সাদাকালো-কী এক উদ্ভট সমাজে বাস করছি আমরা by আহমদ রফিক

গতকাল বিশেষ কাজে এক অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে দুজন মধ্যবয়সী মানুষ কথা বলছিলেন? একজনের প্রবল আক্ষেপোক্তি : 'দ্যাখেন তো কী অবস্থার মধ্যে আছি! কাগজ পড়ারও জো নাই। কেবল দুঃসংবাদ আর দুঃসংবাদ।'
দুঃসংবাদ বলতে তিনি যেসব সংবাদের কথা বলেছেন তাঁর ভাষায় তা হল- খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, ঘুষ, দুর্নীতি, জবরদখল ও প্রতারণার মতো ঘটনাবলি। ব্যাংকও এ আলোচনা থেকে বাদ পড়েনি। দ্বিতীয়জন তাঁর বক্তব্যে সোৎসাহে সায় দিয়ে টেবিলের ওপর পড়ে থাকা একটি সংবাদপত্রের বিশেষ একটি খবরের দিকে আঙুল তুলে আলোচনা জমজমাট করে তোলেন।
এমন অভিজ্ঞতা হরহামেশার। আজকের নয়, অনেক দিনের। দিন যাচ্ছে ঠিকই; কিন্তু আমাদের সমাজ এগোচ্ছে না। সে ক্রমাগত পেছন দিকে হাঁটছে। আগে সমাজের পিছু হটা বলতে অনেকে অর্থনৈতিক সূচকগুলোকে বিবেচনায় নিতেন। অর্থাৎ সামাজিক উন্নতি বলতে অর্থনৈতিক নিরিখটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হতো। অবশ্য সেই সঙ্গে বড়সড় সামাজিক অঘটন- হোক তা দুর্নীতি বা অমানবিক, নৃশংস ঘটনাদিও হিসাবে এসেছে।
এখন শেষোক্ত বিষয়গুলো নিয়মিত ঘটনা তথা ডালভাতের মতো প্রাত্যহিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার সামনে একটি দৈনিক পত্রিকা- তাতে মোটা মোটা অক্ষরে শিরোনাম- 'এক লাখ গাছ কেটে বন দখল'। এরপর ওই খবরের বিস্তারিত বিবরণ পড়তে ইচ্ছা করে? এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, অর্থাৎ বীভৎস রকমের খবর ছোট করে, চার কলামের বদলে ডাবল কলামে 'গৃহকর্মীর গায়ে আগুন/বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু'। কী মর্মান্তিক! কিন্তু গৃহকর্মী বলে কথা। হয়তো তাই ওই বীভৎস ঘটনার জন্য সাদামাটা ব্যবস্থা। অবশ্য শিরোনাম বেশ মোটা অক্ষরে। এ খবরটির বিশদ পড়তে গেলে আপনি শিউরে উঠবেন ঘটনার নির্মমতায়।
আমাদের সমাজে শিক্ষিত শ্রেণীতেও মানবিক চেতনা, মূল্যবোধ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, এন্তার এ-জাতীয় খবর তেমন দিকনির্দেশই দেয়। এর পরও ওই একই কাগজে রয়েছে একাধিক দুঃসংবাদ- হ্যাঁ দুঃসংবাদ বলাই ভালো, অপারেশন দুর্ঘটনা, চেয়ারম্যান অপহরণ, বাঁধ দখল ইত্যাদি। একই দিনের অন্য একটি কাগজে রয়েছে এসিড সন্ত্রাসের ভয়াবহতা এবং শ্রমিক নেতার নিহত হওয়ার ঘটনা। আছে দুই সন্তানকে মায়ের বিষ পান করানো, চিকিৎসক হত্যার বিস্তারিত বিবরণ, একাধিক লাশ উদ্ধারের টুকিটাকি ঘটনা। নির্মোহ সাংবাদিকের কাছে যা টুকিটাকি, যার ক্ষতি তার বা তাদের কাছে তো এসব খুবই বড় ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা- কখনো তা এমন যে এর ক্ষতি পূরণ হয় না।
তৃতীয় পত্রিকাটি থেকে আর খবর উদ্ধার করছি না- দুটোই যথেষ্ট। দুদিন আগের একটি কাগজেই দেখেছি এই দুই-দুখানার যোগফলের মতো ঘটনা। এই তো আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের করুণ মৃত্যু বাসের ধাক্কায়। এই নিয়ে শাহবাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কজন ছাত্রছাত্রীর প্রাণ গেল- এবং তা মেধাবীদের। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায়, ব্যাপক ভাঙচুরের প্রতিক্রিয়ায় অনেক লেখালেখি হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। বাস ড্রাইভার বরাবরের মতো হয় বেপরোয়া, আর হয় দায়িত্বজ্ঞানহীন। ট্রিগার-হ্যাপি জওয়ানের মতো স্টিয়ারিং-হ্যাপি চালক প্রাণ নিতে কসুর করে না।
