কলম্বোর দিন-রাত by জাকারিয়া মণ্ডল

মহাসাগরের ঢেউ ছুঁয়ে নারিকেল গাছের সারি। এপাশে রেললাইন। তার এপাশে মহাসড়ক। বেরুয়ালা থেকে রওনা হওয়া বাসটা কলম্বো অভিমুখে ছুটছে। কলম্বো ছেড়ে আসা একটা ট্রেন দ্রুতগতিতে বিপরীত দিকে চলে গেল।

রাজধানী শহরে ঢুকতে ঢুকতে দুপুর গড়িয়ে গেল। পার্লামেন্ট ভবনকে ডানে রেখে আর একটু এগিয়ে বাঁয়ে কলম্বো বন্দরের কন্টেইনার টার্মিনাল। বিপরীতে শহরের ভেতর খানিক এগিয়ে ওল্ড ডাচ্ হসপিটাল।  
টালি ছাওয়া দোচালা কাঠামোর নিচে সারিবদ্ধ ঘর। কোনোটা ফ্যাশন, কোনোটা সুভ্যেনির, কোনোটা বা খাবারের দোকান। এমন চারটি ঘরের বাহু পুরো স্থাপনাটাকে আয়তক্ষেত্রের রূপ দিয়েছে। ভেতর দিক টানা বারান্দার বেড়ে খোলা উঠোন। পাশ দিয়ে সারিবদ্ধ বাঁধানো টেবিল চেয়ার।
সিলন কারি ক্লাবে মুরগি ও মাছের কারি, পাঁপড় ভাজি, মিশ্র সবজি, বেগুনের টক ঝোল আর ঘন ডালে উদরপূর্তি নেহায়েত মন্দ হলো না। রেস্তরাঁটার অনতিদূরেই বিখ্যাত কাঁকড়া মন্ত্রণালয়। মানে ‘মিনিস্ট্রি অব ক্র্যাব’। শ্রীলঙ্কার বিখ্যাত দুই ক্রিকেটার কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে মিলে রেস্তরাঁটা জমিয়েছেন বেশ। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের সেরা ৫০ এশীয় রেস্তরাঁর তালিকায় এটা ২৯ নম্বরে ছিল। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে এখানে ভূরিভোজ সারতে এসেছিলেন কোহলি ও তার দল। কিন্তু খাবারের ছবি পোস্ট করে পড়েছিলেন ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তোপের মুখে। যদিও যতই তোপ দাগা হোক, যে দেশেরই ক্রিকেট দল শ্রীলঙ্কায় খেলতে আসুক না কেন, কাঁকড়া মন্ত্রণালয়ে খেতে আসা ঠেকানো যায় না।  
দুপুর গড়িয়েছে বলে কাঁকড়া মন্ত্রণালয়ে এখন ভিড় নেই। তবে বিকাল থেকে সরগরম হয়ে উঠবে রেস্তরাঁটা। সেইসঙ্গে ভোজ আর কেনাকাটার উৎসবে জমে উঠবে এই ওল্ড ডাচ্ হসপিটাল চত্বর। মূলত ডাচ্ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হসপিটাল ছিল এখানে। সতেরো শতকের মাঝামাঝিতে। পরবর্তীতে ইতিহাসের আরও অনেকগুলো যুগ পাড়ি দিলেও ডাচ্ হসপিটাল নামেই এখনো পরিচিত এই ভবন ও চত্বরটা।
যদিও এখন আর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। হাসপাতাল ঘিরে থাকা ডাচ্ দুর্গের চিহ্নও খুঁজে নেয়া ভার। সামনের দিকটায় রাস্তার ওপাশে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের জোড়া টাওয়ার। মাথা উঁচু করে আকাশ ছুঁতে চাইছে। কলম্বোর তিন রাতের ঠিকানা হোটেল রামাদায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে ৪টা বেজে গেল। শ্রীলঙ্কার প্রখ্যাত রত্ন ব্যবসায়ী তারিক আলীওয়াফা এসেছেন হোটেল লবিতে। বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স এসোসিয়েশন সভাপতি ও এই ট্যুরের লিডার আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বলের পূর্ব পরিচিত তিনি। তার শ্বশুর শ্রীলঙ্কান পার্লামেন্টের স্পিকার ছিলেন। গাড়িতে করে বেয়ারফুটের সামনে নামিয়ে দিলেন।
