সাহিত্যালোচনা- গ্রামকে শহরে এনেছি by আল মাহমুদ

মার যত দূর মনে পড়ে, আমাদের বাড়িতে একজন গৃহশিক্ষক ছিলেন। তিনিই প্রথম আমাকে পাঠ্যবইয়ের বাইরে বইয়ের যে একটা জগৎ আছে, সেটা জানিয়ে দেন। আমি তাঁর হাত থেকে ঠাকুরমার ঝুলি বইটা নিয়ে পড়ি। খুব ভালো লাগে। আমি বুঝলাম, পাঠ্যবইয়ের বাইরে অনেক বই আছে। এসব বইয়ের টানেই আমি পাঠ্যবইয়ের বাইরে চলে আসি। একটা সময় মনে হলো, আই অ্যাম এ পোয়েট। কবি হব আমি। ঠাকুরমার ঝুলি পড়া হয়েছে গল্প হিসেবে। আমার আনন্দের বিষয় ছিল কবিতা। কবিতা পড়তে পড়তে হঠাৎ মনে হলো, আই উইশ টু বি এ পোয়েট। আমি ইচ্ছে হলে কবি হতে পারি। এ ধারণা থেকে লিখতে শুরু করলাম।
প্রথমে লুকিয়ে-ছাপিয়ে, তারপর প্রকাশ্যে।
ছোটবেলায় স্কুলের বইয়ে অনেক কবিতা পড়েছি। পাঠ্যবই থেকেই আমার কবিতা পড়া শুরু। কত কবিতা পড়েছি তখন, এখন আর মনে থাকে না। জসীমউদ্দীনের একটি কবিতা কিছুটা মনে আছে—
রাত থম থম স্তব্ধ নিঝুম ঘনঘোর আঁধিয়ার
নিঃশ্বাস ফেলি তাও শোনা যায়, নাইকো সাড়া কার।
এই প্রথম আমি কবিতায় গল্প বলার একটি আধুনিক ঢং আবিষ্কার করি। এসব কবিতা পড়ে পড়ে বোঝার চেষ্টা করছি: কবিতা কীভাবে আধুনিক হয়, কেন হয়, কবিতার বিষয় কী হতে পারে? কবিতা নিয়ে শুরুতে একটা দ্বিধা থাকে কবির মধ্যে, কবিতা হচ্ছে তো? এই দ্বিধাটা আজও আমাকে ছেড়ে যায়নি। লিখি আমি, কিন্তু জানতে চাই, কী হলো। এই দ্বিধাটা কবিদের থাকে। বড় কবিদের মধ্যেও ছিল।
প্রথম যখন কবিতা লিখতে শুরু করি, তখন আমার আদর্শ ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম বা জসীমউদ্দীন। এঁদের মতো কবিতা লেখার চেষ্টা করতাম। আমার নিজের ভাষাটা, ভাবটা গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে।
আধা-শহর আধা-গ্রামের বাসিন্দা আমি। জন্মেছি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ধার দিয়ে একটি নদী চলে গেছে। নদীর নাম তিতাস। তিতাস নিয়ে আমি কবিতা লিখেছি। কবিতাটি ছাত্রদের পাঠ্য হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মফস্বল এলাকা, গ্রামের গন্ধও ওর মধ্যে ছিল। কিন্তু এখানে বেশ বইপত্র পাওয়া যেত, লাইব্রেরি ছিল। আমি নিয়মিত ওসব লাইব্রেরিতে যেতাম। একটা লাইব্রেরির নাম ছিল, ‘লালমোহন স্মৃতি পাঠাগার’। অনেক দুরূহ দুঃসাধ্য বই এদের সংগ্রহে ছিল। কলকাতায় হয়তো একটি ভালো বই বেরিয়েছে, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বইটি লাইব্রেরিতে এসে পড়ত। কমিউনিস্ট পার্টি এই লাইব্রেরি পরিচালনা করত। অনেক প্রগতিশীল বই পাওয়া যেত ওখানে। তারা চাইত মোটিভেশন। ছেলেমেয়েরা এখানে পড়তে এলে মোটিভেটেড হবে, এই আর কি।