প্রসঙ্গত একটি বিষয় লক্ষ করার মতো, ঘটনাগুলো সামাজিক অবক্ষয়ের প্রতিফলন, মূল্যবোধের অভাব ও ব্যাপক দুর্নীতির পরিচয় বহন করে এবং তা সমাজের প্রায় প্রতিটি স্তরে, জাতীয় জীবনের প্রায় প্রতিটি খাতে এর বিস্তার। এর মূল চরিত্র লোভ-লালসা, বিকার-বিকৃতি ও অমানবিকতার। বন্ধুস্থানীয় একজন সেদিন বলছিলেন, বাংলাদেশের এক নম্বর সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি- যে জন্য এত সব অঘটন ঘটছে। তবে এ কথাও ঠিক যে সুস্থ সামাজিক মূল্যবোধ, মানবিক মূল্যবোধের এতই অভাব যে ন্যায়-অন্যায়, নীতি-দুর্নীতি হিসাব করার মতো মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। স্বার্থপরতার প্রবল প্রতাপ।
তাই ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে, জায়গা-জমির দখল নিতে, নিজ অধিকারের সীমা বাড়িয়ে নিতে এবং অনুরূপ উদ্দেশ্যে পরিচিত-অপরিচিত, নিকট-দূর বা একান্ত আপনজনকেও ভাড়াটে খুনির সাহায্যে ইহলোক থেকে চিরতরে বিদায় করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বুক কাঁপে না। স্টিয়ারিংয়ে এক হাত রেখে অন্য হাতে সেলফোনে খোশগল্প করতে করতে বা দুই আঙুলের ফাঁকে সিগারেট চেপে যে অন্যমনস্ক চালকের পথচারীকে চাপা দিতে বিবেকে বাধে না, সেই একই মানসিকতায় লিচুবাগানি লিচুতে বিষাক্ত রাসায়নিক ছিটাতে অসুবিধা বোধ করে না, তাতে যে ১৪ জন শিশু বা আর কারো প্রাণ যেতে পারে তেমন ভাবনা তার নেই।
কিন্তু এসবের তুলনায় অনেক বেশি ভয়াবহ চরিত্রের ঘটনাদি হল- খুন, অপহরণ, মাদক ব্যবসা, এসিড-সন্ত্রাস, সামাজিক সন্ত্রাস- যা নৃশংসতার পরিমাপে আর সব অন্যায়কে ছাড়িয়ে যায়। তাই 'সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ে জড়িত চম্পাকে হাসপাতালে হুমকি'- এমন খবর আমাদের পড়তে হয়। হুমকি প্রাণনাশের 'তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায়'।
এ ধরনের খবর একাধিক প্রশ্নের জন্ম দেয়। যেমন- তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী কিভাবে কারাগারের বাইরে থেকে মাদকসাম্রাজ্য চালনায় সাহায্য করতে পারে কিংবা কারাগারে বসে শীর্ষ সন্ত্রাসী কিভাবে সেলফোনের সাহায্যে কাউকে হত্যার পরিকল্পনা ও তা কার্যকর করায় তৎপর হতে পারে? সত্যি মাদক ব্যবসা এমন এক রমরমা অর্থকরী তৎপরতা, যার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে এবং আছে অনেক অপরাধ, অনেক নির্মম হত্যাকাণ্ড। অথচ বাংলাদেশ মাদক-রুট হয়ে ওঠার আগে ভাবাই যেত না যে বাঙালি তরুণ-তরুণী এভাবে মাদকাসক্ত হয়ে নিজের সর্বনাশ নিজে ডেকে আনতে পারে। ভাবাই যায়নি যে সমাজে মাদক ব্যবসা বিশাল অন্ধকার ভুবন তৈরি করতে পারে।
পারে মাদকের টাকার জন্য ছেলে মা বা বাবাকে খুন করতে, পারে স্বামী স্ত্রীকে, বন্ধু বন্ধুকে। আমরা বলে থাকি- এ হচ্ছে এক ভীষণ সামাজিক ব্যাধি। কিন্তু ব্যাধি নিরাময়ের ব্যবস্থা তুলনায় অপ্রতুল। যত দূর মনে পড়ে, ষাটের দশকের শেষদিকে যখন কাগজে লেখালেখি হচ্ছে যে মাদক চালানের রুট পরিবর্তিত হয়েছে, বাংলাদেশ হয়েছে সেই চোরাচালানের অভিশপ্ত অভয়ভূমি, তখন অনেকে এ বিষয়ে লেখায় সতর্ক বাণী উচ্চারণ করেন এই বলে যে আমাদের তরুণ সমাজ এবার গাড়ায় পড়বে। বাস্তবিক তেমনটাই ঘটেছে।
