ফের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে মুবারককে

মিসরের ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক হোসনি মুবারক তাঁর বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠা গণবিক্ষোভ সরাসরি টেলিভিশনে দেখেছেন। বিক্ষোভ চলার সময় রাজধানী কায়রোর তাহরির স্কয়ার ও আশপাশের এলাকায় গোপনে অনেক ক্যামেরা বসানো হয়েছিল।
গত জুনে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির গঠিত তদন্ত কমিশন এর সত্যতা পেয়েছে। ফলে মুবারকের বিচার নতুন করে শুরু হতে পারে।
৭০০ পাতার তদন্ত প্রতিবেদনটি গত বুধবার প্রেসিডেন্ট মুরসিকে দেওয়া হয়েছে। গণবিক্ষোভের ব্যাপারে অন্ধকারে ছিলেন বলে ইতিমধ্যে আদালতে দাবি করেছেন মুবারক।
২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি ফসহপা মুবারকবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৮ দিন ধরে চলা ওই বিক্ষোভে প্রায় ৯০০ মানুষ মারা যায়। এই প্রাণহানি ঠেকাতে না পারার ব্যর্থতার দায়ে ইতিমধ্যে অভিযুক্ত হয়েছেন মুরারক (৮৪)। এর দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে তাঁর। বিক্ষোভের মুখে ওই বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন তিন দশকের এই শাসক।
কমিশনের সদস্য আইনজীবী আহমেদ রাঘিব জানান, তাহরির স্কয়ারে বসানো ক্যামেরাগুলোর সঙ্গে মুবারকের প্রাসাদের সংযোগ ছিল। ফলে গণবিক্ষোভ ও তা দমনে সরকারি বাহিনীর ভূমিকা সরাসরি দেখেছেন মুবারক। এ জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। বার্তা সংস্থা এপিকে তিনি বলেন, 'বিক্ষোভ দমনে অপরাধমূলক যেসব ব্যবস্থা হয়েছে, সব জানতেন মুবারক। তিনি বিক্ষোভের ঘটনা সরাসরি দেখেছেন। ফলে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি বাহিনীর সহিংস আচরণের দায় মুবারকের ওপর বর্তায়।' রাঘিব জানান, বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে সরকারি বাহিনীর সদস্যদের সরাসরি গুলি চালানোর ব্যাপারটি মুবারক আদালতে বারবার অস্বীকার করেছেন। অথচ বেশ কয়েকটি মরদেহে গুলি পাওয়া যায়।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় মুরসি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মুবারক ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত করবেন তিনি। নতুন কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে নতুন করে বিচারও শুরু করা হবে। সে অনুযায়ী, ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই মুবারকের বিরুদ্ধে নতুন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেবেন মুরসি।
আইনজীবী খালেদ আবু বকর জানান, সরাসরি বিক্ষোভ দেখার ব্যাপারটি প্রতিষ্ঠা করা গেলে মুবারকের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ আনা যেতে পারে। 'পুনরায় বিচার হলে তাঁর কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়তে পারে। অথবা কারাদণ্ডের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।'
মুবারক আদালতে দাবি করেছিলেন, বিক্ষোভের ব্যাপারে উপদেষ্টারা তাঁর কাছে সত্য গোপন করেছিলেন। তাঁকে সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি। ফলে প্রাণহানির সঙ্গে মুবারকের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়নি। এতে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে মানুষের মনে। সূত্র : টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.