পদ্মা সেতু-ঋণ কার্যকরের সময় বাড়াতে চিঠি by আনোয়ার হোসেন

দ্মা সেতুর ঋণের মেয়াদ তিন মাস বৃদ্ধি করার চিঠি দিয়েছে সেতু বিভাগ। ২৭ জানুয়ারি এই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপানি ঋণদান সংস্থা জাইকা ঋণ দেওয়া স্থগিত করে দিয়েছে। ১১ জানুয়ারি সেতু বিভাগ থেকে এসব উন্নয়ন-সহযোগীকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে, যেন ঋণ কার্যকরের সময়সীমা আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।


সেতু বিভাগ চিঠিটি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) পাঠিয়েছে। চিঠির একটি কপি ই-মেইলে সব উন্নয়ন-সহযোগীকেও পাঠানো হয়েছে। ইআরডি ওই চিঠি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে দাতাদের কাছে দেবে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় সেতু কর্তৃপক্ষের চিঠি ই-মেইলে পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।
সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয় গত বছরের ২৮ এপ্রিল। এরপর কয়েক দিনের ব্যবধানে এডিবি ও জাইকার সঙ্গেও চুক্তি সই হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে ঋণ কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাংক ২৭ জুলাই চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল, ঋণ কার্যকরের সময় পিছিয়ে ২০১২ সালের ২৭ জানুয়ারি করা হয়েছে। এরপর এডিবি ও জাইকাও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে একই দিন ঋণ কার্যকরের তারিখ নির্ধারণ করে।
সেতু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম গতকাল রাতে ফোনে প্রথম আলোকে চিঠি পাঠানোর কথা স্বীকার করে বলেন, ঋণ কার্যকর করার সময় বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা, এডিবি প্রায় চার হাজার ৬০০ কোটি, জাইকা তিন হাজার ১০০ কোটি এবং ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের দেওয়ার কথা এক হাজার ৫০ কোটি টাকা। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে মূল সেতু ও তদারকি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে গত অক্টোবর থেকে এ ঋণ কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাইকা। অন্যদিকে আইডিবির ঋণ ইতিমধ্যে কার্যকর হয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের এ দেশীয় পরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, ‘চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে একটি সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা বাংলাদেশের পক্ষে যাবে।’ কিন্তু সেতু বিভাগ আরও তিন মাস সময় চাওয়ায় পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা আপাতত থেকে যাচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মূল সেতু, নদীশাসনসহ পদ্মা সেতু প্রকল্পের ছয়টি দরপত্রের কার্যক্রম এখন বন্ধ। এ অবস্থায় এখন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু না হলেও চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৭ জানুয়ারির পর ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে সরকারকে। এ কারণেই চিঠি দিয়েছে সেতু বিভাগ।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রস্তাবিত পদ্মা সেতু হওয়ার কথা রয়েছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে।

No comments

Powered by Blogger.