এই বইপত্রের সূত্রেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের অনেক মেয়ের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল। যারা সাহিত্যের ধার ধারত, তাদের সবার সঙ্গেই পরিচয় ছিল। বইপত্র সংগ্রহ করতাম তো। বই লেনদেনের জন্য আমি একটা মাধ্যম ছিলাম। বইপত্রের সূত্রেই মেয়েদের সঙ্গে আমার প্রথম মেলামেশা। প্রথম যৌবনে মেয়েদের নিয়ে বেশ একটা ঘোর থাকে। আমারও ছিল। তবে কারও সঙ্গেই খুব ঘনিষ্ঠতা হয়নি। খুব অল্প বয়সেই বিয়ে করে ফেলি। পারিবারিক ইচ্ছাতেই বিয়ে হলো। যাকে বিয়ে করলাম, সে আমাদের পরিবারের খুবই পরিচিত।
কবিতার জন্য আমার পরিবারের কাছে আমি ঋণী। পরিবার আমার সহায় হয়েছিল। আমার পরিবার ছিল কিছুটা অন্য রকম। ছেলে কবি হবে—এতে তাঁরা বেশ খুশি হয়েছিলেন। পরিবারের সবাই উদার প্রকৃতির ছিলেন। আমার বাবা অবশ্য খুব বেশি দিন বাঁচেননি। তিনি আমার প্রতিষ্ঠা দেখে যেতে পারেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থাকতেই আমার কবিতা ছাপা হতে শুরু করে। কলকাতা থেকে তখন একটা পত্রিকা বের হতো। পত্রিকাটা সম্পাদনা করতেন সাংবাদিক সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার। তখন ভারতের শ্রেষ্ঠ সাংবাদিক হিসেবে তিনি খ্যাতি পেয়েছিলেন। তাঁর পত্রিকায় আমার কবিতা বেরোল।
ঢাকায় এলাম আরও অনেক পরে। একাডেমিক পড়াশোনার পুরোটাই শেষ করেছি মফস্বলে। আমাদের ফ্যামিলির একটা অংশ আগে থেকে ঢাকাতেই ছিল। একটা পত্রিকায় কাজ শুরু করলাম। পত্রিকার নাম এখন আর মনে পড়ছে না। পত্রিকাটা তখন দেখতেন একজন সাহিত্যিক। আমি আসার কিছুদিন পর কী এক কারণে তাঁর সঙ্গে মালিকপক্ষের ঝগড়া হলো। ঝগড়ার পর উনি পত্রিকা ছেড়ে চলে যান। আমি ওখানেই রয়ে গেলাম। মালিকপক্ষ আমাকে পত্রিকায় কপি দিতে বললেন। আমি তখন এর চার্জ পেয়ে গেলাম। যখন এডিটরের দায়িত্ব নিলাম, তখন আস্তে আস্তে আমার পরিচিতি তৈরি হলো। ঢাকার তরুণ লেখকদের সঙ্গে আলাপ হলো। এঁদের মধ্যে শামসুর রাহমান, হাসান হাফিজুর রহমান, শহীদ কাদরী—এঁরা ছিলেন। শামসুর রাহমান আর শহীদ কাদরী দুজনে প্রায় সারাক্ষণ জোড়া বেঁধে থাকেন, ভাইয়ের মতো। দুজনের সঙ্গে একত্রেই প্রথম আলাপ হলো।
আমি ঢাকায় এসেছি মফস্বল থেকে। গ্রামের ছেলে। আর ওঁরা আরবান এরিয়ার মানুষ। খুবই নাগরিক এবং আধুনিক মানুষ। ভবিষ্যতে আরও বেঁচে থাকলেও আমার মধ্যে গ্রাম্য ভাব থাকবে। আমি জসীমউদ্দীনও নই, সমর সেনও নই। এর মাঝামাঝি একজন লেখক। জসীমউদ্দীন মন দিয়ে পড়েছি, সমর সেনও ভালো করে পড়েছি।
