জাতিসংঘে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনের মাটিতে রুশ হামলার তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যে ভোটাভুটি হয়েছে সেখানে দুইবার রাশিয়াকে সমর্থন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যা মস্কো-কিয়েভ দ্বন্দ্বের পর ট্রাম্প প্রশাসনের নজীরবিহীন অবস্থানকে স্পষ্ট করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রাশিয়ার হামলার নিন্দা এবং কিয়েভের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে ইউরোপীয় দেশুগলোর উত্থাপিত প্রথম খসড়া প্রস্তাবের বিরোধীতা করে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে তারা সরাসরি মস্কোর পক্ষালম্বন করেছে। যদিও ওই প্রস্তাবটি পাস করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ।

এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাবকে সমর্থন করে, যেখানে ইউক্রেনে যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রস্তাবটিও গৃহীত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে রাশিয়া কোনো সমালোচনা করেনি। নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটি পাস হলেও শব্দ সংশোধনের দোহাই দিয়ে ওই প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র বৃটেন ও ফ্রান্স।

এমন সময় জাতিসংঘে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে প্রস্তাবগুলো উত্থাপিত হয়েছে যখন কিয়েভ ইস্যুতে ওয়াশিংটনে মিলিত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। এ সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারও ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাগ্রহণের পর ট্রাম্প রাশিয়ার বিষয়ে যে নীতি অনুসরণ করছেন তা অনেকটাই কল্পনার অতীত। বিশেষ করে ইউক্রেন ইস্যুতে ট্রাম্প নীতির সঙ্গে ইউরোপিয়ান নেতাদের দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

সোমবার ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ‘রাশিয়া-ইউক্রেন’ সংঘাতে প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করেন মার্কিন কূটনীতিকরা। দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়ে সীমিত আকারে খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনের সময় এই বিভেদ সৃষ্টি হয়। কেননা ইউরোপীয় কূটনীতিকরা তাদের প্রস্তাবে মস্কো-কিয়েভ সংঘাতের বিশদ বিবরণ পেশ করেছেন। তাদের প্রস্তাবে ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়াকেই পুরোপুরি দায়ী করা হয়েছে এবং কিয়েভের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করা হয়েছে।

ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়ানা বেতসা বলেছেন, আমাদের পুনরায় নিশ্চিত করতে হবে যে, হামলার নিন্দা করা উচিত এবং হামলাকে অশ্রদ্ধা করা উচিত। এর বিপরীতে পুরস্কৃত করা উচিত নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউরোপকে ৯৩টি দেশ সমর্থন করলেও অকল্পনীয়ভাবে এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া, ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া, সুদান, বেলারুশ এবং হাঙ্গেরিসহ মোট ১১টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে দাঁড়ায়। আর ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে ৬৫টি দেশ।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.