বারবারা সানসোনি নামে এক শিল্পী ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে বেয়ারফুট প্রতিষ্ঠা করেন। এখন এটি পরিচালনা করছেন তারই উত্তরসূরি ডমিনিক। বড়ই অমায়িক মানুষ। সঙ্গে করে ঘুরিয়ে দেখালেন সবকিছু। রঙ আর নকশার রাজ্য চোখ ধাঁধিয়ে দিল। কাপড়ে কাপড়ে বৈচিত্র্যের সমাহার। রকমারি কারুপণ্য। চা ও ভেষজ। বইয়ের গ্যালারি। সবখানে চারু আর কারুশিল্পের অভূতপূর্ব সমন্বয়।
মূল ভবনের একপাশে আর্ট গ্যালারি। পেছনের উঠোন জুড়ে ক্যাফে। খোলা চত্বরে বহু দেশের মানুষের আড্ডা।
এরইমধ্যে গোধূলি নেমেছে কলম্বোর আকাশে। সেই আলোয় মূল সড়কের পাশে উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছে রিফর্মড ডাচ্ চার্চের শ্বেতভবন। যানজটহীন সড়কে সাই সাই ছুটে চলেছে গাড়ি। রাস্তার ওপাশে একটা তামিল মন্দির। প্রবেশপথের ওপরে কয়েকতলা গোপুরামে দেবদেবীর মেলা। এ জাতীয় মন্দিরের প্রবেশপথের ওপরে বিভিন্ন দেবদেবী খচিত যে বহুতল কাঠামোটা থাকে, তারই তামিল নাম গোপুরাম। এই গোপুরামের মাথায় সাঁঝবাতি জ¦লে উঠলো হুট করে। এরইমধ্যে সূর্যটা ডুবে গেছে ভারত মহাসাগরের বুকে। কলম্বোর রাস্তা আলোকিত ল্যাম্প পোস্টের আলোয়। সুপারশপ ম্যাজেস্টিক সিটিতে উপচে পড়া ভিড়। রাত ৮টার আগেই বন্ধ হয়ে গেল কলম্বো শহরের দোকানপাট।
হোটেল রামাদার সুইমিং পুল ঘিরে সবুজ বাগান। ফাঁকে ফাঁকে টেবিল-চেয়ার। ডিনারের পর মাঝরাত অবধি চললো অলস আড্ডা। ঘুমিয়ে যাওয়া শহরের কাছেই কোথাও নাইট পার্টি চলছে। ড্রামের বিট আর হৈ-হুল্লোড় শোনা গেল রাতভর।
সকালে হোটেল রুমের জানালা থেকেই মহাসাগরের শান্ত জলরাশি চোখে পড়লো। প্রাতরাশের পর শুরু হলো লোটাস টাওয়ার অভিযান। সুউচ্চ সবুজ দণ্ডের মাথায় গোলাপি পদ্মটা যেন আকাশের গায়ে বসে আছে। শ্রীলঙ্কার সংস্কৃতিতে পদ্ম হলো বিশুদ্ধতা ও উন্নয়নের প্রতীক। তাই পদ্মের আদলেই এই টাওয়ার। দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ এই টাওয়ারের উচ্চতা ১১৬৮ ফুট। আছে রেস্তরাঁ, অডিটোরিয়াম, টেলিকমিউনিকেশন জাদুঘর, পরিদর্শন গ্যালারি।  
উন্নয়ন কাজ চলমান বলে এখন লোটাস টাওয়ারে প্রবেশ নিষেধ। তবে এয়ারফোর্সের তত্ত্বাবধানে পরিদর্শনের বিশেষ অনুমতি মিলেছে। অতিকায় দ্রুতগামীর লিফটে পরিদর্শন প্ল্যাটফরমে পৌঁছাতে সময় লাগলো না। তত্ত্বাবধায়কদের বিশেষ অনুমতি ও সহযোগিতায় মই বেয়ে ছাদের ফোকর গলে উপরের খোলা চত্বরেও ওঠা গেল। তারপর আরও খাড়া মই বেয়ে একেবারে শীর্ষে ওঠার সুযোগও করে দিলেন তারা।