তখন ‘পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সংসদ’ নামের একটা প্রতিষ্ঠান ছিল। তারা সওগাত পত্রিকা অফিসে সাপ্তাহিক সাহিত্যের আসর বসাত। সমালোচনা হতো, খুব কড়া সমালোচনা। ঢাকায় এসে এদের সঙ্গে ভিড়ে গেলাম। ওখানেই আমার পরিচিতি ভালোভাবে ঘটল। শহীদ কাদরী তত দিনে বন্ধু হয়ে গেছেন। আড্ডায় তরুণেরা আসত। অনেক সিনিয়র লেখকও আসতেন। আলাউদ্দিন আল আজাদ আসতেন আড্ডায়।
পশ্চিমবঙ্গের কবিদের সঙ্গে যোগাযোগটা ছিল সাহিত্যিক সূত্রে—পত্রপত্রিকার মাধ্যমে। তাঁরা তো আর এখানে আসতেন না। তাঁরা এলে আমাদের সাহিত্যে হস্তক্ষেপ করতে পারেননি। কোনো কালেই নয়। বাংলাদেশের সাহিত্য স্বাতন্ত্র্য নিয়ে জেগে উঠেছিল। আমি বাংলাদেশের মানুষ। এখানকার আবহাওয়া, জল-মাটির গন্ধ আমার শরীরে লেগে আছে। এই বিশ্বাস থেকে আমি কবিতা লিখেছি। জসীমউদ্দীন পল্লি কবিতা লিখতেন। আমি তো পল্লি কবিতা লিখতে চাইনি। শহরের কবিতা লিখতে চেয়েছি—কিন্তু আমার ভাষা, জন্ম, জীবনবৃত্তান্ত হলো গ্রামের। আমি গ্রামকে শহরে নিয়ে এসেছি। গ্রামের যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, সেই ব্যাখ্যা বদলে দিয়েছি।
আমাদের যুগটা ছিল বামপন্থার। সাহিত্যিক আড্ডা বা সংগঠনগুলো ছিল বামপন্থী। এর ভেতর ঢুকেই পরিচিতি অর্জন করতে হতো। আমাকেও সেটা করতে হয়েছিল। একসময় গণকণ্ঠ সম্পাদনা করেছি। জেল খেটেছি।
ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে এক বছর বন্দী ছিলাম। আমার স্ত্রী তখন নিয়মিত খাবারটাবার নিয়ে আমাকে দেখতে আসত। তখন কবি-সাহিত্যিকদের প্রায় সবাই আমার সঙ্গে জেলে এসে দেখা করেছেন। সে সময়টা নিয়ে আমি একটা কবিতা লিখেছি—‘জেলগেটে দেখা’। খুবই বিখ্যাত কবিতা।
একসময় হঠাৎ করেই ছাড়া পেলাম। তখন শেখ মুজিবের শাসন চলছে। তিনি খেয়ালি মানুষ ছিলেন। ইচ্ছে হয়েছে, জেলে দিলেন। আবার হঠাৎ একদিন ছেড়েও দিলেন। জেল থেকে ছাড়ানোর পর তিনি একদিন আমাকে ডেকে পাঠালেন। খুব খাতির-যত্ন করলেন। তারপর বললেন, ‘শিল্পকলা একাডেমীতে একটা চাকরি তোকে দিচ্ছি। তুই জয়েন কর।’ তাঁর এই প্রস্তাব বাসায় জানালাম। বাসার সবাই বলল, ‘আর দেরি না করে জয়েন করে ফেলো।’ আমার খুব ইচ্ছে ছিল না। যা-ই হোক। আমি শিল্পকলা একাডেমীতে জয়েন করলাম।
