দিল্লিতে বাসে গণধর্ষণ-আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ

দিল্লিতে বাসে গণধর্ষণে জড়িত অভিযোগে আটক ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। গত ১৬ ডিসেম্বর এ গণধর্ষণের শিকার ২৩ বছরের তরুণী ২৯ ডিসেম্বর মারা যান।
এ ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দাবি উঠেছে ধর্ষণকারীদের কঠোর শাস্তিসহ নারীদের সুরক্ষায় শক্তিশালী আইন প্রণয়নের।
নয়াদিল্লির সাকেতের মহানগর হাকিম আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল হাজার পাতার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আগামীকাল শনিবার অভিযোগপত্রটি দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হবে। এ মামলার বিচারকাজ তাড়াতাড়ি শেষ করতে গত বুধবার একটি দ্রুত বিচার আদালত গঠন করা হয়েছে।
মামলা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবির গত বুধবার বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার দ্রুত শেষ করা উচিত। তবে তাদের পক্ষে ন্যায়বিচারও যাতে নিশ্চিত হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। সাকেত আদালতের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ মামলায় তাঁরা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পক্ষে কেউ আদালতে দাঁড়াবেন না। সে ক্ষেত্রে আদালত নিজে থেকেই বিবাদীদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জিনিউজ জানিয়েছে, এ মামলার পুরো বিচারকাজ গোপনে শেষ করা হবে। বিচার চলার সময় সাধারণ মানুষকে আদালত চত্বরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
পুলিশের অভিযোগপত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় মোট সাত দফা অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যাসহ অপহরণ, দলগতভাবে ধর্ষণ, পাশবিক নির্যাতন, ডাকাতি, আলামত নষ্ট ও অপরাধ সংগঠনের উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র। অভিযুক্ত ষষ্ঠজনের বয়স ১৭ দাবি করায় তাকে কিশোরদের বিচারে গঠিত আদালতে তোলা হবে। তবে হাড়ের গঠন পরীক্ষার (বোন টেস্ট) মাধ্যমে তার সঠিক বয়স জানতে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। গণধর্ষণের এ ঘটনায় তিনটি আলাদা কমিশন গঠন করেছে সরকার। এর মধ্যে একটি কমিশন ধর্ষণবিরোধী বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে কঠোর করার কাজ করছে।
এদিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে গত বুধবার রাতে আসাম রাজ্যের এক কংগ্রেস নেতাকে ধোলাই দিয়েছে জনতা। বোড়োল্যান্ড আঞ্চলিক কাউন্সিলের ওই নেতার নাম বিক্রমাসিং ব্রহ্মা। ওই এলাকার সালবাড়ি গ্রামে এক নারীকে তিনি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ অভিযোগে তাঁকে মারধরের পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে এলাকাবাসী।
কালো দিবস পালন : দিল্লির যন্তরমন্তরের সামনে গতকাল কালো দিবস পালন করেছে বিক্ষোভকারীরা। ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে সেখানে টানা বিক্ষোভ চলছে। গতকালও তীব্র শীত উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা সেখানে অবস্থান করে। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই কলেজছাত্র। সূত্র : এনডিটিভি, এএফপি।

* এ মামলার বিচার দ্রুত শেষ করা উচিত- প্রধান বিচারপতি
* অভিযুক্তদের পক্ষে আদালতে দাঁড়াবেন না আইনজীবীরা
* বিচারকাজ দেখতে পারবে না সাধারণ মানুষ

No comments

Powered by Blogger.