আমাদের তৎকালীন শাসকবর্গ তখন এ বিষয়ে হুঁশিয়ার হয়ে কোনো ধরনের কঠোর প্রতিরোধব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। এর সঙ্গে শুধু অর্থলোভই জড়িত নয়, সংশ্লিষ্ট নানাবিধ যৌথ অপরাধ, হত্যা, ছিনতাই, আরো অনেক কিছু। চম্পা তো গুলিবিদ্ধ হয়েছে, চম্পার মতো অনেকে লাশ হয়েছে এবং সে ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ নেই। গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বিষয়টা কতটা গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে, তা ভাবনার বিষয়।
তবে সামাজিক ব্যাধি হিসেবে নারী নির্যাতন কোনো অংশে ছোট ঘটনা নয়। এর সামাজিক বিস্তার যথেষ্ট ব্যাপক। কয়েক শ বছর আগেকার যৌতুকপ্রথা এখনো সচল- সম্ভবত একটু বেশি করেই সচল। মধ্যবিত্ত থেকে একেবারে নিম্নবিত্ত পরিবারেরও কত তরুণী-গৃহবধূ যে যৌতুকের বলি, তার হিসাব নেওয়ার কথা আমাদের মনে হয়নি। একুশ শতকের আধুনিক যুগেও এর সংহার-ক্ষমতা এতটুকু কমেনি। শহর থেকে গ্রামেগঞ্জে এর বিস্তার। কাগজে আর কত শতাংশ খবর ছাপা হয়। এই যৌতুক নিয়ে এসিড সন্ত্রাস, আগুনে পুড়িয়ে, ফাঁস লাগিয়ে, এমনকি লাঠিপেটা করে কতভাবে যে হত্যাকাণ্ডের মহড়া চলে, তা ভাবলে শিউরে উঠতে হয়।
এ ছাড়া ধর্ষণ, অপহরণ, সীমান্ত পেরিয়ে পাচার, বিয়ের নামে পতিতালয়ে বিক্রি- কতভাবে যে নারী নির্যাতন চলছে, তা কাগজে চোখ বুলাতে গেলে ভাবতে হয়- আমরা সত্যিই সভ্য সমাজে বাস করছি! মানসিক নির্যাতনের কথা না হয় বাদই দিলাম। এ নির্যাতন বা যৌন হয়রানি থেকে স্কুলছাত্রীও রেহাই পায় না। দীর্ঘদিন এ-জাতীয় ঘটনা কাগজে প্রকাশ পাচ্ছে বা জানা যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই পড়তে হয় শ্লীলতাহানি বা যৌন হয়রানির কারণে আত্মঘাতী হয়েছে গৃহবধূ, যুবতী বা তরুণী কিংবা কিশোরী। কিছুদিন আগেও এ-জাতীয় কারণে পরপর কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনা খবর হয়ে উঠেছিল।
আর এ কথাও সত্যি, এ বিষয় নিয়ে লেখালেখি কম হয়নি। সালিশকেন্দ্র বা মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সরব ও তৎপর হতে দেখা গেছে। কিন্তু এ-জাতীয় ঘটনার সংখ্যা খুব একটা কমছে না। দিন কয় আগে একটি দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের একটি হিসাব, যা হয়তো গোটা ছবিটার ভগ্নাংশ মাত্র। কারণ নানা মাত্রিক নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি বা অনাচার রাজধানী বা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। গ্রাম আর সেই আগেকার গ্রাম নেই।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই অর্থাৎ সাত মাসের একটি হিসাবে বলা বাহুল্য পূর্বোক্ত মহিলা পরিষদের- তাতে দেখা যায় যে এ সময়ে 'তিন হাজার ৪১৪ জন নারী ৩৪ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার ৩০২, গণধর্ষণ ৯৭, ধর্ষণের পর হত্যা ৭৬, ধর্ষণের চেষ্টা ৯৭, শ্লীলতাহানি ১২১, যৌতুকের কারণে হত্যা ১৯৭, যৌতুকের কারণে নির্যাতিত ১৬৪, শারীরিকভাবে নির্যাতিত ২৪৩, গৃহপরিচারিকা নির্যাতন ৩১, উত্ত্যক্ত ৪২১ এবং বাল্যবিবাহের শিকার ৪৭ জন।' আমরা আগেই বলেছি, এ সংখ্যা গোটা সমস্যার আভাস মাত্র। ওই যে বলে না- বিশাল ভাসমান বরফের দৃশ্যমান উপরিতল, অনেকটা সে রকম।