আমার কবিতা আর গদ্য লেখার চর্চা একসঙ্গেই শুরু হয়েছিল। যখন কবিতা লিখছি, তখন গল্পও লিখছি। আমি গদ্য লিখতে জানি। লিখব না কেন? আমার গদ্য লোকে খুব পছন্দ করত। পত্রিকায় ছাপা হলে অনেকে প্রশংসা করত। ছন্দের ওপর একটা দখল অনায়াসে এসে গিয়েছিল। ছন্দের বই পড়ে ছন্দ শেখা হয়নি। আমি ছন্দ শিখেছি কবিতা পড়ে পড়ে। ছেলেবেলায় গান শোনা হয়েছে অনেক। শাস্ত্রীয় গান শুনেছি। গান থেকেও ছন্দটা কিছুটা আত্মস্থ হয়ে থাকতে পারে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে দোতলা বাড়ির নিচে একটা চায়ের দোকান ছিল। সেই চায়ের দোকানের মালিক ছিলেন সংগীতের মানুষ। গানের মানুষ। ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংগীত সংসদ’ বলে একটা প্রতিষ্ঠান ছিল। তখন সুরকার সুবল দাস—এখন আর বেঁচে নেই—ছিলেন সংগীত সংসদের নেতা। আমি মাঝেমধ্যে যেতাম। আমি সংগীতের লোক নই, কবিতার লোক। তবু খুব স্নেহ করতেন আমাকে।
পুরান ঢাকায় আমি যেখানে ছিলাম, ঘটনাক্রমে তার পাশেই ছিল পতিতাদের বস্তি। আমাদের বাসার সঙ্গেই ঘেঁষাঘেঁষি করে ওদের থাকার জায়গা। মাঝখানে ব্যবধান শুধু একটা বেড়া। বেড়াটা ছিদ্র করে ফেলেছিল ওরা। ওই ছিদ্র দিয়ে ওরা সিগারেট চাইত বা আগুন চাইত। স্বভাবতই এদের কারও কারও সঙ্গে পরিচয় ঘটে গিয়েছিল। আমি অবশ্য যেতে চাইতাম না। যাইনি। আমার আবার একটা পারিবারিক সুখ্যাতি ছিল। যেখানে থাকতাম, তারাও আমাকে ভালোবাসত। আমার থাকার জায়গাটা ছিল একটা বোর্ডিংয়ের মতো। বুড়ির হোটেল বলত লোকে। খুব জবরদস্ত ছিল বুড়ি।
একসময় ভাষা আন্দোলনের ওপর একটা ছড়া লিখেছিলাম লিফলেটে। পুলিশ কারা এসব করছে, এটা খুঁজে বের করতে ওই ছড়াটা নিয়ে তদন্ত শুরু করল। ছড়াটা নিয়ে আমার বাসায় এসে হানা দিয়েছে। তখন আমি বাসায় ছিলাম না। বাসায় ফিরছি, তখন গেটের মুখে আমার এক দূর সম্পর্কের খালাতো বোন, ওর নাম পুতুল আমাকে বলল, ‘এখন যেয়ো না। গেলেই তোমাকে অ্যারেস্ট করবে।’ আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল মেয়েটা।
এবার মেলায় আমার কবিতার কোনো বই বেরোয়নি। কবিতা জমেনি বেশি, বই করতে পারলাম না। খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ১০-১২টা কবিতা দিয়ে তো আর বই হয় না। কমপক্ষে ৩০টি কবিতা দরকার। উপন্যাসের একটা বই বেরিয়েছে। নাম ক্রীতদাসী। দুটো উপন্যাস দিয়েছি বইতে: ক্রীতদাসী আর আগুনের মেয়ে। ক্রীতদাসী উপন্যাসের কাহিনি কোনো কোনো পাঠকের কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকতে পারে। কোনো কোনো সময় অবাস্তব, সংহতি নেই, চরিত্রের মধ্যে স্থিতিশীলতা নেই—এ রকম বিষয় নিয়েও আমি গল্প লিখেছি, লিখি।
