আরকিউ-৪এ ভূপাতিত : মার্কিন সম্মান ভূলণ্ঠিত

আরকিউ-৪এ গ্লোবাল হক
মার্কিন চালকহীন বিমান আরকিউ-৪এ গ্লোবাল হক ভূপাতিত হওয়ার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় মাপের ক্ষতি হয়ে গেছে। ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি মার্কিন চালকহীন বিমান ভূপাতিত করায় এ মন্তব্য করেছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা ।
গত প্রায় দেড় যুগ ধরে আকাশ থেকে গোয়েন্দা তৎপরতা চালালেও এই প্রথমবার এটিকে ভূপাতিত করা হলো। মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস এ প্রসঙ্গে লিখেছে, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে আরকিউ-৪এ ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় হকচকিত হয়েছেন পেন্টাগনের কর্মকর্তারা। গোয়েন্দা তৎপরতার জন্য তৈরি এ চালকহীন বিমানকে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রকে ফাঁকি দেয়ার উপযোগী করেই তৈরি করা হয়েছিল।
একজন মার্কিন সামরিক ড্রোন বিশেষজ্ঞ ইরানের হাতে তার দেশের অত্যাধুনিক গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত হওরার ঘটনাকে ‘বেদনাদায়ক’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, আমরা ভাবতাম ‘গ্লোবাল হক’ ড্রোনকে শনাক্ত করে কেউ তা গুলি করে ভূপাতিত করতে পারবে না; কিন্তু আমাদের সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। মিসেস উলরিক ফ্রান্ক বৃহস্পতিবার এ কথা জানান। ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্মান ধুলায় মিশে গেছে।
পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক ইউরোপীয় পরিষদের ড্রোন বিশেষজ্ঞ উলরিকা ফ্রাংক বলেছেন, এটি একবার ব্যবহার উপযোগী কম দামের চালকহীন বিমান নয় যে এর ভূপাতিত হওয়ার ক্ষতি সহজে ভুলতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি এ চালকহীন বিমানকে ‘উড়ন্ত ডাটা’ সংগ্রহকারী হিসেবে অভিহিত করেন।
ভূপাতিত হওয়ার ক্ষতি কেন যুক্তরাষ্ট্র ভুলতে পারবে না সে কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি। কেবল দামি বলেই এটি হারানোর ক্ষতি ভুলতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র তা নয় বরং এটি অনেক উঁচু দিয়ে ওড়াউড়ি করে। এতে অনেক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বাইরে থেকে যায় আরকিউ-৪এ। কিন্তু ইরানি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শ্যেন চক্ষু ফাঁকি দিতে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে এটি সে দিকে ইঙ্গিত করেই এ কারণ তুলে ধরেন তিনি।
এরই মধ্যে এ ড্রোন ইরাক, আফগানিস্তান, উত্তর আফ্রিকা এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আকাশে আড়াই লাখ ঘণ্টার বেশি উড়েছে। আরকিউ -৪এর নির্মাতা সংস্থা নর্থথ্রোপ গুরুমম্যানের বরাত দিয়ে এ তথ্য দিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
প্রতিটি আরকিউ-৪এর দাম প্রায় ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অর্থাৎ লকহিড মার্টিনের তৈরি করা অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-৩৫এ লাইটেনিং ২এর চেয়েও এর দাম পড়ছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার বেশি।
৪৭ ফুট লম্ব জেট-পরিচালিত আরকি-৪এর ডানার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩০ ফুট। বোয়িং বিমানের চেয়ে বড় ডানাওয়ালা এ ড্রোন ৬৫ হাজার ফুট ওপর দিয়ে টানা ৩০ ঘণ্টার বেশি উড়তে পারে। গোয়েন্দা তথ্য হাতিয়ে নেয়ার জন্য এতে বসানো থাকে অত্যাধুনিক এবং স্পর্শকাতর নানা যন্ত্র।
সূত্র : পার্স টুডে

No comments

Powered by Blogger.