জাহাজভাঙা শ্রমিক: স্যাঁতসেঁতে ছোট ঘরে বাস, মজুরি দিনমজুরের অর্ধেকও নয় by কৃষ্ণ চন্দ্র দাস
৬৪ বর্গফুটের একটি ছোট কক্ষ। স্যাঁতসেঁতে মেঝের এক কোনায় থালাবাসন, গ্যাস সিলিন্ডার, চুলাসহ রান্নার সরঞ্জাম রাখা। বাকি অংশে ঘুমানোর জন্য কাঁথা-বালিশ। কক্ষের ওপরের দিকে বাঁধা দড়িতে ঝুলে আছে কিছু পোশাক। কক্ষটিতে সুমন মোল্লাসহ চারজন জাহাজভাঙা শ্রমিক গাদাগাদি করে থাকেন। রাত হলেই মেঝেতে কাঁথা বিছিয়ে শুয়ে পড়েন।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বক্তারপাড়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশে এমআই শ্রমিক কলোনির চিত্র এটি। কলোনিটিতে ১০৪টি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কক্ষে তিন থেকে পাঁচজন শ্রমিক থাকেন। সব মিলিয়ে ২০ থেকে ২২টি কক্ষে থাকেন ১১০ জনের মতো শ্রমিক। বাকি কক্ষগুলো এখন ফাঁকা।
এই কলোনি থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে দেখা মেলে জামাল কলোনির। সেখানকার অবস্থা আরও খারাপ। কলোনির কক্ষগুলো একই রকম হলেও লম্বা আকৃতির ঘর মুখোমুখি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে হাঁটাচলা করতেই অসুবিধা হয়। রয়েছে খাবার ও গোসলের পানির সমস্যা।
শুধু এমআই ও জামাল কলোনি নয়, সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙা কারখানার শ্রমিকদের প্রায় সব কলোনির অবস্থাই এমন।
এই কলোনি থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে দেখা মেলে জামাল কলোনির। সেখানকার অবস্থা আরও খারাপ। কলোনির কক্ষগুলো একই রকম হলেও লম্বা আকৃতির ঘর মুখোমুখি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে হাঁটাচলা করতেই অসুবিধা হয়। রয়েছে খাবার ও গোসলের পানির সমস্যা।
শুধু এমআই ও জামাল কলোনি নয়, সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙা কারখানার শ্রমিকদের প্রায় সব কলোনির অবস্থাই এমন।
![]() |
| সারি সারি ঘরগুলোতে থাকেন জাহাজ ভাঙা শিল্পের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকেরা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। প্রথম আলো |
খুপরিতে অস্বাস্থ্যকর জীবন
উপজেলায় মোট কতটি শ্রমিক কলোনি রয়েছে, তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুমিরা, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারী ও সলিমপুর ইউনিয়নে অন্তত ৬০টি শ্রমিক কলোনি রয়েছে। এসবের মধ্যে বড় তিনটি শ্রমিক কলোনি ঘুরে দেখা গেছে, কোনোটিই বসবাসের উপযোগী নয়। এ তিনটি কলোনির অন্তত ২৫ জন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়েছে। প্রত্যেকের তথ্য অনেকটা একই রকম। কলোনিগুলোর প্রতিটি কক্ষের ভাড়া দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা হলেও নেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
এমআই কলোনির সুমন মোল্লা সীতাকুণ্ডের একটি গ্রিন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে ফিটারম্যান হিসেবে কাজ করেন। ওই কারখানার সবচেয়ে পুরোনো ফিটারম্যান তিনি। ২০ বছর ধরে জাহাজভাঙা কারখানায় কাজ করছেন। কাজ শুরু করেছিলেন শ্রমিক হিসেবে। এরপর ফিটারম্যানের সহকারীর কাজ করেন। ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেও তিনি এখনো ঘণ্টাপ্রতি ৫৫ টাকা বেতন পান। সে হিসাবে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করে পান ৪৪০ টাকা। এটাই ওই কারখানার শ্রমিকদের সর্বোচ্চ বেতন। জাহাজভাঙা কারখানায় শ্রমিকদের বেতন হয় ঘণ্টা হিসাবে। এই বেতন দেশের বড় শহরগুলোতে কর্মরত দিনমজুরদের দৈনিক আয়ের প্রায় অর্ধেক। সরকার ঘোষিত দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৮০০ টাকা।
ওই কলোনির পাশে থাকা পুকুরঘাটে বসে কথা হয় সুমন মোল্লার সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে কথা বলা শুরু করতেই আরও অন্তত ১৫ জন শ্রমিক ঘাটে আসেন। শুরুতে কারখানার মালিকের ভয়ে কর্মক্ষেত্র ও আবাসন সম্পর্কে কিছু বলতে চাইছিলেন না তাঁরা। তবে একপর্যায়ে তাঁরা কথা বলতে শুরু করেন। ৪৭ বছর বয়সী সুমন মোল্লার বাড়ি নওগাঁ জেলায়। তাঁর দুই মেয়ে, স্ত্রী ও মা-বাবা থাকেন গ্রামের বাড়িতে। তিনি অন্য তিনজন শ্রমিকের সঙ্গে কক্ষ ভাগাভাগি করে থাকেন।
সেখানে অপর শ্রমিক আবুল কালাম বলেন, তিনি কাটারম্যানের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। আট ঘণ্টায় বেতন ২৮০ টাকা। তিনি বলেন, দৈনিক ২৮০ টাকা বেতন নিয়ে ২ হাজার টাকার ঘর ভাড়া নিলে খাব কী? বাড়িতে থাকা পরিবারের চারজনের ভরণপোষণ করব কীভাবে?