আমাকে অনেকে প্রশ্ন করেন, কোনো বিশেষ শিল্প-আন্দোলনে আমার অনুরাগ আছে কি না, বা আমি ঠিক কোন ঘরানার মধ্যে পড়ি। কোনো বিশেষ আদর্শ আমার মধ্যে নেই। আদর্শ দিয়ে চালিত হই না। আমি চালিত হই ফিকশনের চরিত্র দিয়ে। যে চরিত্রটা আমি লিখি, যে চরিত্রটি আমি দেখেছি, সেটার দ্বারা আমি চালিত হই।
সব অবস্থাতেই কবিতা সম্ভব। আমি কবিতা লিখি। এখন একটু কম লিখছি, চোখে দেখতে পাই না। চোখের দৃষ্টি অপরিচ্ছন্ন। অন্যের সাহায্য নিতে হয়। আমি লেখক মানুষ। সময়ের সঙ্গে তাল দিয়ে আমি লিখে যাচ্ছি। লেখা তো বন্ধ হয়নি আমার।
অনেক বয়স হয়েছে। মৃত্যুচিন্তা আমার সঙ্গে সব সময় আছে। মৃত্যুতে অবসান। মৃত্যুচিন্তা থাকবে না কেন? আমি তো জীবন্ত মানুষ। যে বেঁচে আছে, সে মৃত্যু নিয়ে ভাবে। মৃত্যুচিন্তাটা এ রকম। আমি বেঁচে আছি, তাই মৃত্যু নিয়ে ভাবি। মৃত্যু হলো এন্ড। অতৃপ্তি কিছু তো আছে। আমি দীর্ঘ হায়াত পেয়েছি। লিখেছিও প্রচুর। সব লেখা এক জায়গায় করলে অনেকগুলো খণ্ড হবে। কাজ করেছি প্রচুর। এখন লিখি, চিন্তাভাবনা করি। সাম্প্রতিক লেখাপত্র পড়ি। আমি একজন সক্রিয় মানুষ। সাহিত্য করেছি সারা জীবন। চর্চার মধ্যেই তো আছি।
এখনকার তরুণদের লেখা পড়ি। অনেকেই বেশ ভালো লিখছে। একটা সময় আসবে, যখন এরা ভেঙে বেরিয়ে আসবে। এখন জোট বেঁধে আছে। কবিতা লিখছে, ভালো লিখছে। কিন্তু একসময় এই খোলস ফাটিয়ে বেরিয়ে আসবে।
এখন পুরোনো দিনের কথা বেশ মনে পড়ে। আমরা ছিলাম তিনজন। শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী আর আমি। শামসুর রাহমান চলে গেছেন। শহীদ কাদরী দেশান্তরী হয়েছেন। শুধু আমি একা পড়ে আছি এই বাংলাদেশে। এই সুযোগে একটা বিষয় পরিষ্কার করে নিই। শামসুর রাহমানের সঙ্গে আমার কখনো কোনো বিরোধ হয়নি। কিন্তু মানুষের ধারণা, আমরা একজন আরেকজনের প্রতি ঈর্ষাকাতর। এটা ভুল ধারণা। শামসুর রাহমান যখনই সুযোগ পেয়েছেন, একা একা আমার বাসায় চলে এসেছেন। আমার সঙ্গে বসে আড্ডা দিয়েছেন। এটা কেউ জানত না। শামসুর রাহমানের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক কেমন ছিল, এটা অনেকেই জানেন না।
অনেক দিন আগে ‘উড়ালকাব্য’ নাম দিয়ে কিছু কবিতা লিখেছিলাম। নিজেকে ব্যঙ্গ করে লেখা কবিতা। তখন অবশ্য এর কার্যকারণ ছিল। এখন বয়স হয়েছে, লিখতে পারি না আগের মতো। ভাবি। নিজের দু-একটা লাইন মনে আসে। প্রশ্নগুলো বড় ভালো লাগে।
‘কানা মামুদ কানা মামুদ
কোথায় পেলে ওড়ার বারুদ?’
