এনআরসি বিতর্কের মধ্যে ভারত সফর করছেন শেখ হাসিনা: -ডেকান ক্রনিকলের রিপোর্ট

চারদিনের সরকারি সফরে নয়া দিল্লি যাত্রা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্মেলনে ভাষণ দেবেন। তারপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় মিলিত হবেন। কিন্তু দৈবক্রমে, আসামের নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের মধ্যে তিনি এই সফর করছেন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে সম্পন্ন হওয়া এনআরসির ফলে অবৈধ কোনো অভিবাসীকে ফেরত নেবে না- এ কথা অব্যাহতভাবে বলে আসছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আরও বলে আসছে যে, ভারতীয় কথিত কোনো অবৈধ অভিবাসীই বাংলাদেশী নন। তবে এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার আলোচনায় উঠে আসবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। যদি ইস্যুটি ওই আলোচনায় উঠে আসে তবে বাংলাদেশ আরও একবার তার অবস্থানে অটুট থাকবে বলেই মনে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা লিখেছে ভারতের অনলাইন ডেকান ক্রনিকল।
এতে বলা হয়েছে, দৃশ্যপট যদি এমনই হয় তাহলে আসামের এনআরসি থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখ ৬৫৭ জন মানুষকে নিয়ে কি করা হবে সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে হবে ভারতকে, যদিও নয়া দিল্লি অব্যাহতভাবে জোর দিয়ে বলে আসছে, এসব মানুষকে সব আইনগত প্রতিকার দেয়ার পথ উন্মুক্ত রয়েছে। এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতে স্বচ্ছ আইনগত প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে এনআরসি এবং এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
পুনরুল্লেখ করা যেতে পারে যে, গত মাসে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এনআরসি থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে তারা ‘রাষ্ট্রহীন’ নন। আইনের অধীনে তারা যে প্রতিকার পাবেন তার সুযোগ শেষ হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তারা নাগরিকদের সব অধিকার অব্যাহতভাবে ভোগ করতে পারবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, আসামের কোনো ব্যক্তিবিশেষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য নয় এনআরসি করা হয়নি।
১৯৭১ সালের ২৪ শে মার্চ পর্যন্ত এবং এর আগে থেকে যেসব মানুষ আসামে বসবাস করছেন তাদেরকে ভারতের নাগরিকত্ব নির্ধারণ করতে এনআরসি করা হয়েছে। এতে আবেদন করেছিলেন কমপক্ষে ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। তার মধ্য থেকে ১৯ লাখ ৬৫৭ জনকে বাদ রাখা হয়েছে। ওদিকে মঙ্গলবার রাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদির আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩ থেকে ৬ই অক্টোবর ভারতে সরকারি সফরে আসছেন। বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ভারতে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এটা প্রথম ভারত সফর। এই সফরে প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন শেখ হাসিনা। ৫ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসবেন। এই সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু চুক্তিতে স্বাক্ষর করা কথা রয়েছে। তা ছাড়া তারা ভিডিও লিঙ্ক মারফতে তিনটি দ্বিপক্ষীয় প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।

No comments

Powered by Blogger.