রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে মীর মশাররফের স্মৃতি চিহ্ন by কুদরতে খোদা সবুজ

মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়াম
বাংলা ভাষার অন্যতম গদ্যকার ও বাঙালি মুসলিম সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ মীর মশাররফ হোসেন। ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালির লাহিনীপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।  ২০০৮ তার জন্ম ভিটায় গড়ে তোলা হয় মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়াম। তবে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো।
মশাররফ হোসেনের ব্যবহৃত পালকি
বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা মীর মোশাররফের লেখাপড়ার জীবনের শুরু কুষ্টিয়ায়। এরপর ফরিদপুর ও কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে তিনি লেখাপড়া করেছেন। তার জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় কেটেছে ফরিদপুরের নবাব এস্টেটে চাকরি করে। কিছুকাল তিনি কলকাতায়ও বসবাস করেন। মীর মশাররফের তার বহুমুখী প্রতিভার মাধ্যমে উপন্যাস, নাটক, কাব্য ও প্রবন্ধ রচনা করে আধুনিক যুগে মুসলিম রচিত বাংলা সাহিত্যে সমৃদ্ধ ধারার প্রবর্তন করেন। ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। এরপর ২০০৮ সালে কুমারখালি লাহিনীপাড়া গ্রামে ৭ শতক জমির ওপর  তার বসতভিটায় গড়ে তোলা হয় মীর মশাররফের স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়াম। এখানে তার জীবদ্দশায় ব্যবহার্য প্রায় ১২২টি সামগ্রী রয়েছে। এরমধ্যে আয়না, সুরমা দানি, আতর দানি, কলের গান, তালা-চাবি, হুক্কা, ঘড়ি, গুগলি (পান পাত্র), কুয়ার পানি ওঠানোর কাটা, খাবার প্লেট, ইজি চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, পালকি, ফলের রস রাখার পেয়ালা ইত্যাদি। এসব সামগ্রীর বয়স প্রায় দেড়শ বছর।
মশাররফ হোসেনের ব্যবহৃত বেঞ্চ
স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামে সপ্তাহে ৫ দিন বিনামূল্যে ঘুরে দেখতে পারেন দর্শনার্থীরা। এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৩০০ দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন।
স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামের তত্ত্বাবধায়ক মীর মাহবুব উল আরিফ বলেন, ‘মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগারটি আসলে অডিটোরিয়াম হিসেবে তৈরি হয়েছে। এটি জাদুঘরের আদলে তৈরি হাওয়া দরকার। না হলে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে তার স্মৃতি চিহ্ন।  সামগ্রীগুলো খোলা স্থানে রাখার ফলে দিন দিন এর স্থায়িত্ব কমে যাচ্ছে।’
মশাররফ হোসেনের ব্যবহৃত চেয়ার
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে স্মৃতি পাঠাগারটি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে নিলে রক্ষণাবেক্ষণ আরও ভালো হতো। স্মৃতি পাঠাগারটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে নেওয়ার জন্য প্রায় ৭ বার আবেদন করা হয়েছে। তারা তিনবার পরিদর্শন করে গেছে। কিন্তু এখনও এটি তাদের অধীনে নেওয়া হয়নি।
মশাররফ হোসনের ব্যবহৃত আয়না

No comments

Powered by Blogger.