দল, আত্মীয় দেখতে চাই না অভিযান চলবে: -ভয়েস অব আমেরিকাকে প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতি সমাজে বৈষম্যের সৃষ্টি করছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সমাজে একজন সৎভাবে জীবনযাপন করে, আরেকজন দুর্নীতি করে বিশাল অর্থবিত্তের মালিক হয়। এতে সন্তানদের মধ্যে খারাপ প্রভাব ফেলে। তাদের যতই বোঝানো হোক, নিজের বাবা-মাকে প্রশ্ন করে- তারা পারলে তুমি কেন পারো না? প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফলে ছেলে মেয়েদের মধ্যেও লোভ-লালসার তৈরি হয়। চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে আমি আমার দলের কে কি তা দেখতে চাই না, আমার আত্মীয়-পরিবার দেখতে চাই না, কে কত বেশি উচ্চবিত্ত সেটাও আমি দেখতে চাই না। অনিয়ম যেখানে আছে  দুর্নীতি যেখানে আছে বা আমাদের দেশকে ফাঁকি দিয়ে যেকিছু করতে চাচ্ছে তার বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। জাতিসংঘের ৭৪ তম সাধারণ অধিবেশন শেষে নিউইয়র্কে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার প্রধানমন্ত্রীর ওই সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল কতখানি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সরকার সক্ষম হচ্ছে? এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবশ্য আমাদের যত প্রোগ্রাম আমরা করছি বা প্ল্যান নিচ্ছি, আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিচ্ছি, আমার মাথার ভেতরে এটাই থাকে যে, প্রত্যেকটি উন্নয়নের সুফল আমার তৃণমূলের মানুষজন পায়।
বাংলাদেশের জনগণ যেনো পায়। যেমন আপনি দেখেন আমাদের প্রবৃদ্ধি আমরা ৮.১৩ ভাগে উন্নীত করতে পেরেছি, কিন্তু মূল্যস্ফীতি আমরা ৫ দশমিক ৪ বা ৬-এর মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছি। এর অর্থ হলো প্রবৃদ্ধির উচ্চহারের সাথে সাথে যদি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে তবে সুফলটা সাধারণ মানুষ পায়, গ্রামের মানুষ পায়। ওটা তৃণমূল পর্যায়ে যায়। এবং আমরা আমাদের যত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করি সবসময় মাথায় এটাই থাকে যে, গ্রামের মানুষ, তৃণমূলের মানুষ তারা কতটুকু লাভবান হবে, তাদের ভাগ্য কতটুকু ফিরবে। কারণ আমাদের মূল লক্ষ্যটা হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। দারিদ্যমুক্ত দেশ  হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা।

আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কি আশ্বাস পেয়েছেন এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম। কারণ আমাদের জীবনেও এ ধরণের ঘটনা ঘটেছিলো। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন, গণহত্যা, নারী নির্যাতন অগ্নিসংযোগ, লুটপাট- এসব কারণে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় এককোটির মতো মানুষ আশ্রয় নেয় ভারতে। আবার ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট আমাদের পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজন যাদের ওপর আক্রমণ হয়েছিলো, আমাদের পরিবারের সদস্যরা শাহাদাতবরণ করেছিলো এবং আমিসহ যারাই বেঁচেছিলো, আমি আমার ছোটবোনসহ সবাই আশ্রয় নিয়েছিলাম ভারতে। কাজেই রিফিউজি থাকা- এর যে কষ্ট-দুঃখ সেটা আমরা জানি। সেই মানবিক কারণেই আমরা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলাম এবং সাথে সাথে তাদের চিকিৎসা, খাদ্যের ব্যবস্থা শুরুতে আমাদের নিজেদেরই করতে হয়েছে। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। তবে এটা ঠিকই বলেছেন, এই সমস্যাটা প্রায় তৃতীয়বর্ষে পদর্পন করতে যাচ্ছে। আমরা কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে একটা আলোচনা শুরু করেছিলাম। এবং একটা চুক্তিও আমাদের সই হয়েছে যে, তারা এদেরকে ফেরত নেবে। কিন্তু যতবারই সে উদ্যোগটা নেয়া হচ্ছে, তালিকা হচ্ছে, সম্পূর্ণ ব্যবস্থা হচ্ছে ঠিক যে সময়টা ফেরত যাওয়ার কথা সে সময়টা কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আর ফেরত নেয়া হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশের সাথে, রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে বা বিভিন্ন সংস্থার সাথে যে আলাপ আলোচনা হচ্ছে বা ইতিমধ্যে হয়ে গেছে, সকলেই সহানুভূতিশীল এবং সকলেই এটা বোঝে যে মিয়ানমার তাদের নাগরিক ফিরিয়ে নেবে এটাই স্বাভাবিক। এটাই সবাই আশা করে। কিন্তু মিয়ারনমারের কাছ থেকেও যতটা সাড়া পাওয়ার কথা আমরা পাই না। তবে এখানে একটা কথা আছে, সমস্যাটা হচ্ছে মিয়ানমারের নিজের সৃষ্টি করা। এটা মিয়ানমার সরকার এবং তাদের জনগণ, তাদের মাঝে সংঘাতটা। যেহেতু সমস্যাটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন ব্যাপার এবং তারা নিজেরাই সমস্যাটা সৃষ্টি করেছে সমাধানটা তাদেরকেই করতে হবে। তাদেরই করা উচিত।