টাওয়ারের চূড়া থেকে নিচের মানুষগুলোকে মনে হলো লিলিপুট। গোড়াতেই বেইরা লেক। সরু ক্যানাল হয়ে পশ্চিমে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। মহাসাগরের ওপরে জমে থাকা কুয়াশায় খুব বেশি দূর দৃষ্টি চলে না। এপাশে কুয়াশামাখা শহর। ছবির মতো সুন্দর। স্কুল, খেলার মাঠ। ছুটে চলা গাড়ি আর ট্রেনকে মনে হচ্ছে খেলনা। মার্চের শুরুতে কলম্বো শহরের অসাধারণ টপ ভিউ ধরা দিল চোখের সামনে।
মধ্যাহ্নভোজের পর বিটুবি সেশন শুরু হলো হোটেল রামাদায়। বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন (টোয়াব) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কান ট্যুর অপারেটরদের বিজনেস বৈঠক। তারপর সবার হাতে সুভ্যেনির তুলে দিলেন শ্রীলঙ্কার পর্যটন সচিব।
বিকালে হোটেল থেকে বেরুতেই হাজির তারিক আলী। তার ড্যাজলজিম অ্যান্ড জুয়েলারি শপটা বেয়ারফুটের কাছেই। লম্বাটে দোকানটায় বিদ্যুতের আলো ছাপিয়ে রত্নের ঝিলিক। নানা রঙের দ্যুতি। রুবি, নীলকান্তমণি। নীল একটা রত্ন দেখিয়ে জানালেন, ওটার দাম ৩৫ হাজার ডলার। বিভিন্ন দেশ থেকে রত্নপ্রেমীরা ছুটে আসেন তার দোকানে। আর তিনি রত্ন সংগ্রহ করেন রত্নপুরা থেকে। যার অবস্থান কলম্বো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বদিকে।

রত্নপুরা মানে রত্ননগরী বা রত্নের শহর। ওখানকার নদীর কাদাবালি চালনিতে নিয়ে চাললে একসময় রত্ন পাওয়া যেতো। এখন নিচু ধানের জমিতে ৩৩ ফুট থেকে ১৬০ ফুট পর্যন্ত গভীরে বেশ কিছু রত্নের খনি। এসব খনির কারণেই পৃথিবীর কোথাও রত্নদ্বীপ, কোথাওবা রত্নের ভাণ্ডার নামে শ্রীলঙ্কা পরিচিতি। এ নিয়ে আছে ঢের গল্প, কিংবদন্তি। শ্রীলঙ্কা থেকে রত্ন সংগ্রহের ইতিহাসও শত সহস্র বছরের প্রাচীন। অতি রূপবতী বিলকিসকে বিয়ে করার পর বাদশাহ সোলায়মান দু’টি জাহাজ পাঠান রত্নের দেশ শ্রীলঙ্কায়। জাহাজভর্তি রত্ন এনে নববধূকে খুশি করবেন বলে। এদেশে এখনো ভুরি ভুরি ব্লু শেফায়ার বা নীলা পাথর পাওয়া যায়। নিউ ইয়র্কের মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রিতে প্রদর্শিত ‘স্টার অব ইন্ডিয়া’ নামে অতি মূল্যবান রত্নটি আসলে এই শ্রীলঙ্কারই রত্ন। বৃটিশ রাজমুকুটে শোভিত ৪০০ ক্যারেটের নীলা পাথরটিও এই শ্রীলঙ্কার। এটাই পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে কমলা ও গোলাপি মিশ্রিত পদ্মরাগ মণি মেলে। আরও আছে রুবি। চীনা পর্যটক ফা হিয়েন এদেশে মানুষের হাতের মতো লম্বা ও বিঘত খানেক চওড়া রুবি দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। ইবনে বতুতা তার ভ্রমণ বৃত্তান্তে মুরগির ডিমের সমান রুবি দিয়ে হাতির মাথা সাজানো হতো বলে লিখে গেছেন। এখানকার রুবির প্রেমে পড়েছিলেন মার্কোপেলোর মতো পর্যটকও। আরও আছে ক্যাটস আই, টোপাজ, আরও যে কতো রত্ন!   