উপজেলায় মোট কতটি শ্রমিক কলোনি রয়েছে, তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুমিরা, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারী ও সলিমপুর ইউনিয়নে অন্তত ৬০টি শ্রমিক কলোনি রয়েছে। এসবের মধ্যে বড় তিনটি শ্রমিক কলোনি ঘুরে দেখা গেছে, কোনোটিই বসবাসের উপযোগী নয়। এ তিনটি কলোনির অন্তত ২৫ জন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়েছে। প্রত্যেকের তথ্য অনেকটা একই রকম। কলোনিগুলোর প্রতিটি কক্ষের ভাড়া দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা হলেও নেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
এমআই কলোনির সুমন মোল্লা সীতাকুণ্ডের একটি গ্রিন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে ফিটারম্যান হিসেবে কাজ করেন। ওই কারখানার সবচেয়ে পুরোনো ফিটারম্যান তিনি। ২০ বছর ধরে জাহাজভাঙা কারখানায় কাজ করছেন। কাজ শুরু করেছিলেন শ্রমিক হিসেবে। এরপর ফিটারম্যানের সহকারীর কাজ করেন। ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেও তিনি এখনো ঘণ্টাপ্রতি ৫৫ টাকা বেতন পান। সে হিসাবে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করে পান ৪৪০ টাকা। এটাই ওই কারখানার শ্রমিকদের সর্বোচ্চ বেতন। জাহাজভাঙা কারখানায় শ্রমিকদের বেতন হয় ঘণ্টা হিসাবে। এই বেতন দেশের বড় শহরগুলোতে কর্মরত দিনমজুরদের দৈনিক আয়ের প্রায় অর্ধেক। সরকার ঘোষিত দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৮০০ টাকা।
ওই কলোনির পাশে থাকা পুকুরঘাটে বসে কথা হয় সুমন মোল্লার সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে কথা বলা শুরু করতেই আরও অন্তত ১৫ জন শ্রমিক ঘাটে আসেন। শুরুতে কারখানার মালিকের ভয়ে কর্মক্ষেত্র ও আবাসন সম্পর্কে কিছু বলতে চাইছিলেন না তাঁরা। তবে একপর্যায়ে তাঁরা কথা বলতে শুরু করেন। ৪৭ বছর বয়সী সুমন মোল্লার বাড়ি নওগাঁ জেলায়। তাঁর দুই মেয়ে, স্ত্রী ও মা-বাবা থাকেন গ্রামের বাড়িতে। তিনি অন্য তিনজন শ্রমিকের সঙ্গে কক্ষ ভাগাভাগি করে থাকেন।
সেখানে অপর শ্রমিক আবুল কালাম বলেন, তিনি কাটারম্যানের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। আট ঘণ্টায় বেতন ২৮০ টাকা। তিনি বলেন, দৈনিক ২৮০ টাকা বেতন নিয়ে ২ হাজার টাকার ঘর ভাড়া নিলে খাব কী? বাড়িতে থাকা পরিবারের চারজনের ভরণপোষণ করব কীভাবে?
