অহেতুক অপবাদ বরদাশত করা হবে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘আমাদের ওপর অহেতুক কেউ অপবাদ চাপাবে তা বরদাশত করা হবে না। আমরা দান-খয়রাত চাই না, হাত পেতে চলতে চাই না। মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। সেতু নির্মাণ করে দেখিয়ে দেব আমরাও পারি।


’গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের কাউন্সিল উদ্বোধন করেন। দীর্ঘ নয় বছরেরও বেশি সময় পর উৎসবমুখর পরিবেশে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদসহ সারা দেশের ১০১টি সাংগঠনিক জেলা ও অঞ্চল এবং ৭৬৩টি বেসিক ইউনিয়নের সাত হাজারেরও বেশি কাউন্সিলর ও সমসংখ্যক ডেলিগেটর যোগ দেন। উদ্বোধনী সংগীতের পর পদ্মা সেতু নিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফকির আলমগীর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের লক্ষ্যই হচ্ছে সব শ্রেণীর শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। এ কারণেই বন্ধ থাকা অনেক কলকারখানা চালু ও শ্রমিকদের চাকরির বয়স ৬০ বছর, শ্রমনীতি বাস্তবায়ন ও ন্যূনতম মজুরি চার হাজার টাকা করা হয়েছে। পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন এক হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ৩৭টি কনভেনশনের মধ্যে ৩৩টি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেছেন আবারও ক্ষমতায় যেতে পারলে তিনি নাকি আওয়ামী লীগের সব কাজ বন্ধ করে দেবেন। এর অর্থ হচ্ছে, আমরা যেসব কলকারখানা চালু করেছি, বিদ্যুৎ-গ্যাস-খাদ্য ও শিল্প উৎপাদন বাড়িয়েছি এবং যেসব উন্নয়নকাজ করেছি, তার সবই তিনি বন্ধ করে দেবেন। মানুষ সামনের দিকে যায়, আর বিএনপি পেছন দিকে হাঁটে। ভূতের পা নাকি পেছনে থাকে। আমরা দেশকে এগিয়ে নিলেও বিএনপি নেত্রী পিছিয়ে দিতে চান।’
আবদুল মতিন মাস্টারের সভাপতিত্বে কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন পেশ করেন রায় রমেশ চন্দ্র। আরও বক্তব্য দেন শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, আইএলওর এদেশীয় পরিচালক আঁদ্রে বগি ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সমন্বয়কারী ওয়াজেদুল ইসলাম খান।
প্রধানমন্ত্রীর নতুন ফোন নম্বর: সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন একটি মুঠোফোন নম্বর নিয়েছেন। নতুন নম্বরটি হলো ০১৫৫৫৮৮৮৫৫৫।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (গণমাধ্যম) মাহবুবুল হক শাকিল বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে জানান, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আগে দেওয়া দুটি নম্বরও (০১৭১১৫২০০০০ ও ০১৮১৯২৬০৩৭১) চালু থাকবে।
জামদানিতে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান: বাসস জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামদানি শাড়ির দাম ব্যবহারকারীদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার এবং এর ডিজাইন, রং ও গুণগতমানে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সব ধরনের সহায়তাদানের আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ জামদানি প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজেএমইএ) একটি প্রতিনিধিদল গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করলে তিনি তাঁদের এ কথা বলেন।
সমিতির সভাপতি এম আর মোস্তাকের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন এম এ বারেক, মফিজুল ইসলাম ও গোলাম মওলা।
সমিতির নেতারা জামদানিশিল্পের উন্নয়নে বিদ্যমান আর্থিক সহায়তা ৫ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা, উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা এবং সরকারের ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠাসহ কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করেন।

No comments

Powered by Blogger.