শ্রীলঙ্কার রত্ন ব্যবসায়ে মুসলমানদের আধিপত্য রয়েছে বলে গর্বিত তারিক আলী। ১১ শতাংশ মুসলমান জনসংখ্যার শ্রীলঙ্কায় রত্নপুরার মুসলমান জনসংখ্যা ৩৩ শতাংশের বেশি, আর রাজধানী কলম্বোতে প্রায় ৪২ শতাংশ। সন্ধ্যায় ড্যাজল থেকে বেরিয়ে কয়েক মিনিটেই ফের বেয়ারফুট। খোলা ক্যাফেতে গাছের নিচে আড্ডা জমে জয়ন্তির সঙ্গে। জয়ন্তি কুরু-উতুমপালা। শ্রীলঙ্কার প্রথম এভারেস্টজয়ী। পুরুষ-নারী বৈষম্য করে না পর্বত। হয় তাকে জয় করো, নয়ত পরাজিত থাকো। এ আপ্তবাক্যকে মূল সূত্র ধরেই শ্রীলঙ্কার প্রথম এভারেস্টজয়ী হিসেবে ইতিহাসে নিজের নাম পোক্ত করে নিয়েছেন জয়ন্তি। নারী হিসেবে তো বটেই, প্রথম শ্রীলঙ্কান হিসেবেই এই অনন্য গৌরব অর্জন করে নিয়েছেন তিনি। যে গৌরবে এ দেশের পুরুষরাও তার থেকে পিছিয়ে।
জয়ন্তির সঙ্গে কথায় কথায় সন্ধ্যা গড়ায়। কলম্বোতে আর একটা রাত গভীর হয়। তারপর সকাল। দুই আলোকচিত্রী আবির আবদুল্লাহ ও আজিম খান রনি ছুটে যান ফটোগ্রাফিক এসোসিয়েশনে। সেখানে বাংলাদেশ নিয়ে একটা ফটো প্রেজেন্টেশন দেবেন তারা। পাটের কাপড় ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন ছুটলেন তার ব্যবসার কাজে। এসোসিয়েশন সভাপতি আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল ও শাকিল বিন মুশতাকসহ তিনজনের দল ছুটলো সিলন টুডে অফিসে।
শ্রীলঙ্কার অন্যতম ডেইলি নিউজপেপার সিলন টুডের অফিসটা ছিমছাম, পরিপাটি। প্রথমে সাংবাদিক সঞ্জু, তারপর জেনারেল ম্যানেজার-এডভারটাইজিং সঞ্জিব ওটেউয়ি, সবশেষে ফিচার এডিটর খুবই আন্তরিক সবাই।
পত্রিকা অফিস থেকে বেরিয়ে পেরেরা হুসেইন পাবলিশিং হাউজ। বিখ্যাত লেখক আমেনা হুসেইন আগে থেকেই আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বলকে চিনতেন। তার অফিসে জমে উঠলো আড্ডা। স্বামী সাম পেরেরার সঙ্গে মিলে প্রকাশনা সংস্থাটাকে জমিয়ে তুলেছেন তিনি।
মনোযোগ দিয়ে সুনেলা জয়াবর্ধনের ‘লাইন অব লঙ্কা: মিথ অ্যান্ড মেমোরিজ অব অ্যান আইল্যান্ড’ গ্রন্থটির পৃষ্ঠা উল্টাতে দেখে সেটা উপহারই দিয়ে বসলেন আমেনা হোসেন। এ ছাড়া আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বলকে দিলেন মাইকেল রোহান সূরিয়া রচিত ‘মোটর সাইক্লিং এডভেঞ্চারস ইন শ্রীলঙ্কা’ গ্রন্থটি। আর নিজের অভিজ্ঞতা ঋদ্ধ ‘ইবনে বতুতা ইন শ্রীলঙ্কা’ গ্রন্থটি তিনি দিলেন শাকিল বিন মুশতাককে। যে পথ ধরে ইবনে বতুতা শ্রীলঙ্কা ঘুরে বেড়িয়েছেন, সে পথ ধরে নিজেও ঘুরেছেন আমেনা হোসেন। সেই অভিজ্ঞতাই তিনি প্রকাশ করেছেন গ্রন্থটিতে। তার কাছ থেকে বিদায় নিতে নিতে দুপুর।
