পুনেতে বাংলাদেশি বালিকাকে বিক্রি করা হয় ৩ লাখ রুপিতে

বাংলাদেশের ১৬ বছর বয়সী একটি বালিকাকে চার নারীর কাছে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগে শনিবার ভারতের পুনের বুদ্ধওয়ার পেথ এলাকায় চার নারীকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আছে একজন বাংলাদেশিও। টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে, আটক নারীরা বেআইনিভাবে মেয়েদের আটকে রেখে দেহব্যবসায় বাধ্য করায়। আটক নারীদের মধ্যে বেআইনি ‘পতিতালয়ের’ এক মালিক আছে। অভিযোগ আছে, বাংলাদেশি ওই বালিকাকে তিন লাখ রুপিতে বিক্রি করে দেহব্যবসায় বাধ্য করা হয়েছিল। আটক চার নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে ফরাশখানা পুলিশ।

ওই ‘পতিতালয়’ থেকে বাংলাদেশের বগুড়ার অপ্রাপ্তবয়স্ক ওই বালিকা পালিয়ে যান ২রা এপ্রিল। ফরাশখানা পুলিশের তথ্যমতে, ৮ই এপ্রিল ওই বালিকা হাদাপসার পুলিশ স্টেশনে পৌঁছেন। এ পর্যন্ত পথচারীদের কাছ থেকে অর্থ ভিক্ষা করে বেঁচেছিলেন ওই মেয়েটি। পুলিশ স্টেশনে পৌঁছে তিনি তার ওপর চালানো নৃশংসতার বর্ণনা করেন। তার বক্তব্য রেকর্ড করে পুলিশ। এরপর তারা মানবপাচার, একজন কম বয়সী মেয়েকে কোনবেচা এবং যৌন ব্যবসায় বাধ্য করার অভিযোগে মামলা নিবন্ধিত করে। ফরাশখানা পুলিশের সিনিয়র ইন্সপেক্টর প্রশান্ত ভাসমি বলেছেন, হাদাপসার পুলিশ ওই বালিকাটিকে উদ্ধার করে একটি রেসক্যু সেন্টারে স্থানান্তর করে মামলা নিবন্ধিত করেছে। সেই মামলা শুক্রবার ফরাশখানা পুলিশ স্টেশনে অধিক তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাকে জোরপূর্বক যৌনব্যবসায় নিয়োজিত করার অপরাধে আমরা ‘পতিতালয়ের’ মালিককে গ্রেপ্তার করেছি।

 বাংলাদেশি একজন নারীকে খুঁজছি আমরা। আমরা নিশ্চিত হতে চাইছি যে, তিনি পুনেতেই আছেন নাকি মহারাষ্ট্রের অন্য কোথাও বা ভারতের অন্য কোথাও আছেন। তিনি আরও বলেন, ওই বালিকার পুরো বক্তব্য আমরা রেকর্ড করেছি। তিনি আমাদেরকে বলেছেন তার পিতা পরিবারকে ফেলে চলে যায়। এ অবস্থার মা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে একসঙ্গে থাকতেন ওই বালিকা। স্ট্যান্ডার্ড অষ্টম শ্রেণির পড়া শেষ করেছেন তিনি। তার মা একজন সুইপার। পুলিশের মতে, অভিযুক্ত বাংলাদেশি নারীর বাড়িও বগুড়ায়। সে বেআইনিভাবে ভারতে এসেছে। বসবাস করছিল ভোসারি-দিঘি এলাকায়। প্রায় ৫ মাস আগে সে বগুড়া যায় এবং ওই বালিকাকে পুনেতে ভাল বেতনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলুব্ধ করে। এরপর তাকে নিয়ে সে বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে এবং ট্রেনে করে পুনেতে চলে আসে। ডিসেম্বরে ওই বালিকাকে নিয়ে তুলশিবাগ এলাকায় যায় বাংলাদেশি ওই নারী। সেখানে ওই পতিতালয়ের মালিক ও অন্যদের সামনে উপস্থাপন করে অপ্রাপ্তবয়স্ক ওই মেয়েকে। পতিতালয়টির মালিক এই বালিকাকে তিন লাখ রুপির বিনিময়ে কেনে। এরপর তাকে পতিতালয়ে নিয়ে যায়। বাধ্য করে দেহব্যবসায় নিযুক্ত হতে। পুলিশ বলেছে, উদ্ধার হওয়া বালিকাকে রেসক্যু সেন্টারে স্থানান্তরের আগে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। 

mzamin
প্রতীকী ছবি



No comments

Powered by Blogger.