিন্তু বিবিসি ফ্রি বার্মা রেঞ্জার নামের একটি মানবিক সাহায্য সংগঠনের ধারণ করা ভিডিওচিত্র দেখিয়ে জানায়, কাচিন বিদ্রোহীদের ওপর সামরিক বাহিনী বিমান হামলা চালাচ্ছে। এরপর বুধবার হামলার বিষয়টি স্বীকার করে মিয়ানমার। তবে ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এ খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। তাঁর মুখপাত্র এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টরিয়া নুল্যান্ড গত বুধবার সংলাপের মাধ্যমে মিয়ানমার সরকার ও কেআইওর মধ্যকার বিরোধ নিরসনের আহ্বান জানান।
প্রায় ১৭ বছর অস্ত্রবিরতির পর ২০১১ সালে সেনাবাহিনীর সঙ্গে নতুন করে লড়াই শুরু করে কাচিন বিদ্রোহীরা। সংঘর্ষের কারণে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালায়। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে মূলত স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু করে কেআইও। তবে পরে সেখান থেকে সরে এসে তারা স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.