=============================
গল্প- জলঝড়  একাত্তরের অপ্রকাশিত দিনপঞ্জি  রশীদ করীমে'র সাক্ষাৎকার- 'মনে পড়ে বন্ধুদের'  প্রাচ্যের ছহি খাবনামা  গল্প- এভাবেই ভুল হয়  গল্প- মাঠরঙ্গ  ফয়েজ আহমেদঃ স্মৃতিতে চিঠিতে  অরুন্ধতী রায়ের সাক্ষাৎকারঃ উপন্যাসের জগতের জগতের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই  ইতিহাস ও জাতি দিয়ে ঘেরা  গল্প- চাল ডাল লবণ ও তেল  ক-য়ে ক্রিকেট খ-য়ে খেলা  গল্পসল্প- ডাংগুলি  হ্যারল্ড পিন্টারের শেষ সাক্ষাৎকারঃ আশৈশব ক্রিকেটের ঘোর  সূচনার পিকাসো আর ভ্যান গঘ  আল্লাহআকবরিজ সি সি  গল্প- কবি কুদ্দুস ও কালনাগিনীর প্রেম  গল্পসল্প- আমার বইমেলা  বাংলাদেশ হতে পারে বহুত্ববাদের নির্মল উদাহরণ  শিক্ষানীতি ২০১০, পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি এবং জাতীয় স্বার্থ  চীন-ভারত সম্পর্ক এবং এ অঞ্চলে তার প্রভাব  নারী লাঞ্ছনার সর্বগ্রাস  একজন এস এ জালাল ও মুক্তিযুদ্ধের তথ্যভাণ্ডার  গল্প- স্বপ্নের মধ্যে কারাগারে  গল্পিতিহাস- কাঁথা সিলাই হইসে, নিশ্চিন্ত  ‘এখন প্রাধান্য পাচ্ছে রম্যলেখা'  অকথিত যোদ্ধা  কানকুনের জলবায়ু সম্মেলন, বাংলাদেশের মমতাজ বেগম এবং আমার কিছু কথা  নাপাম বোমা যা পারেনি, চ্যালেঞ্জার ও আব্রাম্‌স্‌ ট্যাংক কি তা পারবে?  ঠাকুর ঘরে কে রে...!  ষড়যন্ত্র নয়, ক্ষুধা ও বঞ্চনাই আন্দোলনের ইন্ধন  বাহাত্তরের সংবিধানের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বাধা কোথায়?  ড.ইউনূসের দুঃখবোধ এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা  গীতাঞ্জলি ও চার্লস এন্ড্রুজ  গল্প- তেঁতুল  একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের পুস্তক প্রকাশনা  গল্প- বট মানে গরুর ভুঁড়ি  গল্প- কিশলয়ের জন্মমৃত্যু  গল্প- মাকড়সা  দুর্নীতি প্রতিরোধে আশার আলো  জাগো যুববন্ধুরা, মুক্তির সংগ্রামে  ঢাকা নগর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন প্রয়োজন  মারিও বার্গাস য়োসার নোবেল ভাষণ- পঠন ও কাহিনীর নান্দীপাঠ  লন্ডন পুলিশ জলকামানও নিল না  রাষ্ট্রের চ্যালেঞ্জ ও যুদ্ধাপরাধী বিচারের দায়বদ্ধতা



দৈনিক প্রথম আলো এর সৌজন্যে
লেখকঃ আল মাহমুদ


এই সাহিত্যালোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.