ফুডকোর্টে মধ্যাহ্নভোজ সারতে নিয়ে গেলেন তারিক আলী। বাংলাদেশের ফুডকোর্টের মতোই গিজগিজে ভিড়। খাবারের পর কলম্বোর পুরনো শহর ও স্থাপনা ঘুরিয়ে দেখালেন তারিক আলী। তারপর বিদায় নিলেন। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে ডিনারের দাওয়াত। হাইকমিশনার তারেক মো. আরিফুর রহমানের সঙ্গে জমে উঠলো শ্রীলঙ্কা সফরের শেষ আড্ডা।
শ্রীলঙ্কান ট্যুরিজম থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু শেখার আছে বলে অকপটে মত প্রকাশ করলেন বাংলাদেশ হাইকমিশনার। নিজের অভিজ্ঞতার ঝাঁপি মেলে তিনি বললেন, শ্রীলঙ্কান ট্যুরিজমের অতিথিসেবা অনেক নিখুঁত। অবকাঠামো থেকে শুরু করে ভাষা, ট্যুর প্ল্যান সবকিছুতেই তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাদের উন্নতির ধারা এখনো অব্যাহত। আমরা তাদের কাছে অনেক কিছুই শিখতে পারি।
ভারত মহাসাগরের পাড়ে কলম্বোর অবস্থান শ্রীলঙ্কার পশ্চিম উপকূলে। কালানী নদীর মোহনায়। অতীতে এ শহরের নাম ছিল কালান তোতা, যার অর্থ কালানী নদীর ফেরিঘাট। আরব বণিকরা যার নাম দেয় কালাম্বু। ১৫১৭ খ্রিষ্টাব্দে পতুর্গিজরা এ শহর দখলের পর ক্রিস্টোফার কলম্বাসের নামে নাম রাখে কলম্বো। ১৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দে এ শহরের দখল নেয় ওলন্দাজরা। ১৭৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজরা হয় এ শহরের নিয়ন্ত্রক। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে বৃট্রিশ শাসন থেকে স্বাধীন হওয়া শ্রীলঙ্কার কলম্বো এখন প্রধান সমুদ্রবন্দর, বাণিজ্যিক রাজধানী।
ঐতিহাসিক এ শহরে এখন মাঝরাত। ট্যুরিস্ট বাস ছুটে চলেছে ৩৫ কিলোমিটার দূরের বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের দিকে। Í
লেখক: নির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স এসোসিয়েশন ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক আমাদের বার্তা
(সূত্র- মানবজমিন ঈদ আনন্দ ২০২৫)

No comments

Powered by Blogger.