বাংলাদেশ ৫০ বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে অচিরেই। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে, একটি গণতান্ত্রিক দেশ, একটি সফল গণতান্ত্রিক দেশ বাংলাদেশ। সেই অর্থে একটি বলিষ্ঠ বা শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দল গড়ে ওঠেনি। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা সম্ভব হচ্ছে না এই কারণে যে, বাংলাদেশে আসলে গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকতে পারেনি। আমরা আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশটা স্বাধীন করেছি এবং এই সংগ্রামটাও সেদিন ছিলো মিলিটারি ডিক্টেটরশিপের বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি একটি যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন। এবং গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি যাতে আরও শক্তিশালী হয়, তৃণমূল পর্যায় থেকে গণতন্ত্রটা গড়ে ওঠে তার জন্য তিনি ক্ষমতাটাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে তৃণমূলকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ব্যবস্থা তিনি নিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তাকে হত্যা করা হলো। আবার সেই মিলিটারি ডিক্টেটররা দেশ শাসন করেছে। এখানে সমস্যাটা হচ্ছে, যখন একটা মিলিটারি ডিক্টেটর ক্ষমতা দখল করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে। প্রথমে তো রাজনীতিবিদদের যথেষ্ঠ গালিগালাজ করেই আসে, দোষারোপ করেই আসে এবং নিজেরাই রাজনীতিবিদ হয়ে যায়। তখন একটা দল গঠন করে। এখন ক্ষমতায় বসে থেকে, ক্ষমতার সুযোগ-সুবিধা দিয়ে, তারপর যখন একটা দল গঠন করে এবং সেই দল দিয়ে একটা প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতাকে তারা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করে।

এই মুহুর্তে বাংলাদেশে একটি দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চলছে। কিভাবে এই সিদ্ধান্ত নিলেন? কেনোই বা বিরাট একটা শুদ্ধি অভিযান শুরু করলেন? এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, এটা তো খুবই স্বাভাবিক। কারণ এক নাম্বার, আপনি দেখেন এখানে যে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাস শুরু হয়েছে, আপনার নিশ্চয় মনে থাকার কথা যে, একই সময় বাংলাদেশের ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা হয়েছে। আমি নিজে গ্রেনেড হামলার শিকার হয়েছি, দশ ট্রাক অস্ত্র চালান, মানিলন্ডারিং, বিদেশে অর্থপাচার, এই যে অনিয়মগুলি হচ্ছিলো, আমরা কিন্তু সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিয়ে অভিযান শুরু করলাম। সন্ত্রাস দমন করলাম। এটা যে শুধু আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে করলাম তা কিন্তু নয়, আমার প্রত্যেকটা কাজে আমি জনগণকে সম্পৃক্ত করি। আমি দেশবাসীকে আহ্বান করলাম, সকল শ্রেণি পেশার মানুষ, অভিভাবক, শিক্ষক, ইমাম, আমাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, আমাদের পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সকলকে একযোগে বললাম জঙ্গিবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে। এখন আমাদের দেশকে অর্থনীতিতে উন্নতি করতে হবে। জঙ্গিবাদ দমনের সাথে সাথে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলাম। একটা পর্যায়ে এসে মাদক অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি, সেই অভিযান চলছে। সেই সাথে সাথে আমি মনে করলাম আমি যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান না চালাই তাহলে আমাদের সমাজে বিরাট বৈষম্য তৈরি হয়ে যাবে। আমি এখানে সংক্ষেপে বলতে চাই, একটা সমাজে একজন সৎভাবে জীবনযাপন করে আর আরেকজন দুর্নীতি করে বিশাল অর্থের মালিক হয়ে জীবনযাপন করে।

এই যে একটা বৈষম্য, এতে তার বাড়ির শিশু থেকে শুরু করে তরুণ দেখে যে তার বাবা-মা সৎভাবে জীবন যাপন করছে ঠিক একইভাবে তার পাশে বিশাল বিত্ত-ভৈবের মালিক হয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছে, খুব স্বাভাবিকভাবে ছেলেমেয়েদের মনে একটা প্রশ্ন জাগে। প্রশ্ন করে ওর বাবা দিতে পারে তুমি পারো না কেনো? আপনি যতই নীতির কথা বলেন, যতই তাদেরকে বোঝান, এরপরও ওইসব শিশুদের মনে প্রশ্ন থেকে যায়। সেই চিন্তা থেকেই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম কোথায় একটা কিন্তু রয়েছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে। তার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে আমি বলবো এখানে আমার দলের কে কি আমি দেখতে চাই না, আমার আত্মীয়-পরিবার আমি দেখতে চাই না, কে কত বেশি উচ্চ বিত্ত সেটাও আমি দেখতে চাই না। অনিয়ম যেখানে আছে, দুর্নীতি যেখানে আছে বা আমাদের দেশকে ফাঁকি দিয়ে যে কিছু করতে চাচ্ছে তার বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। এটা খুব রিস্কি। তা না হলে সম্পদ দেখানোর একটা প্রতিযোগিতা। এই যে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা, আমি মনে করি এটা অসুস্থ একটা মানসিকতা। সম্পূর্ণ একটা অসুস্থ মানসিকতা। এখান থেকে আমাদের সমাজটাকে রক্ষা করতে হবে। কারণ এটাতো মুষ্টিমেয় লোক করে যাচ্ছে, আমার সাধারণ মানুষ তো না। এদের প্রভাব তো চলে আসছে বিভিন্ন পর্যায়। সেখান থেকে মানুষকে রক্ষা করা বিভিন্ন প্রজন্মকে রক্ষা করা যারা একটি আদর্শ নিয়ে... এতো কষ্ট করে যে দেশটা গড়ে দিয়ে যাচ্ছি সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মানসিকতা নিয়েই চলবে।