এ কথা সত্য যে 'নারী নির্যাতন প্রতিরোধে দরকার সামাজিক সচেতনতা।' শুধু সচেতনতাই যথেষ্ট নয়, দরকার সমাজে সুস্থ মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ, মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে শেখা, নারী-পুরুষকে সমতার ভিত্তিতে গ্রহণ করতে পারার মতো মানসিকতা অর্জন। আরো একটি কথা, 'নারীর ক্ষমতায়ন না হলে সে পুরুষের অধীনস্থ হয়ে থাকবে'- এ কথাও পুরো সত্য নয়। প্রমাণ তো আমাদের চোখের সামনে রয়েছে। মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম লিখেছেন : '২০১১ সালে বাংলাদেশ যে ভয়াবহ পদ্ধতিতে অভাবনীয় নারী ও মেয়ে, শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে' ইত্যাদি। শুধু ২০১১ সালেই নয়, দীর্ঘদিন ধরে এই বাংলাদেশি সমাজে বিভিন্ন বয়সী, বিভিন্ন সামাজিক পরিচয়ের নারী অর্থাৎ কন্যা, বধূ, মাতা পরিচয়ের নারী নানা মাত্রিক নির্যাতনের শিকার। কিশোরী, তরুণী, যুবতী, বয়সী- কেউ বাদ নেই।
আগেই বলেছি, এদের কেউ লজ্জায় আত্মঘাতী হচ্ছে, কারো মুখ, শরীর এসিডে ঝলছে যাচ্ছে, কেউ স্বামী দেবতার আগুনে পুড়ে মরছে, কেউ গ্রাম্য সমাজপতিদের নির্ধারিত দোররার আঘাতে এবং আরো অনেক অশ্লীল পদ্ধতিতে। গত দুই দশকে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন এই অমানুষিক বর্বরতা কতটা কমাতে পেরেছে, আদৌ কমাতে পেরেছি কি? যেমন পুরুষ শাসক, তেমনি নারী শাসক- কারো এ বিষয়ে খুব একটা মাথাব্যথা দেখা গেছে কি? অথচ দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত নানা বয়সী নারীর ওপর নির্যাতনের ঘটনা কম ঘটেনি, এখনো ঘটে চলেছে।
এ জন্য দরকার তাৎক্ষণিক কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা, অপরাধীর কঠোর শাস্তি- যা হবে দৃষ্টান্তমূলক, যা দেখে অন্যরা এ-জাতীয় অপরাধ করতে ভয় পাবে। এ জন্য আইন সংশোধন দরকার, যাতে নামমাত্র শাস্তিতে বা বিনা শাস্তিতে গুরুতর অপরাধের ফয়সালা না হয়। একই সঙ্গে দরকার দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা, অর্থাৎ সামাজিক সচেতনতা তৈরি, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যাতে নিষ্পাপ কিশোরীগুলো লজ্জা-ঘৃণায় আত্মঘাতী না হয়। না হয় অন্যের অপরাধ নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে। তাতে শুধু অপরাধীর মনোবল বাড়ে, সমাজে অপরাধের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশে এই যে সামাজিক ব্যাধিগুলোর এত বাড়বাড়ন্ত- এ দেশের সুশীল সমাজই বা এগুলোর নিরাময়ে বা প্রতিকারে কতটা শ্রম, সময় দিচ্ছে ও সদিচ্ছার পরিচয় রাখছে! একই কথা খাটে শাসনযন্ত্র সম্পর্কে। আর তাই বাংলাদেশি সমাজের শরীরে এই যে নানা ধরনের বিষাক্ত ক্ষত সারিয়ে তোলায় কারো কোনো গরজ নেই। প্রত্যেকের ঝোঁক নৈতিক, অনৈতিক নানা উপায়ে আত্মসমৃদ্ধির প্রকাশ ঘটানো। সামাজিক সমস্যা, সমষ্টিগত সমস্যা- কোনো কিছুতেই তাদের মন নেই! কী এক উদ্ভট সমাজে বাস করছি আমরা!
লেখক : ভাষাসংগ্রামী, কবি, প্রাবন্ধিক

No comments

Powered by Blogger.