গাজা এখন ‘কসাইখানা’
এবারকার অভিজ্ঞতাকে তার জীবনের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক বলে উল্লেখ করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। তিনি স্কাই নিউজকে বলেন, এটা ভয়াবহ, এটি একটি কসাইখানা। আমি এমন ধ্বংস আগে দেখিনি। ডা. পটোকারের মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরের তুলনায় এবার ধ্বংস অনেক বেশি ব্যাপক। তিনি এখন আমাল হাসপাতালে কাজ করছেন। কারণ এর আগে যে ইউরোপিয়ান হাসপাতালে তিনি ছিলেন সেটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, খান ইউনিস এখন স্তালিনগ্রাদের মতো দেখাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, মার্চ থেকে আরোপিত মানবিক অবরোধের ফলে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে গাজায়। অনেকেই ক্ষুধার্ত অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন।
সম্প্রতি অবরোধ তুলে নিলেও নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ত্রাণ যাচ্ছে। তবে তা একেবারেই সামান্য। ফলে শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। একটি শিশুর পিঠ ও বুকে পুড়ে গেছে। তাকে ভর্তি করা হয়েছে। আরেক শিশু চোখে ছররা গুলির আঘাতে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। ডা. ভিক্টোরিয়া রোজ আরেকজন বৃটিশ প্লাস্টিক সার্জন। তিনি জানালেন কীভাবে ইসরাইলি হামলার ফলে হাসপাতালের বার্ন ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় তাদের সহকর্মীরা মাঝপথে রোগী রেখে নিজেদের পরিবারকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ভিক্টোরিয়া রোজ বলেন, আমার অ্যানেসথেটিস্ট নার্স এবং গ্রেইমের অর্থোপেডিক সহযোগী অপারেশন চালু রেখেই চলে যেতে বাধ্য হন, পরিবারকে নিরাপদ স্থানে নিতে।
ডা. গ্রেইম গ্রুপ আরেক বৃটিশ সার্জন। তিনি বলেন, এরা আমাদের মতোই মানুষ, কিন্তু প্রতিদিন বাঁচার যুদ্ধে লড়ছে। এই ফিলিস্তিনি সহকর্মীরা আমাদের মতোই মানুষ। তাদেরও পরিবার আছে, স্বপ্ন আছে। অথচ প্রতিদিন খাবার, পানি, আশ্রয় খুঁজে বের করেই তারা হাসপাতালে হাজির হন। এটাই তাদের জীবন। ইসরাইল সম্প্রতি খান ইউনিস থেকে মানুষদের সরে যেতে বলেছে। চিকিৎসকরা শঙ্কা করছেন, সেনা অভিযানের সম্প্রসারণের ফলে হাসপাতালগুলোও হয়তো সরিয়ে নিতে হতে পারে। ডা. পটোকার বলেন, বিশ্বনেতারা আর কত কথা বলবেন? কিছু করুন। নিরপরাধ মানুষ হত্যা হচ্ছে, শিশুদের চোখে সান্ত্বনা নেই, খাবার নেই। এটি সভ্যতার লজ্জা। বৃটিশ চিকিৎসকদের এ বিবরণ গাজা উপত্যকার মানবিক বিপর্যয়ের গভীরতা ও ইসরাইলি আক্রমণের ভয়াবহতা স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

No comments