খোসপাঁচড়া কেন হয়? by অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার

এটি এক প্রকার ছোঁয়াচে রোগ। চর্মের ওপর প্রথম রস ও পুঁজযুক্ত বড় বড় ফুসকুড়ি প্রকাশ পায়। প্রথমে আক্রান্ত স্থান অত্যন্ত চুলকায়। কতগুলো উদ্ভেদ একসঙ্গে উৎপন্ন হলে চুলকানির জন্য ছিঁড়ে গিয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং পরে মামড়ি পড়ে। Sarcoptes Scabies  নামক পরজীব Parasite এ রোগের কারণ। এরা চামড়া দিয়ে ঢুকে, চামড়ার নিচে বাসা বাঁধে। এদেরকে চুলকানি পোকও বলা যায়। স্ত্রী পোকা চর্মের একদম উপরিভাগের মৃত কোষে গর্ত করে এবং এ গর্ত করা বাসায় Burrow অসংখ্য ডিম পাড়ে।
এভাবে এরা অসংখ্য Burrow সৃষ্টি করে ও ডিম ছড়াতে ছড়াতে এরা এক অঙ্গ থেকে অন্য অঙ্গে হানা দেয়। ২/৪ দিনের মধ্যেই ডিম ফুটে অসংখ্য বাচ্চা পোকাদের সৃষ্টি হয় এবং এক সঙ্গে সব জমা হয়ে চর্মের Hair follicles বা কেশগর্ভগুলোতে আশ্রয় নেয়। ফলে এসব স্থানে চুলকানি হয়। যখন এ পোকাগুলো গর্ত বা নালীর Burrow  মধ্যে নড়াচড়া করে তখন চুলকানি সৃষ্টি হয়। অপরিষ্কার জামা-কাপড় ও বিছানা পত্র থেকে এ রোগ বেশি ছড়ায়। যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে, সেহেতু খুব সহজেই পরিবারের অন্য সদস্যরা আক্রান্ত হয়। সাধারণত একই বিছানায় শোয়া বা ঘনিষ্ঠ সাহচার্যে থাকলে, একই কাপড় চোপড় ব্যবহার করলে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। সময়মতো চিকিৎসা না করালে চামড়ার নানা সমস্যা দেখা দেয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ও আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ 
পরিহার করা। আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্য যারা একই বিছানা, তোয়ালে ও কাপড় চোপড় ব্যবহার করে, ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে থাকে তাদের রোগের উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক তাদের চিকিৎসা করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার
লেখক: চেয়ারম্যান, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ ও  প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। তার এই লেখাটি ‘চর্ম ও যৌন রোগ চিকিৎসা’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া।

No comments

Powered by Blogger.