![]() |
| সীতাকুণ্ডের একটি জাহাজ ভাঙা ইয়ার্ড। প্রথম আলো |
কত মজুরি পান শ্রমিকেরা
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাহাজভাঙা শিল্পে কাটার (জাহাজ ও সমতল), ফিটার, লোডিং মিলে মোট সাত ধরনের শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ফিটারশ্রমিকেরা সবচেয়ে বেশি মজুরি পান। দক্ষ একজন ফিটারশ্রমিক দৈনিক আয় করেন ৪৪০ টাকা। কাটার বা ওয়্যারশ্রমিকদের আয় দিনে ২৪০-৩৫০ টাকা।
জাহাজভাঙা শিল্পের অধিকাংশ শ্রমিকের নিয়োগপত্র, শ্রম আইন অনুযায়ী সবেতন ছুটি বা উৎসব বোনাস নেই বলে জানান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) পরিচালিত জাহাজভাঙা শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক তথ্যকেন্দ্রের সমন্বয়ক ফজলুল কবির। তিনি বলেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি, দুর্ঘটনা ও পেশাগত রোগ থাকলেও নেই চিকিৎসাসুবিধা। ২০১৮ সালে ঘোষিত নিম্নতম মজুরিও বাস্তবায়িত হয়নি। নেই ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মনিরা পারভীন বলেন, এ শিল্পের শ্রমিকেরা অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত থাকেন বলে তাঁদের দায় নেন না জাহাজভাঙা শিল্পের মালিকেরা। জাহাজে রয়েছে ক্যানসার সৃষ্টি করার মতো বিষাক্ত উপাদান অ্যাসবাস্টাস, পিসিবি ও টিবিটি। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী শ্রমিকদের ছোট্ট একটা ঘরে বেশ গাদাগাদি করে থাকতে হয়। সেই ঘরে নেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। শীত, বর্ষা—সব ঋতুতেই তাঁরা মাটিতে বিছানা করে থাকেন।
তবে গ্রিন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করছে বলে জানান কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক (সেফটি) মো. টিপু সুলতান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁদের জানামতে, খুব কমসংখ্যক কারখানায় দু-একটা পদে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করছে না বলে তাঁরা জেনেছেন। ওই সব জাহাজভাঙা কারখানাকে তাঁরা নোটিশ দিয়েছেন। মজুরি বাস্তবায়নের জন্য আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
তবে শ্রমিকেরা যে মজুরি পাচ্ছেন, তা বেশি বলে দাবি করেন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শুধু জাহাজভাঙা কারখানা বলে মনগড়া বেতনকাঠামো আমাদের ওপর চাপিয়ে দিলে ঠিক হবে না। শিল্প বিবেচনায় বেতনকাঠামো ঠিক করতে হবে। গার্মেন্টসের মতো জায়গায় ১২ হাজার টাকা বেতন। জাহাজভাঙা শিল্পে তা ১৮ হাজার কিংবা তারও বেশি।’
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাহাজভাঙা শিল্পে কাটার (জাহাজ ও সমতল), ফিটার, লোডিং মিলে মোট সাত ধরনের শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ফিটারশ্রমিকেরা সবচেয়ে বেশি মজুরি পান। দক্ষ একজন ফিটারশ্রমিক দৈনিক আয় করেন ৪৪০ টাকা। কাটার বা ওয়্যারশ্রমিকদের আয় দিনে ২৪০-৩৫০ টাকা।
জাহাজভাঙা শিল্পের অধিকাংশ শ্রমিকের নিয়োগপত্র, শ্রম আইন অনুযায়ী সবেতন ছুটি বা উৎসব বোনাস নেই বলে জানান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) পরিচালিত জাহাজভাঙা শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক তথ্যকেন্দ্রের সমন্বয়ক ফজলুল কবির। তিনি বলেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি, দুর্ঘটনা ও পেশাগত রোগ থাকলেও নেই চিকিৎসাসুবিধা। ২০১৮ সালে ঘোষিত নিম্নতম মজুরিও বাস্তবায়িত হয়নি। নেই ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মনিরা পারভীন বলেন, এ শিল্পের শ্রমিকেরা অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত থাকেন বলে তাঁদের দায় নেন না জাহাজভাঙা শিল্পের মালিকেরা। জাহাজে রয়েছে ক্যানসার সৃষ্টি করার মতো বিষাক্ত উপাদান অ্যাসবাস্টাস, পিসিবি ও টিবিটি। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী শ্রমিকদের ছোট্ট একটা ঘরে বেশ গাদাগাদি করে থাকতে হয়। সেই ঘরে নেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। শীত, বর্ষা—সব ঋতুতেই তাঁরা মাটিতে বিছানা করে থাকেন।
তবে গ্রিন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করছে বলে জানান কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক (সেফটি) মো. টিপু সুলতান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁদের জানামতে, খুব কমসংখ্যক কারখানায় দু-একটা পদে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করছে না বলে তাঁরা জেনেছেন। ওই সব জাহাজভাঙা কারখানাকে তাঁরা নোটিশ দিয়েছেন। মজুরি বাস্তবায়নের জন্য আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
তবে শ্রমিকেরা যে মজুরি পাচ্ছেন, তা বেশি বলে দাবি করেন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শুধু জাহাজভাঙা কারখানা বলে মনগড়া বেতনকাঠামো আমাদের ওপর চাপিয়ে দিলে ঠিক হবে না। শিল্প বিবেচনায় বেতনকাঠামো ঠিক করতে হবে। গার্মেন্টসের মতো জায়গায় ১২ হাজার টাকা বেতন। জাহাজভাঙা শিল্পে তা ১৮ হাজার কিংবা তারও বেশি।’
![]() |
| একটি কক্ষে রান্না ও ঘুমানোর ব্যবস্থা। সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এম আই কলোনিতে। ছবি প্রথম আলো |



No comments