বাংলাদেশের বিশাল মানবসম্পদ, তাদেরকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে আপনার সরকার কোন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কি? বিদেশে যদি দক্ষ জনশক্তি পাঠানো যায় তাহলে অনেক সুফল আসবে, সেক্ষেত্রে কতটুকু পদক্ষেপ রয়েছে?  এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে বিদেশ যেতো মানুষ একটা ধরণের কাজ করতো। আমরা কিন্তু বিভিন্ন ধরনের কাজে দক্ষতা অর্জন করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের যে শিক্ষানীতি সেখানেও ভোকেশনাল ট্রেনিং, কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছি। প্রত্যেকটা উপজেলায় একটা করে কারিগরি স্কুল তৈরি করে দিচ্ছি, ইনস্টিটিউট তৈরি করে দিচ্ছি, ট্রেনিং বহুমুখী করে দিচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েই থেমে থাকিনি, প্রযুক্তির উন্নয়নে আমরা বিভিন্ন উপজেলা জেলায় ৫০০ হাজারের মতো ট্রেনিং সেন্টার করে দিয়েছি। সেখানে আমরা আইসিটি পার্ক করে দিচ্ছি। আমাদের মানবসম্পদ এবং প্রযুক্তি রপ্তানী করা যেমন ডিজিটাল ডিভাইস তৈরী করা- সে সুযোগটা আমাদের তৈরী হচ্ছে। ইতিমধ্যে একটি টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি করে দিয়েছি। ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করে দিয়েছি, ফ্যাশন ডিজাইন ইউনিভার্সিটি আছে। সব যে সরকারিভাবে তা না, আমাদের বেসরকারি খাতগুলোতে উৎসাহিত করছি, সুযোগ করে দিচ্ছি, জমি দিয়ে দিচ্ছি যে আপনারাও করেন। এগ্রিকালচার আমাদের বড় একটি খাত সেখানেও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ করে দিচ্ছি।

দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কতখানি এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব থেকে বেশি স্বাধীনতা যদি ভোগ করে থাকে তবে সেটি বাংলাদেশের সাংবাদিকরা। এ কারণে যে, আপনি জানেন, আমাদের ১৬ কোটি মানুষের দেশ। স্বাক্ষরতার হার গত এক দশকে আমরা ৭৩% এ উন্নীত করতে পেরেছি। এটা ছিলো মাত্র ৪৫%।

তারপরও আমাদের সংবাদপত্রের সংখ্যাধিক্য কত বেশি। প্রায় ৭ হাজারের মতো আমাদের সংবাদপত্র আছে। এক সময় শুধুমাত্র একটাই সরকারি টেলিভিশন-বিটিভি, রেডিও একটাই- বাংলাদেশ বেতার। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমি খুলে দিলাম বেসরকারি খাতে। ৪৪ টা লাইসেন্স দেয়া আছে, এরমধ্যে ২৪টা ভালোভাবে চালু আছে। এই যে টেলিভিশনগুলি চলে, তাদের যে টকশো, তাদের যে আলোচনা, তাদের যে সংবাদ পর্যালোচনা, সেখানে কি আমরা কখনো হস্তক্ষেপ করি? করি না। কিন্তু পৃথিবীর সবদেশে, ভয়েস অব আমেরিকা বলেন, সিএনএন বলেন, বিবিসি বলেন, প্রত্যেকের একটা নীতিমালা আছে এবং সেই নীতিমালা মেনেই সকলে চলে। সাংবাদিকতার ইথিকসও থাকে। আমার মনে আছে বিবিসিতে একবার ওদের পার্লামেন্ট মেম্বার সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলো বলে সেটা প্রমাণ হওয়ার পর সকলকে পদত্যাগ করতে হয়েছিলো। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশে একটা মিথ্যা তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর যতই প্রতিবাদ দেন, মিথ্যাটা যত বড় করে ছাপা হয়, প্রতিবাদটা দেয়া হয় ছোট করে। ইথিকস টা কোথায়? তাহলে আপনি সাংবাদিকতার স্বাধীনতা আছে কি না প্রশ্নটা করবেন কিভাবে? আমিতো বলবো সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা আমাদের দেশে ভোগ করে।

No comments

Powered by Blogger.